ভাবসম্প্রসারণঃ সেই ধন্য নরকুলে লােকে যারে নাহি ভুলে | মনের মন্দিরে নিত্য সেবে সর্বজন
বাংলা ২য়
মূলভাব
নাম নয় বরং কর্মই মানুষকে মহিমান্বিত করে তােলে। কর্মের কারণেই একজন মানুষ মরেও অমর হয়ে থাকে মানুষের হৃদয়ে।
সম্প্রসারিত ভাব
প্রত্যেক পিতা-মাতাই চায় তাদের সন্তান খ্যাতিমান-গৌরবান্বিত মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করুক। এজন্য জন্মের পরপরই তারা সন্তানকে একটি বিখ্যাত নামে নামকরণ করে থাকেন। কিন্তু তাঁরা জানেন না কিংবা জানতেও চান না নাম মানুষকে বড়াে করে না, মানুষই নামকে বড়াে করে তোলে । নাম মানুষের পরিচিতির সহায়ক। খুব সুন্দর একটি নাম রাখলেই একজন মানুষ বিখ্যাত হয়ে যায় না। বিখ্যাত হতে হলে জীবনকে কর্মময় করে তুলতে হয়। মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী। এ ক্ষণস্থায়ী জীবনে প্রত্যেক মানুষকে অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। কেউ কেউ তার সঠিক দায়িত্ব পালন করে, আবার কেউ কেউ তা করে না। মৃত্যুর পর মানুষ তাকেই স্মরণ করে, যে তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে গেছে। কিন্তু যে ব্যক্তি যথাযথ দায়িত্ব পালন না করেই মৃত্যুবরণ করে, তাকে কেউ মনে রাখে না, তার নামটি যতই শ্রুতিমধুর হােক না কেন ।
নামের মধ্যে এমন কোনাে মাহাত্ম নিহিত নেই, যা দ্বারা মানুষ অমরত্ব লাভ করতে পারে। মানুষ অমরত্ব লাভ করে তার কর্মের মাধ্যমে। পৃথিবীর জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিরা তাদের গৌরবময় কর্মের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। একটি শিশুর নাম নজরুল ইসলাম রাখলেই যে সে কবি হয়ে যাবে, তার কোনাে নিশ্চয়তা নেই। সে কবি না হয়ে মাস্তান, সন্ত্রাসী কিংবা গডফাদারও হতে পারে; কিংবা সাধনা দ্বারা বড়াে একজন বিজ্ঞানীও হতে পারে। এ প্রসঙ্গে মহাকবি শেকসপীয়রের একটি মহান উক্তি প্রণিধানযােগ্য। নামের মাহাত্ম বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, “গােলাপকে যে নামেই অভিহিত করা হােক না কেন, তা ঠিক একইরূপ সুগন্ধি ও গুণ বিতরণ করবে।”
মন্তব্য
শুধু নামের জন্য মানুষ সুখ্যাতি লাভ করে না, বরং মহৎ কাজের জন্য বিখ্যাত হয়ে ওঠে। তাই নাম নয় মহৎ কাজকে প্রাধান্য দিতে হবে।