প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকের লিখাটি তোমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আজকে বাংলা বানানের বিভিন্ন নিয়ম, বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম এবং ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধানের বিভিন্ন নিয়ম ও প্রয়ােগবিধি সম্পর্কে জানতে পারবে। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত যে-কোনাে বানান শুদ্ধভাবে লিখতে ও প্রয়ােগ করতে পারবে। এবং বানান ভিন্নতার স্বরূপ ব্যাখ্যা করতে পারবে।
বাংলা ভাষায় কয়েকটি স্বরধ্বনির একাধিক কারচিহ্ন এবং কয়েকটি অতিরিক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি থাকায় এবং বাংলা ভাষার লৈখিক রীতি ধ্বনি বা উচ্চারণভিত্তিক না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এ ভাষার বানান রীতিতে বিশৃঙ্খলা বিদ্যমান। যেমন- বাংলা ভাষায় ‘ই’ (i) এবং ‘উ’ (U) ধ্বনি একটি হলেও এদের কার চিহ্ন দুটি করে। একটি হ্রস্ব-ই (ি) কার ও হ্রস্ব-উ (ু) কার এবং অপরটি দীর্ঘ-ঈ(ী) কার ও দীর্ঘ-উ (ূ) কার। ঋ-ধ্বনি না হলেও এটি কার চিহ্ন হিসেবে বিদ্যমান।
এছাড়াও আছে অনেকগুলাে অতিরিক্ত ব্যঞ্জন ও যুক্তব্যঞ্জন। বাংলা ভাষা দীর্ঘদিন সংস্কৃত ব্যাকরণের অনুশাসনাধীন হওয়ায় তার অনিবার্য প্রভাব পড়ে এ ভাষায়। তুর্কি বিজয়ের (১২০৪ খ্রি.) পর বাংলা ভাষায় প্রচুর আরবি-ফারসি শব্দের আগমন ঘটে। আঠারাে উনিশ শতকে ঔপনিবেশিক শাসনের সূত্র ধরে এ ভাষায় প্রচুর বিদেশি শব্দের আত্মীকরণ ঘটে। একদিকে তৎসম ও তৎসমজাত এবং অন্যদিকে প্রচুর বিদেশি শব্দের সংমিশ্রণে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ হলেও এর ফলস্বরূপ এ ভাষার লৈখিক রূপের বানানে বিশৃঙ্খলা প্রকট আকার ধারণ করে। যে যার মতাে করে একই শব্দের একাধিক বানান লিখতে থাকেন। যেমন- ‘দিঘি’ শব্দের বানান রূপই চারটি-দিঘী, দিঘি, দীঘি, দীঘী। এ রকম হাজারাে শব্দের একাধিক বানান রূপ রয়েছে বাংলা ভাষায়। এখন প্রত্যেকেই যদি ‘দিঘি’ শব্দের একাধিক রূপে যে যার মতাে করে বানান লিখতে থাকেন তাহলে, ভবিষ্যতে বাংলা ভাষার লৈখিক রূপে বিশৃঙ্খলা আরাে বৃদ্ধি পাবে। তাই একটি বিজ্ঞাননির্ভর ভাষিক শৃঙ্খলার জন্যে ভাষাবিজ্ঞানীরা বাংলা ভাষার বানান সংস্কারের প্রয়ােজনীয়তা অনুভব করেন।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
পরবর্তী