বাংলা ব্যাকরণ

বাংলা বানানের বিভিন্ন নিয়ম (পর্ব ১)

Rate this post
বাংলা বানানের বিভিন্ন নিয়ম (পর্ব ১)

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকের লিখাটি তোমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আজকে বাংলা বানানের বিভিন্ন নিয়ম, বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম এবং ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধানের বিভিন্ন নিয়ম ও প্রয়ােগবিধি সম্পর্কে জানতে পারবে। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত যে-কোনাে বানান শুদ্ধভাবে লিখতে ও প্রয়ােগ করতে পারবে। এবং বানান ভিন্নতার স্বরূপ ব্যাখ্যা করতে পারবে।

বাংলা বানান সমস্যা ও বানান সংস্কার

বাংলা ভাষায় কয়েকটি স্বরধ্বনির একাধিক কারচিহ্ন এবং কয়েকটি অতিরিক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি থাকায় এবং বাংলা ভাষার লৈখিক রীতি ধ্বনি বা উচ্চারণভিত্তিক না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এ ভাষার বানান রীতিতে বিশৃঙ্খলা বিদ্যমান। যেমন- বাংলা ভাষায় ‘ই’ (i) এবং ‘উ’ (U) ধ্বনি একটি হলেও এদের কার চিহ্ন দুটি করে। একটি হ্রস্ব-ই (ি) কার ও হ্রস্ব-উ (ু) কার এবং অপরটি দীর্ঘ-ঈ(ী) কার ও দীর্ঘ-উ (ূ) কার। ঋ-ধ্বনি না হলেও এটি কার চিহ্ন হিসেবে বিদ্যমান। 

এছাড়াও আছে অনেকগুলাে অতিরিক্ত ব্যঞ্জন ও যুক্তব্যঞ্জন। বাংলা ভাষা দীর্ঘদিন সংস্কৃত ব্যাকরণের অনুশাসনাধীন হওয়ায় তার অনিবার্য প্রভাব পড়ে এ ভাষায়। তুর্কি বিজয়ের (১২০৪ খ্রি.) পর বাংলা ভাষায় প্রচুর আরবি-ফারসি শব্দের আগমন ঘটে। আঠারাে উনিশ শতকে ঔপনিবেশিক শাসনের সূত্র ধরে এ ভাষায় প্রচুর বিদেশি শব্দের আত্মীকরণ ঘটে। একদিকে তৎসম ও তৎসমজাত এবং অন্যদিকে প্রচুর বিদেশি শব্দের সংমিশ্রণে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ হলেও এর ফলস্বরূপ এ ভাষার লৈখিক রূপের বানানে বিশৃঙ্খলা প্রকট আকার ধারণ করে। যে যার মতাে করে একই শব্দের একাধিক বানান লিখতে থাকেন। যেমন- ‘দিঘি’ শব্দের বানান রূপই চারটি-দিঘী, দিঘি, দীঘি, দীঘী। এ রকম হাজারাে শব্দের একাধিক বানান রূপ রয়েছে বাংলা ভাষায়। এখন প্রত্যেকেই যদি ‘দিঘি’ শব্দের একাধিক রূপে যে যার মতাে করে বানান লিখতে থাকেন তাহলে, ভবিষ্যতে বাংলা ভাষার লৈখিক রূপে বিশৃঙ্খলা আরাে বৃদ্ধি পাবে। তাই একটি বিজ্ঞাননির্ভর ভাষিক শৃঙ্খলার জন্যে ভাষাবিজ্ঞানীরা বাংলা ভাষার বানান সংস্কারের প্রয়ােজনীয়তা অনুভব করেন। 

উনিশ শতকে এ কাজটি শুরু করেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। পরবর্তীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, মুহম্মদ এনামুল হক, মুনীর চৌধুরী প্রমুখ ভাষাবিজ্ঞানী এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক বাের্ড, বাংলা একাডেমি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময় বাংলা বানান সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বাংলা বানানে সাধারণত হ্রস্ব-ই, দীর্ঘ-ঈ, হ্রস্ব-উ, দীর্ঘ-উ, মূর্ধন্য-ণ, দন্ত্য-ন, উয়ো-ঙ, অনুস্বার-ং, ব-য়ে বিন্দু-র, ড-য়ে বিন্দু-ড়, ঢ-য়ে বিন্দু-ঢ়, তালব্য-শ, মূর্ধন্য-ষ, দন্ত্য-স, বিসর্গ-ঃ, রেফ, যুক্তবর্ণ-ইত্যাদি ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে থাকে। এগুলাে কোথায়, কীভাবে প্রযুক্ত হয় সে সম্পকির্ত কিছু নিয়মকানুন জানা থাকলে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হওয়ায় এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সকল স্তরে বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানান নির্দেশিকা অনুসৃত হওয়ায় সেই আলােকে নীচে বাংলা বানানের নিয়মগুলাে প্রদত্ত হলাে :
(১) হ্রস্ব – ই ( ি) কারের নিয়ম
(২) দীর্ঘ – ঈ (ী) কারের নিয়ম
(৩) হ্রস্ব-উ (ু) কারের নিয়ম
(৪) দীর্ঘ-উ (ূ) কারের নিয়ম
(৫) উয়ো-(ঙ), অনুস্বার(-ং) এর নিয়ম
(৬) বিসর্গ-ঃ এর ব্যবহার
(৭) চন্দ্রদিন্দু  ঁ এর ব্যবহার
(৮) বর্গীয় – জ ও অন্তঃস্থ – য এর ব্যবহার
(৯) র, ড়, ঢ় এর ব্যবহার
(১০) মূর্ধণ্য – ণ ও দন্ত্য-ন এর ব্যবহার
 


 এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন। 


Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button