আলস্য এক ভয়ানক ব্যাধি
ভাবসম্প্রসারণ আলস্য এক ভয়ানক ব্যাধি ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ শ্রেণী SSC HSC JSC
মূলভাব
মানবজীবনের একটি বাজে স্বভাব হলাে আলস্য। দেহের বিভিন্ন রােগ ব্যাধি যেমন মানুষকে পঙ্গু করে দেয় তেমনই আলস্যও মানুষকে শ্রমবিমুখ করে ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়।
সম্প্রসারিত ভাব
আলস্য মানে হলাে শ্রমবিমুখতা বা কাজ করার অনীহা। আলস্য কাজ করার উদ্যমকে স্তিমিত করে মানুষকে অকর্মণ্য করে রাখে। এটি ভয়ানক ব্যাধির মতােই সংক্রামক ও ধ্বংসকারী। অলস ব্যক্তি জীবনে প্রতিষ্ঠা পায় না। বাবা-মা, ভাইবােন, স্ত্রী-পরিজন কেউই তাকে ভালােবাসে না। সবাই তাকে অবজ্ঞার চোখে দেখে। আসলে পৃথিবীতে পরিশ্রমের কোনাে বিকল্প নেই। যে ব্যক্তি পরিশ্রম করে এবং পয়সা উপার্জন করে সবাই তাকে ভালােবাসে। যে পরিশ্রম করে তার স্বাস্থ্যও ভালাে থাকে। পক্ষান্তরে, যে কাজ করে না অর্থাৎ যে অলস তার স্বাস্থ্যও দিনদিন খারাপ হয়ে যায়।
যে ব্যক্তি কাজ করে সে কাজ করার পর যে অবসরটুকু পায় তার মধ্যে যে আনন্দ সে অনুভব করে অলস ব্যক্তি কখনাে সে আনন্দ অনুভব করতে পারে না। আসলে অলসতা মানুষের দেহ ও মনে জড়তা আনে। ব্যাধিগ্রস্ত মানুষ যেমন অপরের সাহায্য ছাড়া চলতে পারে না, তেমনই অলস ব্যক্তিকেও পরগাছার মতাে অপরের দয়ার ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকতে হয়। দেশ ও জাতির কোনাে মঙ্গল সাধন তাে তারা করতেই পারে না বরং দেশ ও জাতির বােঝা হয়ে অবহেলিত জীবনযাপন করে। কথায় আছে, অলস মস্তিষ্ক শয়তানের আস্তানা অলস ও অকর্মণ্য ব্যক্তিরাই সমাজে সকল অনাচার ও কুকর্মের উদ্ভাবক। ব্যাধিগ্রস্ত মানুষ যেমন সমাজে রােগবিস্তারে সহায়তা করে, তেমনই অলস ও অকর্মণ্য ব্যক্তিমাত্রই নানা কুচিন্তা ও কুকর্ম দ্বারা সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ও অশান্তি ডেকে আনে। তবে কাজের ফাঁকে বিশ্রাম অবশ্যই জরুরি। বিশ্রাম আর আলস্য এক কথা নয়। বিশ্রাম কাজেরই একটা অংশ।
কর্মোদ্যম ঠিক রাখার জন্য বিশ্রাম অবশ্যই জরুরি। তবে বিশ্রামের যদি নির্দিষ্ট সময় না থাকে তা যদি হয় কাজ চলাকালীন, তবে তা অবশ্যই আলস্যের নামান্তর। আর এ আলস্য অন্য সব কঠিন রােগের মতােই ভয়ানক ও মারাত্মক।
মন্তব্য
আমাদের উচিত সবসময় আলস্য পরিহার করে কঠোর শ্রমের মাধ্যমে নিজেদেরকে দেশের যােগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তােলা।