অনুচ্ছেদ বাংলাদেশের উপজাতি বা বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগােষ্ঠী ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ শ্রেণী SSC HSC JSC PSC
বাংলাদেশের উপজাতি
জাতিগত দিক থেকে আমাদের দেশ এক বিচিত্র দেশ। এদেশের মূল জনগােষ্ঠী বাঙালি। এছাড়া রয়েছে আরও অনেক ক্ষুদ্র জাতিসত্তা। বাঙালিদের মতাে তাঁদেরও রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জনগােষ্ঠীর মধ্যে গারাে, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, মণিপুরি, সাঁওতাল উল্লেখযােগ্য। প্রাচীন রীতিনীতি, আচার-অনুষ্ঠান ও বিশ্বাস সংস্কারে লালনকারী এসব জনগােষ্ঠী পৃথিবীর আদিম সমাজব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে বেঁচে আছে এখনাে। এরা আরণ্যক সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। আদমশুমারি রিপাের্টে বাংলাদেশে ৪৮ টি ক্ষুদ্র জাতিগােষ্ঠীর সংখ্যা দেখানাে হয়েছে ১৫ লক্ষ ৮৭ হাজার প্রায়।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উপজাতিক গোষ্ঠী হল চাকমা। ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গােষ্ঠীর মানুষেরা সাধারণত সর্বপ্রাণবাদী, জাদু ও জড়পূজায় অভ্যস্ত হলেও বর্তমানে তার বিভিন্ন ধর্ম পালন করে থাকে। সাঁওতাল ও গারােরা সাধারণত হিন্দু ধর্মানুসারী। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগােষ্ঠী সমাজব্যবস্থার দিক থেকে মাতৃতান্ত্রিক ও পিতৃতান্ত্রিক উভয়ই। এদের বিবাহের উৎসবে নানা প্রথা প্রচলিত রয়েছে। যেমন- গােত্র বিবাহ, অসমবর্ণ বিবাহ, বাল্যবিবাহ, বহু বিবাহ ইত্যাদি। নৃ-তাত্ত্বিক জনগােষ্ঠীর খাবারের মধ্যে রয়েছে ভাত, মাছ, তরিতরকারি, ফলমূল, মাংস ইত্যাদি। সাঁওতাল মণিপুরি, গারাে ও চাকমারা ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে বর্ণাঢ্য নৃত্য পরিবেশন করে। বাঁশি সাঁওতালদের প্রিয় বাদ্য। বিভিন্ন জাতিসত্তার বৈচিত্র্য থাকা সত্তেও সকলের মধ্যে একতার শক্তি বাংলাদেশকে করেছে সুন্দর ও বর্ণময়।
বাংলাদশের ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জাতিগােষ্ঠীর জীবনাচার আমাদের জাতীয় সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় করেছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও বাঙালির পাশাপাশি এদেশের ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগােষ্ঠী সমানভাবে ভূমিকা পালন করেছে।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।