
প্রিয় নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা, তোমরা ইতোমধ্যেই তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট হাতে পেয়েছো। দীর্ঘ লকডাউনের পর তোমাদের চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ প্রকাশ করা হয়েছে। আজ নবম শ্রেণীর বাংলা চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট .২০২১ এর নির্ধারিত কাজ এবং নমুনা উত্তর নিয়ে হাজির হয়েছি। সর্বপ্রথমে চলো দেখে নেয়া যাক বাংলা চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টএ কি কি থাকছে।
তোমাদের বাংলা পাঠ্য বইয়ের শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত “অভাগীর স্বর্গ” গল্পে থেকে একটি নির্ধারিত কাজ দেওয়া হয়েছে
নির্ধারিত কাজ

নমুনা উত্তর
হ্যাঁ। আমি মনে করি “অভাগীর স্বর্গ” গল্পে মানবিক সমাজ গঠনে যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা দূর করা যেতে পারে। এজন্য আমাদের কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মানুষের মূল্যবোধ ও বিবেক দিয়ে বিচার করাকে মানবিকতা বলে। আমরা আমাদের জ্ঞান বুদ্ধি ও বিবেক দিয়ে মানবিকতা অর্জন করি । সব জিনিসের একটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে। তেমনিভাবে মানবিকতার মূল লক্ষ্য হলো মানুষের তথা সমাজ ও জাতির কল্যাণ করা। মানুষের ভালো ভাবা ও মানুষের জন্য ভালো কিছু করা প্রচেষ্টা করা বা করাকে মানবিকতা বলে। কিন্তু আমাদের পঠিত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত অভাগীর স্বর্গ গল্পে এই মানবিকতা জিনিসটি বিন্দুমাত্র লক্ষিত হয় নি। যার কারনে বলা যায় অভাগীর স্বর্গ গল্পে মানবিক সমাজ গঠনে একেবারে ব্যর্থ কারণ এটি গঠনে নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সেগুলো নিচে উপস্থাপন করা হলোঃ
(১) ধনী-গরীব বৈষম্যঃ আমরা আমাদের সমাজসহ নানান ক্ষেত্রে অনেক সময় ধনী ও গরিবের বৈষম্য দেখে থাকি। এই গল্প তা ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। গল্পে ধনী শ্রেণীর লোকেরা অনেক টাকা পয়সার মালিক হওয়ার কারণে তারা আরাম-আয়েশ করত কিন্তু গরিবের দুঃখ কষ্ট বোঝার তেমন কোনো চেষ্টা করত না।
(২) জাতের ভেদাভেদঃ অভাগীর স্বর্গ গল্পে অভাগী ও তার ছেলে কাঙ্গালীর জাত দুলে সম্প্রদায়ের হওয়ার কারণে সমাজের কোন লোক তাদেরকে কোন মূল্য দিতো না। যার কারণে অভাগী তার মৃত্যুর পর দাহ করার জন্য কাঠটুকু পর্যন্ত পায়নি। এ যেন গরিব হয়ে জন্ম নেওয়াটাই অনেক বড় পাপের!
(৩) দূর্বল ও পক্ষপাত শাসনব্যবস্থাঃ “অভাগীয় স্বর্গ” গল্পে উল্লেখিত শাসনব্যবস্থা দূর্বল হওয়ার কারণে গরিব লোকেরা কোন সময় তাদের প্রাপ্ত অধিকার পায়নি।
(৪) শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতন ও অত্যাচারঃ শাসকেরা আমাদেরকে শাসন করে। দেশের সকল ক্ষমতা থাকে তাদের হাতে। কিন্তু এই শাসকেই যে অনেক সময় শোষকে পরিণত হয়। আর “অভাগীয় স্বর্গ” গল্পে উল্লেখিত জমিদার ও ধনী শ্রেণির লোকদের মধ্যে এটাই পরিলক্ষিত হয়।
(৫) সামাজিক মর্যাদাঃ আমাদের সমাজে বসবাস করতে হলে একটি সামাজিক পদমর্যাদার সাথে বসবাস করতে হয়। যখন কোন মানুষ সমাজে সামাজিক মর্যাদার সাথে বসবাস করতে পারে না তখন সমাজ কলুষিত হয়ে যায়। যোগ্য লোকেরা পায়না তাদের ন্যায্য সম্মান।
প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের উপায়
তবে এসকল প্রতিবন্ধকতা ভুলে গিয়ে ও সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে একটি মানবিক সমাজ গঠণ করা সম্ভব। নিম্নে মানবিক সমাজ গঠনের উপায়গুলো আলোচনা করা হলোঃ
(১) সঠিক ও সুন্দর শাসন ব্যবস্থাঃ একটি দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি অনেকাংশে নির্ভর করে সঠিক ও সুন্দর শাসনব্যবস্থার উপর। আর যার কারণে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করে মানবিক সমাজ গঠন করা সম্ভব।
(২) সামাজিক স্বীকৃতি প্রদানঃ সমাজের অনেকে হিজড়া, বেদে, মেথর ইত্যাদি লোকদের অবজ্ঞান করে থাকে। তাদেরকে সমাজের অংশ মনে করে না। কিন্তু সামাজিক স্বীকৃতি পেলে তাদের সম্মান অনেক বাড়বে ও সকলে মূল্যবোধ প্রদর্শন করবে। যাতে গড়ে উঠবে মানবিক সমাজ।
(৩) ধনী-গরিব বৈষম্য দূরীকরণঃ বহু বছর ধরে চলে আসা ধনী-গরিবের বৈষম্য মানবিক সমাজ গঠণের অন্যতম প্রধান অন্তরায়। তাই আমাদের মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে অবশ্যই ধনী-গরিব বৈষম্য দূর করতে হবে।
(৪) অসাম্প্রদায়িকতাঃ এক জাতের সাথে অন্য জাতের তুলনা না করে মানুষই বড় পরিচয় এমন মনোভাব পোষণ করতে হবে।
(৫) মূল্যবোধ সৃষ্টি ও ধর্মীয় অনুশাসন অনুসরণঃ আমাদের মানবিক সমাজ গড়ে তোলতে হলে অবশ্যই মূল্যবোধের চর্চা করতে হবে ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।
আর এইভাবেই আমরা সামাজিক সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে একটি মানবিক সমাজ গড়ে তোলতে পারি।
লিখাটি পাঠিয়েছেন,
মোঃ সিহাব উদ্দিন সরকার মাহি।
এডমিন,
Onurag.com
Good
thanks to HAZABAROLO for helping us
আপনাকেও ধন্যবাদ।
Thanks for your nice assintment answare