ভাবসম্প্রসারণঃ সঙ্কল্প করেছ যাহা, সাধন করহ তাহা, রত হয়ে নিজ নিজ কাজে
সঙ্কল্প করেছ যাহা, সাধন করহ তাহা,
রত হয়ে নিজ নিজ কাজে
ভাব-সম্প্রসারণ
সম্প্রসারিত ভাবঃ প্রত্যেক সফলতার পিছনে লুকিয়ে রয়েছে একটি মূলমন্ত্র। তা হল সংকল্প। সফলতার জন্য প্রথমে প্রয়োজন দৃঢ় সংকল্প। আর এই সংকল্পই পরিকল্পনা মাফিক কাজ করার জন্য শক্তি যোগায়। তাই সাফল্য লাভের জন্য সংকল্পবদ্ধ হয়ে একাগ্রচিত্তের নিজ কাজে মগ্ন থাকতে হবে।
কোন কাজকে সফলতার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। আর পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন অদম্য পরিশ্রম। পরিকল্পনা ও পরিশ্রমের ভিত্তিকে মজবুত করে সংকল্প। তাই সংকল্পকে বলা হয় কাজের জীবনীশক্তি। সংকল্পের ভিত যদি শক্তিশালী না হয় তাহলে পরবর্তী কর্ম পরিকল্পনা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হয় না। বর্তমান বিজ্ঞানের যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তার মূলে ছিল পরিকল্পনা। পরিকল্পনা ও পরিশ্রমকে পুজি করে মানুষ পাড়ি জমিয়েছে চাঁদে। নিত্য নতুন আবিষ্কারের নেশায় মত্ত রয়েছে।
যারা কাজকে ভালােবাসে এমন পরিশ্রমী ও সাহসী মানুষেরাই পৃথিবীতে টিকে থাকে এবং সকল প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে এগিয়ে চলে। অন্যদিকে, অলস কর্মভীরুদের পদে পদে হেরে যেতে হয়, সময়ের অতলে তলিয়ে যায়। জীবন চলার পথে বিচিত্র অভিজ্ঞতা মানুষকে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন জ্ঞানী মানুষে পরিণত করে। মানুষের কর্মময় জীবনের সাথে তিন তিনটি কালের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আর এগুলাে হচ্ছে- অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। জ্ঞানী ব্যক্তিরা অতীতকে ভুলে গিয়ে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সচেতন থাকে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে অনাগত দিনগুলাে স্বাচ্ছন্দ্যময় করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পক্ষান্তরে, যারা নির্বোধ ও বােকা তারা গড্ডলিকা প্রবাহে জীবন অতিবাহিত করে। তাদের দূরদৃষ্টির অভাব ও চিন্তা-চেতনার সংকীর্ণতা যথার্থ আত্মােপলব্ধি থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। ফলে অতীত ও বর্তমানের ব্যর্থতা মূল্যায়ন কিংবা সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের কথা তারা কল্পনাও করতে পারে না। তাদের জীবনে ধ্বংস অনিবার্য।
পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীদের জীবনী পর্যালােচনা করলে জানা যায়, তারা প্রত্যেকেই পরিশ্রমী ছিলেন। যে কাজ করার জন্য সংকল্প করেছিলেন তারা সেই কাজেকে পূর্ণতার রুপ দিয়েছলেন। হযরত মুহম্মদ (সা), ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিংকন (Abraham Lincoln), বিজ্ঞানী আইনস্টাইন (Albert Einstein) এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মহানবী (সা) নিজ হাতে সকল কাজ সমাধা করতেন। অর্থাৎ এ পৃথিবীতে যারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকে কাজের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন।
ভবিষ্যতের ভাবনা মানুষকে সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত সংকল্পকে হাতিয়ার করে সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিকল্পনার ছক বুনে পরিশ্রমের মাধ্যমে সাফল্যের সিঁড়ি গড়ে তোলা। সময়ের কাজ সময়ে করা। কাজে ব্যর্থতা আসবেই। তাই বলে হাল ছেঁড়ে দেওয়া চলবে না।
khub upokar holo lekhata peye
seems good to me