বিত্ত হতে চিত্ত বড়
ভাবসম্প্রসারণ বিত্ত হতে চিত্ত বড় অথবা, ধনের মানুষ অপেক্ষা মনের মানুষ বড় অথবা, ধনের মানুষ মানুষ নয়, মনের মানুষই মানুষ । SSC HSC JSC ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ শ্রেণী।
মূলভাব
ধন থাকলে ধনী হওয়া যায় বটে, তবে বড় হওয়া যায় না। বড় হতে হলে বা প্রকৃত মানুষ হতে হলে একটা ভালাে মন থাকা দরকার।
সম্প্রসারিত ভাব
ধন মানে সাধারণ সম্পদ বা সম্পত্তি। জীবনে চলার পথে সহায়-সম্পত্তির আবশ্যকতাকে অস্বীকার করা যায়। সমাজের এক শ্রেণির মানুষ মানুষ হিসাবে তার দায়িত্ব-কর্তব্য ভুলে ধন আহরণে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। এজন্য নীতিনৈতিকতা বিসর্জন দিতেও দ্বিধাবােধ করে না। এসব নীতি-নৈতিকতাহীন মানুষ ধনী হলেও মনের মানুষ হতে পারে না। এদের দ্বারা আর্ত-পীড়িতরা কোনাে প্রকার সাহায্য-সহযােগিতা পায় না। এজন্য বলা হয়ে থাকে, ধন থাকলেই সত্যিকারের ধনী হওয়া যায় না। ঐ ব্যক্তিকেই ধনী বলা হয়, যার হৃদয় প্রশস্ত।
আমাদের সমাজে অনেক ধনবান ব্যক্তি আছে, যারা তাদের ধনসম্পদ কুক্ষিগত করে রাখে। পরের জন্য তাে দূরের কথা, নিজের জন্যও ব্যয় করে না। বরং ধনসম্পদকে অসৎ কাজে ব্যয় করে। পক্ষান্তরে, সমাজে এমন অনেক লােক রয়েছে, যারা তাদের সামান্য হলেও পুরাে সম্পদ সৎ কাজে ব্যয় করে। যেমন- বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দেওয়া, অন্নহীনকে অন্ন দেওয়া, শিক্ষার আলাে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি। এজন্যই বলা হয়, যে ব্যক্তি হৃদয়ের অধিকারী তথা মহৎ, সে-ই প্রকৃত ধনী।
অর্থবিত্ত কখনাে ধনীর মাপকাঠি হতে পারে না। দেশের আনাচে-কানাচে অনেক ধনী লােক আছে। কিন্তু আমরা তাদের কজনকে চিনি। কিন্তু যারা প্রকৃত ধনী, তাদের নিশ্চয়ই চিনি। যেমন- হাতেম তায়ি (Hatim al-Tai), হাজী মুহাম্মদ মহসিন , রণদাপ্রসাদ সাহা (Ranadaprasad Saha) প্রমুখ যারা আর্তমানবতার সেবায় নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন। প্রকৃত ধনী মূলত তাদেরকেই বুঝায়। তাদের মৃত্যু হয়েছে বটে, কিন্তু তাঁরা তাঁদের মহৎ কর্মের দ্বারা অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন। আসলে তারাই হচ্ছেন মনের মানুষ। যাদের ধন পিঁপড়ায় খায়, অর্থাৎ পথে নিঃশেষ হয়, তাঁদের কেউ স্মরণ রাখে না। তারা ধনের মানুষ হলেও মনের মানুষ নয়।
মন্তব্য
ধনসম্পদ, বিত্ত-বৈভব নয়, বড়ােলােকের বা প্রকৃত মানুষের মাপকাঠি হচ্ছে মহৎ হৃদয়।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
Nice