শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে দুই শিফটে পরীক্ষার আয়োজন করা হবে । সকাল ও বিকালে পরীক্ষা হবে। প্রতি সিটে একজন করে জেড (z) আকারে আসন বিন্যাস করা হবে।
|
ছবিঃ ইন্টারনেট |
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির কারণে দফায় দফায় স্কুল-কলেজ সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল । ফলে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বরাবরের মতোই বলে আসছে যে এবারে কোন অটোপাস হবে না। তাই চলতি বছরে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং পরীক্ষা সকল প্রস্তুতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। নভেম্বরে নেয়া হবে এসএসসি এবং ডিসেম্বরে হবে এসএসসি পরীক্ষা। যেহেতু করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তাই এবারের পরীক্ষাগুলো ব্যতিক্রমধর্মী হবে বলে জানানো হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে দুই শিফটে পরীক্ষার আয়োজন করা হবে । সকাল ও বিকালে পরীক্ষা হবে। প্রতি সিটে একজন করে জেড (z) আকারে আসন বিন্যাস করা হবে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি এবং এইচএসসির প্রশ্নপত্র ছাপার কাজ শুরু হতে যাচ্ছে।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছিলেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাস আকারে পরীক্ষা দুটি আয়োজন করা হবে। এবার এসএসসি ও এইচএসসি উভয় ক্ষেত্রেই গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে ছয়টি সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বাছাইয়ের সুযোগ বাড়ানো হবে। আগে ১০টি প্রশ্নের মধ্যে ৭-৮টির উত্তর দিতে হলেও এবার সেখানে চারটির উত্তর দিতে বলা হবে।
তবে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষক এবং পরীক্ষার্থীদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কেন্দ্রে সবাইকে মাস্ক পড়ে ঢুকতে হবে এবং কেন্দ্রে প্রবেশের ফটকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হবে। সেইসাথে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রতি বেঞ্চে একজন করে ইংরেজি বর্ণ জেড আকারে পরীক্ষার্থীদেরকে বসানো হবে।
করোনার মধ্যে পরীক্ষা হচ্ছে তাই পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি হবে কিনা তা জানতে চাইলে বলা হয়, যেহেতু সংক্ষিপ্ত আকারে তিন বিষয়ের পরীক্ষা হবে এবং বিভাগভিত্তিক ভাবে সকাল ও বিকালে দুই শিফটে পরীক্ষা নেওয়া হবে, সেহেতু এসএসসি পরীক্ষার জন্য কেন্দ্র বাড়ানো প্রয়োজন হবে না। তবে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হবে কিনা তা এসএসসির ফরম পূরণ শেষ হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে আবশ্যিক বিষয় থাকলে যে কেন্দ্রে ৫০০ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়া হতো আবশ্যিক বিষয় না থাকায় সেই কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বড়জোর ১০০ জন ।ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিতে কোন সমস্যা হবে না।
এদিকে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি পরীক্ষার আয়োজন করতে ইতোমধ্যে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপানোর কাজ শেষ হয়েছে। আগস্ট মাসের ১৮ বা ১৯ তারিখ এসব প্রশ্নপত্র জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো হয় পরবর্তীতে সেগুলো ট্রেজারিতে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে ডিসেম্বরে এসএইচএসি ও সমমান পরীক্ষার আয়োজন করতে নির্বাচিত শিক্ষকদের মাধ্যমে নমুনা প্রশ্নপত্র প্রণয়নের কাজ শেষ করা হয়েছে। এরপর লটারির মাধ্যমে কয়েকটি নির্বাচন করে সেগুলো ছাপাতে প্রেসে পাঠানো হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, এবার এইচএসসিতে যদি কোনো শিক্ষার্থীর নৈর্বাচনিক বিষয় পদার্থ, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত থাকে, তাহলে তাকে এই তিন বিষয়ের ছয়টি পত্রে পরীক্ষা দিতে হবে। তিন ঘণ্টার পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টায়। রচনামূলক অংশে নম্বর থাকবে ৩৫ ও এমসিকিউ (মাল্টিপল চয়েজ কোয়েশ্চেন) থাকবে ১৫ নম্বরের।
তবে প্রশ্নপত্র এখন যেভাবে হয়, সেভাবেই হবে। ফলে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বাছাই করার ক্ষেত্রে বেশি সুযোগ থাকবে। আগে যেখানে ১০টি প্রশ্নের মধ্য থেকে আটটির উত্তর দিতে হতো, সেখানে এখন সেই ১০টি প্রশ্নই থাকবে। এর মধ্যে চারটির উত্তর দিতে হবে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বেছে নেওয়ার সুযোগ বেড়ে যাবে। প্রতি বিষয়ে মোট ১০০ নম্বরের বদলে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। ৫০ নম্বরকে ১০০-তে রূপান্তর করে পরীক্ষার ফল দেওয়া হবে।
জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত সময়ের মধ্যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। চলতি মাসের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের শিখন জ্ঞান নিশ্চিত করতে আমরা অটোপাস দিতে চাই না। ফলে সমাজে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। শিক্ষার্থীরাও ক্লাস অনুযায়ী শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়ে। এ কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিয়ে ফলাফল প্রকাশ করতে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
এবার এসএসসি ও এইচএসসির নৈর্বাচনিক বিষয় ছাড়া আবশ্যিক বিষয় বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত, আইসিটি ও ধর্ম এবং চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে না। এসব বিষয়ে পরীক্ষার্থীদের আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেওয়া হবে। এসএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি এবং এইচএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসির ফল মূল্যায়ন করা হবে। এসএসসিতে (ভোকেশনাল) জেএসসি ও নবম শ্রেণি এবং এইচএসসিতে (ভোকেশনাল) এসএসসি ও একাদশের ফল মূল্যায়ন করা হবে।