সৎসঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ অথবা, সঙ্গদোষে লােহা ভাসে
বিষয়ঃ ভাবসম্প্রসারণ
শ্রেণিঃ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ SSC HSC JSC
মূলভাব
মানুষ যে সমাজের ওপর নির্ভর করে জীবনযাপন করে সে সমাজে আছে নানা ধরনের লােক জ্ঞানী-মূর্খ, ভাল-মন্দ, সৎ-অসৎ নানারকম মানুষের সমাবেশ সেখানে। সঙ্গ নির্বাচনে একমাত্র বিবেচনার দিক হল গুণবানের বৈশিষ্ট্য যার সহায়তায় জীবন হয়ে ওঠে উজ্জ্বল। সেখানে দুর্জন বা চরিত্রহীন ব্যক্তির অনুপ্রবেশের কোন সুযােগ নেই। তাই সমস্ত জীবন ভরে কুসঙ্গ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।
সম্প্রসারিত ভাব
মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ তার চরিত্র। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, ‘The crown and glory of life is character’. চরিত্রের গুণেই মানুষ শ্রেষ্ঠ আদর্শের মর্যাদা পায়। এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ঠিক রেখে অপরাপর বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটানাে আবশ্যক। তাই কুসঙ্গ নয়, সৎসঙ্গের মধ্য দিয়ে নিজেকে বিকশিত করতে হবে। কুসঙ্গে মানুষ অমানুষ হয়ে ওঠে, তার সৎ গুণসমূহ নষ্ট হয়ে গিয়ে সে হয় পশুর মতাে অধম। মানুষ গুণগতভাবেই সত্যের পূজারি, সুন্দরের অনুসারী। আর অসৎ পথে যাওয়ার মূল কারণ অসৎসঙ্গ। অসৎসঙ্গের মধ্য দিয়েই মানুষের চরিত্র কলুষিত হয়। যেমন লােহা ওজনে খুব ভারী বলে তা পানিতে ডুব যায়। কিন্তু এ ভারী লােহা যদি হালকা কাঠ বা অসার কোনাে পদার্থের সঙ্গে বেঁধে দেওয়া যায়, তাহলে লােহা ভেসে ওঠে, ডােবে না।
মানুষের মধ্যেও অসৎ সঙ্গের সাহচর্যের প্রভাব এভাবেই কার্যকরী হয়। সঙ্গদোষে মানুষ পরিবর্তিত হয়ে যায়। কুসঙ্গ চরিত্রহীনতার অন্যতম কারণ। অথচ চরিত্রের মাধ্যমেই ঘােষিত হয় জীবনের গৌরব। চরিত্র দিয়ে জীবনের যে গৌরবময় বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় তা আর কিছুতেই সম্ভব নয় বলে সবার ওপরে চরিত্রের সুমহান মর্যাদা স্বীকৃত। যার পরশে জীবন ঐশ্বর্যমণ্ডিত হয় এবং যার বদৌলতে মানুষ জনসমাজে শ্রদ্ধা ও দৃত হয়, তার মূলে রয়েছে উত্তম চরিত্র। স্পর্শমণির ছোঁয়ায় লােহা যেমন সােনা হয়ে ওঠে তেমনি সৎ চরিত্রের প্রভাবে মানুষের পশুপ্রবৃত্তি ঘুচে যায়, জন্ম নেয় সৎ, সুন্দর ও মহৎ জীবনের আকাঙ্ক্ষা। আবার সঙ্গদোষে মানুষ তার চরিত্রকে হারিয়ে পশুর চেয়েও অধম হয়ে যায়।
মন্তব্য
এ জগতে যত লােকের অধঃপতন হয়েছে অসৎসঙ্গই এর অন্যতম কারণ। মানুষ সতর্ক থাকলেও কুসঙ্গে পড়ে নিজের অজ্ঞাতে পাপের পথে পরিচালিত হয়। তাই সঙ্গ নির্বাচনে আমাদের সতর্ক হতে হবে।