যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবি অনুচ্ছেদ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ শ্রেণি ।

যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবি
আমাদের এ ভূখণ্ড বারবার ভিনদেশি শক্তির কাছে পরাধীন হয়েছে। এদেশের মানুষ হয়েছে বারবার শােষিত ও অত্যাচারিত। ১৯৭১ সাল বাঙালি জাতির একটি ঘটনাবহুল সময়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এদেশেরে কতিপয় নরপশু গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযােগসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চালায়। তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে বিভিন্নভাবে সহযােগিতা করে। এরাই মূলত যুদ্ধাপরাধী। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মহানুভবতা ও তাঁকে নির্মমভাবে হত্যার পর সে সময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন অবকাঠামােগত উন্নয়নের দিকে নজর দিতে গিয়ে যুদ্ধাপরাধী বিষয়টি সে সময় ততটা গুরুত্ব পায়নি। একসময় রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হওয়ায় তাদের বিচার হয়নি, বরং তারা নানাভাবে পৃষ্ঠপােষকতা লাভ করে। নব্বইয়ের দশকে শহিদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন জোরদার হয়। তাঁরই নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গণআদালত গঠিত হয়। ১৯৯৪ সালে তিনি পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিলে এ আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে। সর্বশেষ ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করে। গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সম্প্রতি দেশের চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে। তাদের অনেকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছে। আবার কারাে কারাে ইতােমধ্যেই মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর হয়েছে। এছাড়া অনেকেরই মৃত্যুদণ্ডে রায় কার্যকরের অপেক্ষায় আছে।