Uncategorized
বাংলা প্রথম | ১ম সপ্তাহ | এসএসসি ২০২২ অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ | SSC 2022 Bangla 1st Paper Assignment 2021
এসএসসি ২০২২ সালের পরীক্ষার্থীদের বাংলা প্রথম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ ১ম সপ্তাহের সমাধান উত্তর | SSC 2022 Bangla 1st Paper Assignment 2021 1st week Solution Answer
বাক-প্রতিবন্ধী সুভা তাঁর পরিবার ও সমাজ থেকে যে আচরণ পেয়েছে এর বিবরণ – সুভার প্রতি পরিবার ও সমাজের প্রত্যাশিত ইতিবাচক আচরণ – আমার চেনা একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের বেড়ে ওঠার প্রতিবন্ধকতাসমূহ- “একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষেরও সংবেদনশীল ও অনুভূতিপ্রবণ মন আছে।” – কথাটির বিশ্লেষণ
📝 নির্ধারিত কাজঃ
📝 নমুনা উত্তরঃ
১. বাক-প্রতিবন্ধী সুভা তাঁর পরিবার ও সমাজ থেকে যে আচরণ পেয়েছে এর বিবরণঃ
সুভা। ভালোবেসে নাম রাখা হয়েছিল ভুসাষিণী। ছোট বেলা থেকেই সুভা তাঁর পরিবার ও সমাজ থেকে পেয়ে এসেছে অবহেলা আর লাঞ্ছনা। কারণ সুভা ছিল বাক প্রতিবন্ধী । পরিবার থেকে সকলে মনে করত সুভা বিধাতার অভিশাপস্বরূপ জন্মগ্রহণ করেছে। সুভা তাই নিজেকে সকলের নিকট থেকে আড়াল রাখত। পিতার কাছ থেকে ভালোবাসা পেলেও মায়ের কাছ থেকে তেমন ভালোবাসা সুভা পায়নি। তাঁর কারণ হল সুভার বোবা হয়ে জন্মলাভ করাকে তাঁর মা গর্ভের কলঙ্ক মনে করত। তাই একটা বিরক্তিরভাব সর্বদাই সুভার উপর ছিল। সুভার কোন অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিল না। তাই সে কাজের অবসরে কখনো নদীর তীরে বসে থাকতো আবার কখনো গোয়ালের গাভিদের সাথে সময় কাটাত। সুভার এরূপ নিসঙ্গতা থেকে এটা স্পষ্টই বলা যায় সুভাকে সামাজিকদিক থেকে লাঞ্ছনা আর অবহেলা সহ্য করতে হয়েছি। পরিবারের রক্তচক্ষুর শাসন সহ্য করতে না পেরে সুভা বাকশক্তিহীন গাভীর কাছে গিয়ে মর্মবেদনা প্রকাশ করত। এভাবেই অবহেলা অনাদরে ছোট সুভা আস্তে আস্তে বড় হয়ে উঠলো। কন্যাভারগ্রস্ত পিতামাতার চিন্তা যেমন বাড়তে লাগলো অন্যদিকে সমাজের লোকের নিন্দা যেন সুভার জীবনে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠলো। সমাজে রটে গেল সুভাকে একঘরে করে দেওয়ার গুঞ্ছন ।
২. সুভার প্রতি পরিবার ও সমাজের প্রত্যাশিত ইতিবাচক আচরণঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর সুভা গল্পে প্রতিবন্ধী মানুষের আশ্রয়ের জন্য একটি জগৎ তৈরি করেছেন এবং সেইসাথে তাদের প্রতি আমাদের মমত্ববোধের উন্মেষ ঘটাতে চেয়েছেন। একজন প্রতিবন্ধী শিশুর জীবনে কতোটা লাঞ্ছনা আসতে পারে তা সুভা গল্পে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের মূলে রয়েছে পরিবার, সমাজ এবং কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য। সমাজের সর্বস্তরে এরূপ একটি বিশ্বাস আছে যে, প্রতিবন্ধীত্ব একটি অভিশাপ এবং এটি পাপ কাজের শাস্তি যা প্রতিবন্ধীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ যত্ম, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষা এবং অংশগ্রহণের সুযোগকে প্রভাবিত করে। এমন ধারণা থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। সুভা গল্পে পরিবারের লোকেরা সুভার বাক-প্রতিবন্ধকতাকে একটি অভিশাপের চোখে দেখেছে। এরূপ নেতিবাচক চিন্তা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে।
৩. আমার চেনা একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের বেড়ে ওঠার প্রতিবন্ধকতাসমূহ:
আমাদের আশেপাশে এরকম অনেক শিশু দেখা যায় যারা স্বাভাবিক শিশুদের মত হয় না। তাদের আচার আচরণ ও দৈহিক গঠন স্বাভাবিকের তুলনায় ধীর এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ, সমস্যাগ্রস্ত। এর মধ্যে অনেকেই আছে যারা ভালােভাবে চোখে দেখতে পায় না। কারও কারও হাঁটাচলা করতে অসুবিধা। কিছুশিশু আছে যারা ঠিক মত কথা বলতে পারে না। আবার অনেকেই আছে যারা অন্যের কথা শুনতে পায়না। আবার কেউ কেউ আছে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যারা অনেক বড় হয়েও ছােটদের মতাে আচরণ করে। আমার চেনা একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু রয়েছে। সে একা একা তার দিনাতিপাত করে। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় কেউ তার সাথে মিশে না, খেলে না। এমনকি কেউ তার সাথে কথাও বলতে চায় না।
- পরিবারঃ প্রথমত, এদের প্রতিবন্ধকতার প্রধান কারণ হলাে পরিবার। যেকোনাে মানুষের সামাজিক অবস্থান তৈরি হয় পরিবার থেকেই। কিন্তু এই পরিবারই অনেক সময় প্রতিকূলতার সৃষ্টি করে।
- সমাজঃ সমাজে বিকশিত হওয়ার দ্বিতীয় প্রতিবন্ধকতা হলাে সমাজ। কারণ সামাজিক ধ্যান ধারণার উপর নির্ভর করে এইসব শিশুদের ভবিষ্যৎ। আর সমাজই যদি তাদের স্বাভাবিকভাবে গ্রহন না করে, তাহলে এ ধরনের মানুষের জীবনে আরাে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসবে।
- সমবয়সীরাঃ সমবয়সীরা আরেকটা প্রতিবন্ধকতা। দেখা যায়, সমবয়সীরা তাদের সাথে মিশতে চায় না। তাদেরকে অবহেলার চোখে দেখে। এটিই তাদের বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা
- বৈষম্য ও কুসংস্কারঃ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সমাজে বিকশিত হবার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হল বৈষম্য ও কুসংস্কার। সমাজের সর্বস্তরে এরূপ একটি বিশ্বাস আছে যে, প্রতিবন্ধীত্ব একটি অভিশাপ এবং এটি পাপ কাজের শাস্তি। এরূপ বিশ্বাস বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সমাজে বিকশিত হলে বাধা সৃষ্টি করে।
৪. “একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষেরও সংবেদনশীল ও অনুভূতিপ্রবণ মন আছে।” – কথাটির বিশ্লেষণ করা হল-
সুভা বাকপ্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও সে চাইতাে তার কিছু বন্ধুবান্ধব থাকুক। যাদের সাথে সে ইশারায় গল্প করবে, মনের ভাব প্রকাশ করবে। সে চায় তার মা তাকে বােঝা না ভাবুক। ভালােবেসে যেনাে তাকে কাছে টেনে নেয়। কিন্তু যখন তার ভাগ্যে এসব জুটলাে না, তখন সখ্যতা গড়ে উঠলাে প্রকৃতির সাথে। প্রকৃতি যেনাে তার সকল অভাব পূরণ করে দিতাে, যেনাে তার হয়ে কথা বলে, নদীর কলধ্বনি, লােকের কোলাহল, মাঝির গান, পাখির ডাক, তরুর মর্মর সমস্ত মিশে চারদিকের চলাফেরা-আন্দোলন-কম্পনের সাথে এক হয়ে সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় সুভার চির নিস্তব্ধ হৃদয় উপকূলের কাছে এসে ভেঙ্গে পড়তাে। তার বন্ধুত্ব ছিল প্রাণীদের সাথে। গােয়ালের দুটি গাভী। মানুষের সাথে তার ভাবের বিনিময় না হলেও, ভাষাহীন প্রাণী আর প্রকৃতির সাথে ঠিকই হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে সুভা। কাজের ফাঁকে যখনই সময় পেত নির্বাক প্রকৃতি ও গাভীদের সাথে সময় কাটাত। তাই বলা যায়, একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষেরও সংবেদনশীল ও অনুভূতিপ্রবণ মন আছে- মন্তব্যটি সুভা ও আমার চেনা/জানা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের পরিপ্রেক্ষিতে যথার্থ।
—————- লাইক 👍—- কমেন্ট 💬—- শেয়ার 📢——-
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
এসএসসি ২০২২ এর ২য় সপ্তাহের বাওবি অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান কখন পাওয়া যাবে?