
প্রিয় অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা, তোমরা ইতোমধ্যেই তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট হাতে পেয়েছো। দীর্ঘ লকডাউনের পর তোমাদের চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ প্রকাশ করা হয়েছে।
আজ অষ্টম শ্রেণীর চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট .২০২১ এর চারু ও কারুকলা এর নির্ধারিত কাজ এবং নমুনা উত্তর নিয়ে হাজির হয়েছি। সর্বপ্রথমে চলো দেখে নেয়া যাক চারু ও কারুকলা চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টএ কি কি থাকছে।
তোমাদের চারু ও কারুকলা পাঠ্য বইয়ের প্রথম অধ্যায় “বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকলা ও ঐতিহ্যের পরিচয়” থেকে নির্ধারিত কাজ দেওয়া হয়েছে।
নির্ধারিত কাজ

গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে কারুশিল্পের ব্যবহার এবং তার নান্দনিক দিকগুলি মূল্যায়ন করো।
সংকেত
১. কোন কোন ক্ষেত্রে কারুশিল্পের ব্যবহার করা হয় তা চিহ্নিত কর। (যেমন : কুলা, ডালা…)
২. কি কি উপকরণ ও কিভাবে নান্দনিক রূপ দেয়া হয় তা উল্লেখ করো।
নমুনা উত্তর
আদিকাল থেকেই চারু ও কারুকলার উপর নির্ভর করে জীবনযাপন করে আসছে বহু মানুষ। পেশা হিসেবেই তারা শিল্পকর্মকে বেছে নিয়েছে। তবে বর্তমান আধুনিক সভ্যতায় এসে আদিকালের মত এইসব শিল্পকর্ম তেমন চোখে না পড়লেও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কারুশিল্পের ব্যাবহার চোখে পড়ার মত। নান্দনিক আর রুচিশীল কারুশিল্পের বাহারিসব শিল্প মনকে একদিকে যেমন আন্দোলিত করে অন্যদিকে অনুষ্ঠানে এনে দেয় ভিন্ন একমাত্রা।
কারুশিল্প ব্যাবহারের ক্ষেত্র
আমাদের দেশে কারুশিল্পের ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় বেড়েছে এর ক্ষেত্রও। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অনেক চারুকলা ও কারুশিল্প প্রতিষ্ঠান। নিচে যেসবক্ষেত্রে কারুশিল্পের ব্যবহার করা হয় তা উল্ল্যেখ করা হল:
১) বাংলা নববর্ষ
২) গায়ে হলুদ
৩) বই-পুস্তকের ছবি আঁকা
৪) খবরের কাগজ
৫) সিনেমাশিল্পে
৬) পোশাকশিল্পে
৭) ওষুধশিল্পে
৮) ইন্টিরিয়র ডিজাইন
৯) স্থাপনাশিল্প
১০) নকশিকাঁথা
১১) জামদানি
উপকরণ ও নান্দনিক রুপ
কারুশিল্পে অনেক উপকরণ ব্যাবহার করা হয়। মানুষের রুচি ও চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে কারুশিল্পের উপকরণে এসেছে নানা বৈচিত্র্য। নিচে কয়েকটি উপকরণের নাম ও এর নান্দনিক রুপ উল্ল্যেখ করা হল:
১. ডালা-কুলাঃ বর্তমানে ডালা-কুলার নান্দনিক ব্যবহার যেন প্রাচীন ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দেয়। আমাদের দেশের নিয়ম হচ্ছে, গায়ে হলুদে পাঠানো হয় ডালা, কুলা, মিষ্টি, পান-সুপারি, মাছ ও বর-কনেসহ পরিবারের বৃদ্ধদের জন্য কাপড়। গায়ে হলুদের পোশাক কেমন হবে, তার ওপর ভিত্তি করে হলুদের কুলা-ডালা সাজানো হয়।
২. পোশাকঃ পোশাক গায়ে হলুদের মাত্রাকে ফুটিয়ে তোলে বহুগুনে। আমাদের দেশের গায়ে হলুদের প্রচলিত পোশাকের মধ্যে রয়েছে হলুদ পাঞ্জাবি এবং হলুদ রঙের শাড়ি। আর এইসব পোশাকে বাহারি ডিজাইন ও কারুশিল্পের নিপুন কারুকার্য দেখা যায়।
৩. নকশি পিঠাঃ গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে হরেক রকমের খাবারের মধ্যে নকশি পিঠা সকলের মনকে আন্দোলিত করে। চালের আটা রুটির মতো পুরু করে বেলে নিয়ে খেজুর কাঁটা অথবা বাঁশের ছিলকা দ্বারা বিভিন্ন ডিজাইনের নকশি পিঠা তৈরি করা হয়। তারপর তেলে ভেজে চিনি অথবা গুড়ের সিরায় ভিজিয়ে পরিবেশন করা হয়।
৪. আলপনাঃ আলপনা একটি জনপ্রিয় লোকচিত্র। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে আলপনা বিশেষ একটি স্থান দখল করে আছে। হিন্দু-মুসলিম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও আলপনা দেওয়ার রীতি রয়েছে। বিশেষ করে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে ঘরের মেঝেতে আলপনা স্থান পায়। এতে নান্দনিক চেতনারই প্রতিফলন ঘটে।
৫. ইনটেরিয়র ডিজাইনঃ গায়ে হলুদের মঞ্চে কারুশিল্পের ব্যবহার দেখা যায়। বসার সোফা অথবা কারুকাজ করা চেয়ার, ফুল, কাপড় রজনীগন্ধা, গাঁদা, গোলাপ, অর্কিড, বেলী, জারবেলা ইত্যাদি ফুল ব্যবহার করে তৈরী করা হয় গায়ে হলুদের মঞ্চ।