ছবিঃ iStockphoto |
বাংলাদেশের পােশাকশিল্প – অনুচ্ছেদ ৬ ৭ ৮ ৯ শ্রেণি
বাংলাদেশের পােশাকশিল্প
অতীতে বস্ত্রশিল্পে বাংলাদেশে খ্যাতি ছিল বিশ্বজোড়া। তবে বর্তমানে তার কিছুটা হলেও ধরে রেখেছে এ দেশের পােশাকশিল্পীরা। ১৯৭৭ সালে প্রথম ব্যক্তিগত উদ্যোগে গার্মেন্টস শিল্পের যাত্রা শুরু হলেও ১৯৮৫ সালে এ শিল্পের প্রসার ঘটে। প্রায় ১৫ লক্ষ নর-নারী এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পােশাকশিল্পই একমাত্র উল্লেখযােগ্য বাংলাদেশি “লার্জ স্কেল ইন্ডাস্ট্রি বা বৃহৎ শিল্প”। বিশ্ব বাজারে এ শিল্প অধিকার করে আছে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। বাংলাদেশের পােশাকশিল্পের সবচেয়ে বড় ক্রেতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (United States)। এছাড়া কানাডা (Canada), যুক্তরাজ্য (United Kingdom), ফ্রান্স (France), জার্মানি (Germany), বেলজিয়াম (Belgium) ও মধ্যপ্রাচ্যের (Middle East) কিছু দেশেও পােশাক রপ্তানি করা হয়। বাংলাদেশে (Bangladesh) নিরক্ষর ও শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা এক কোটিরও বেশি। এই বিপুল জনগােষ্ঠীর বেকারত্ব ঘােচাতে গার্মেন্টস শিল্পের অবদান অপরিসীম। আমাদের জাতীয় আয়ের সর্বাধিক প্রায় ৬৪ শতাংশ আসে পােশাকশিল্প থেকে। অন্যান্য শ্রমসাধ্য কাজের চেয়ে পােশাকশিল্পের পরিশ্রম অপেক্ষাকৃত কম বিধায় গার্মেন্টস শিল্পের বিভিন্ন পর্যায়ে যেমন সেলাই, বােতাম বসানাে, কাটিং, এমব্রয়ডারি ইত্যাদি সহজসাধ্য কাজগুলাে মহিলারা অনায়াসে সম্পন্ন করতে পারে। পােশাকশিল্পে নিয়ােজিত আছে পঁচাশি শতাংশ নারী। তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ হিসাবে বাংলাদেশ সুদীর্ঘকালের পরাধীনতা, শোষণ , অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার। এ কারণে এ দেশে শিক্ষার হারও কম। অশিক্ষা, কুসংস্কার, দুঃখ, দারিদ্র্য, অপুষ্টি ও অনাহারক্লিষ্ট নারী সমাজকে এবং নিরক্ষর ও অদক্ষ পুরুষদের এ শিল্পে নিয়ােগ করার ফলে তাদের জীবন ও জীবিকার ব্যবস্থা যেমন নিশ্চিত হয়েছে তেমনি তারা খুঁজে পেয়েছে স্বাবলম্বী হয়ে বেঁচে থাকার পথ। ২০০৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO) কর্তৃক প্রণীত Agreement of Textile and Clothing ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ায় কোটামুক্ত বিশ্ববাজারে উন্মুক্ত প্রতিযােগিতার মাধ্যমে। পােশাকশিল্প এখন সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছে। আমাদের সকলের উচিত এ শিল্পের কর্ম পরিবেশ সমুন্নত রাখা এবং সার্বিক সহযােগিতার মাধ্যমে এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।