![]() |
ছবিঃ ইন্টারনেট |
রচনাঃ সত্যবাদিতা বা সততা
ভূমিকা
যে সব গুন মানব চরিত্রকে মহিমান্বিত করে তোলে তার মধ্যে একটি মূল্যবান গুন হলো সত্যবাদিতা বা সততা। এটি মানুষের অন্যতম একটি মহৎ গুন। সত্য মুক্তি দেয় আর মিথ্যা ডেকে আনে ধ্বংস। তাই বলা হয়ে থাকে সত্যের চেয়ে বড় গুন আর নেই।
এই মহাবিশ্ব চির সত্যের উপর দন্ডায়মান। সত্য ও বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে মানুষ তার নিজেকে আবিষ্কার করে এবং মনুষ্যত্বকে অর্জন করে। ধর্ম, জ্ঞান-বিজ্ঞান, যা কিছু এ পৃথিবীতে আছে তার সব কিছুর মূলে যে চির সত্য লুকায়িত, আমরা শিক্ষা-দীক্ষা ও জ্ঞানার্জনের মধ্য দিয়ে সে চির সত্যকে অর্জন করি। তাই মানুষের সাধনা সত্যের সাধনা। সত্যবাদিতার গুন অর্জন করাই মানুষের নিরন্তন সাধনা হওয়া উচিত। কোনো কিছু গোপন না করে অকপটে প্রকাশ করার নামই সত্যবাদীতার বৈশিষ্ট্য।
মিথ্যা ও অসত্যকে বিতাড়িত করে সত্য চিরদিন মাথা উঁচু করে থাকে বলে এর মূল্য যুগে যুগে স্বীকৃত হয়ে এসেছে।
সত্যবাদিতার বৈশিষ্ট্য
সত্যবাদিতা নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে ও গুরুত্বে বিশেষ অবদান রাখতে পারে বলে আদিকাল থেকে মানুষ তার চর্চা করে সত্য ও ন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করেছে। জীবনকে পৌঁছিয়েছে সফলতার দারপ্রান্তে। সত্য হলো আলোর পথ আর মিথ্যার পথ হলো অন্ধকার। সত্যবাদিতার মূল বৈশিষ্ট্য হলো ‘সত্য’ অর্থাৎ সত্য চিরকাল প্রকাশমান থাকে।
শুধু মিথ্যা না বলা বোঝাতে সত্যবাদিতা বোঝায় না। সত্যকে অবলম্বন করে যে বৈশিষ্ট্য বিকশিত হয় তার নাম সত্যবাদিতা। সত্যের মধ্যে কোনো গোপনীয়তা নেই। সত্য জীবনের স্বরূপ বিকশিত করে। সত্যবাদী লোকের কথা ও কাজে কোনো পার্থক্য থাকে না। সত্যবাদিতা মানুষকে খাঁটি সোনার মতো নিখাদ করে তোলে।
সত্যের মধ্যে মহান আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হয়। সত্যের মধ্য দিয়েই মানুষ অর্জন করে সততা। সততা মানব চরিত্রের অপর একটি মহৎ গুন। সত্যের অনুসারী মানুষ সৎ থাকার প্রবণতার মাধ্যমে সততার বৈশিষ্ট্য রূপায়িত করে তোলে।
কোনো প্রকার পাপের কাজ থেকে দূরে থেকে ন্যায় ও সত্যের প্রতিফলন ঘটিয়ে চরিত্রের বিকাশ ঘটাতে পারলে তাতে সততার যথার্থ পরিচয় পাওয়া যায়। ফলে সত্যবাদিতা জীবনকে সার্থক করার একটি চমৎকার পন্থা ও মানব চরিত্রের উজ্জল অলংকার। তাই যুগে যুগে সত্যের সাধন চলছে। কাজী নজরুল ইসলাম (Kazi Nazrul Islam) বলেছেন –
সত্য-প্রাণ সে রহিল অমর, মায়া যাহা হল ছাই!
ভুল যাহা ছিল ভেঙে গেল মহাশূন্যে মিলালাে ফাঁকা,
সৃজন-দিনের সত্য যে, সে-ই রয়ে গেল চির আঁকা”
সত্যবাদিতা শ্ৰেষ্ঠ গুণ
সত্যবাদিতা মানবজীবনের একটি শ্রেষ্ঠ গুণ। যে সব গুণ মানবজীবনকে সার্থক ও সুন্দর করে তােলে তার মধ্যে সত্যবাদিতার স্থান সবার ওপরে। সত্যের অনুসরণে জীবন সুন্দর হয়। সত্যকে অবলম্বন করলে জীবনে সাফল্য অনিবার্য। সত্যবাদী লােক সমাজে সম্মান ও মর্যাদার আসন পান। সবাই তাকে বিশ্বাস করে। প্রত্যেক ধর্মই সত্যকে গ্রহণ ও মিথ্যাকে বর্জন করার আদেশরয়েছে। বলা হয়েছে, সকল পাপের উৎস হল মিথ্যা। কেননা মিথ্যা থেকেই শুরু হয় প্রতারণা, জালিয়াতি, নানাবিধ কুকর্ম। তাই মিথ্যা বলা মহাপাপ। আর সত্যবাদিতা মানুষের মহৎ গুণ।
সত্যবাদিতার সুফল
সততা মানুষের জীবনে চির মুক্তি ও কল্যাণের পথ। সত্যবাদীকে সবাই বিশ্বাস করে। সমাজে তাকে সবাই শ্রদ্ধার চোখে দেখে এবং ভালােবাসে। অপরদিকে মিথ্যাবাদীকে কেউ বিশ্বাস করে না। সমাজে তাকে সবাই ঘৃণার চোখে দেখে। মনে রাখতে হবে কোনাে মানুষ অসৎ হয়ে জন্মায় না। জন্মাবার পরে পরিবার, সমাজ ও তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা তাকে অসৎ পথে পরিচালিত করে। বিশেষ করে সাংসারিক চাপের মুখে, নানা হাহুতাশ থেকে পরিত্রাণের জন্যে নিরুপায় হয়ে অসৎ পথে পা বাড়ায়।
সত্য চিরস্থায়ী। আর যে সত্যের পথে চলে এবং অন্যকে সত্যবাদি হওয়ার উপদেশ দেয় তিনি হলেন প্রকৃত মানুষ। সত্যের সুফল কেউ একা ভোগ করে না। একটি সমাজ তথা দেশের উন্নতি অনেকাংশে নির্ভর করে দেশের জনগণের উপর। জনগণের ভালো কর্মকান্ডের উপর ভিত্তি করেই দেশের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। কাজেই জনগণের মাঝে যদি সত্যবাদিতার গুণটি থাকে তাহলে দেশ থেকে অন্যায় চিরতরে বিদায় নিবে। থাকবে না কোনো অসৎ কাজ, থাকবে না মারামারি খুন রাহাজানি। দেশে শান্তি থাকবে অটুট।
সত্যবাদিতার প্রয়োজনীয়তা
সত্যবাদিতা থেকে বিচ্যুত হলে মানুষের নৈতিক অবক্ষয় ঘটে ফলে সমাজজীবনে অবৈধ কার্যকলাপ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে এবং মানুষের মহৎ গুণাবলির তিরােধান ঘটে। মানুষ তখন নানা অন্যায় কাজে লিপ্ত হয়। সমাজে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলতা। দেশে নানা অশান্তির সৃষ্টি হয়। ফলে ব্যাপক আকারে অন্যায় অনাচার সমাজে প্রবেশ করে জাতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে নিয়ে যায়। তাই মানবজীবনের স্বার্থে অন্যায়কে সমাজ থেকে বিদূরিত করতে হবে। অন্যায়পথে যে চলে তার বিবেক বলতে কিছু থাকে না। বিবেক না থাকলে সমাজ হিংসায় মত্ত হয়ে উঠবে। তাই সমাজে বসবাসের জন্য সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। ধর্মীয় দিক থেকেও সত্যবাদিকে উচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তাই ধর্মবােধসম্পন্ন আদর্শ জীবনযাপনের জন্য সততা ও সত্যবাদিতার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।
সত্যবাদিতার মূল্যায়ন
সততা ও সত্যবাদিতা বাস্তব জীবনের একটি মহত্তর দিক হলেও বাস্তব জীবনে বিশেষত দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তা যথার্থ মর্যাদা লাভ করতে পারছে না। আমরা এই মহৎ গুণটির মূল্যায়ন সঠিকভাবে করছি না। সততা পরিহার করে মানুষ সত্যপথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। ফলে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিকেই তারা প্রাধান্য দিয়ে নানা রকমের অত্যাচার, অনাচার ও দুর্নীতি করে চলেছে। অসততার প্রতি মানুষের তেমন প্রতিবাদ বা বিরূপতা দেখা যাচ্ছে না।
সততা বিসর্জন দিয়ে মানুষ এখন নিজের স্বার্থ সাধনে তৎপর। অন্যায় বা অবৈধ পথ অনুসরণ করায় এখন সমাজে এসেছে অবক্ষয়। ঘরে-বাইরে সর্বত্রই আজ মনুষ্যত্বের দীনতার চিত্র। বর্তমান সমাজব্যবস্থায় বড়দের কাছ থেকে ভালাে কিছু শেখার আশা করা যায় না। যুব সমাজকে নতুন চেতনায় উদ্দীপ্ত করার মতাে আজ কোনাে পরিকল্পনা নেই, ফলে তারা প্রতিনিয়ত অবক্ষয়ের দিকে অগ্রসরমান।
একদিকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-কলহ, অপরদিকে অর্থনৈতিক দুর্দশা, ফলে শিক্ষাজগতে নৈরাজ্য, সমাজসেবার নামে নিজের স্বার্থ হাসিল এবং স্বেচ্ছাচারিতা যুবসমাজকে বিপথগামী করছে। আজ আমরা অবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করি, সমাজে সমাজ-বিরােধীর যে সম্মান, যে প্রতিপত্তি, সেখানে একজন জ্ঞানী, সৎ মানুষের মূল্য তুচ্ছ। সততা সেখানে লাঞ্ছিত, অসহায়। বিবেক সেখানে বিবর্জিত। জ্ঞানী-গুণীরাও তাদের খাতির করে। রাজনৈতিক নেতাদের তারা ডান হাত! জঘন্য, নিষ্ঠুর কাজকর্ম করেও তারা আইনের চোখে নিরাপদ। প্রশাসন প্রয়ােজন মতাে ওদের ব্যবহার করে। কী তাদের মূলধন? তারা অনায়াসে মানুষ খুন করে, ডাকাতি করে, জনজীবনে ত্রাসের সৃষ্টি করে। এই মূলধন নিয়েই ওরা সমাজের বিশিষ্ট মানুষ। আজ তাই মানবিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ গৌণ হয়ে উঠেছে। বস্তুত সমাজের সর্বস্তরে আজ যে সততা, সত্যবাদিতা ও মূল্যবোধের অভাব, তার মারাত্মক প্রতিক্রিয়া যুবকদের মাঝে প্রতিনিয়ত বিস্তৃত হচ্ছে।
আমাদের কর্তব্য
জীবনকে অবশ্যই সত্যবাদিতার মাধুর্যে মণ্ডিত করতে হবে। অন্যায়ের মাধ্যমে বা অবৈধ উপায়ে যতই বিত্তশালী হােক না কেন তা যে পাপ তাতে কোনাে সন্দেহ নেই। অসত্যের পরাজয় আসবেই ও ন্যায়ের পথ চির উজ্জ্বল থাকবেই। সৎ ব্যক্তি নৈতিক শক্তির বলে বলীয়ান। পরােপকারই তার জীবনের ভ্ৰত। কখনাে সে অন্যের ক্ষতির চিন্তা করে না। সততায় বিশ্বাসী বলেই সে সমাজের অন্ধ মায়ামোহে পথভ্রষ্ট হয় না, হাজার প্রলােভনে সত্যভ্রষ্ট হয় না। সে লােভী, ঠক ও প্রতারক নয় বলেই জীবনে পাওয়া না-পাওয়ার বেদনায় কখনাে হতাশ হন না। সর্বক্ষণই তার হৃদয়মনে শান্তির পরশ বিরাজ করে।
মানুষের মনুষ্যত্ব বিকশিত হয় সততার গুণে। যে সমাজে সত্য ও সততার মূল্যায়ন নেই, সেই সমাজে মানুষ ও পশুর মধ্যে কোনাে পার্থক্য নেই। সেই সমাজ ক্রমে নানা পাপাচারে অন্ধকারে তলিয়ে যেতে থাকে। সেজন্য সততা ও সত্যবাদিতার অনুশীলন করতে হবে এবং জীবনে তার প্রতিফলন ঘটিয়ে যথার্থ মনুষ্যত্বের অধিকারী হতে হবে।
সমাজে সততাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে মানুষকে নৈতিক বলে বলীয়ান করতে হবে। পরিবার, সমাজজীবন, এমনকী কর্মক্ষেত্রের প্রতিটি পর্যায়ে সৎ ব্যক্তির মূল্যায়ন করতে হবে। সৎ ব্যক্তিকে মূল্যায়ন ব্যতীত কখনাে সমাজ ও জাতীর উন্নয়ন সম্ভব নয়। অসৎ ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সমাজে সৎ ও অসৎ ব্যক্তির পরিণাম যদি দৃষ্টান্ত হয়ে দেখা না দেয়, তবে সে সমাজে কোনাে আদর্শ থাকে না, কোনাে মানদণ্ড থাকে না। অফুরান প্রাণশক্তির আঁধার সম্ভবনাময় যুবসমাজ সৎ মানুষের আচার-ব্যবহার ও কর্মসাধনায় উদ্বুদ্ধ হয় না, অনুপ্রেরণা পায় না। বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে সমাজে আজ সৎ মানুষের প্রয়ােজন খুব প্রকট। তাই আমাদের সকলের প্রয়ােজন সত্যের সাধনা করা।
সততার শত্রু
লােভ ও মিথ্যা সততার সবচেয়ে বড় শত্রু। সীমাহীন উচ্চাকাঙক্ষা, ভােগ-বিলাস, বিবেচনাহীন জৈবিক কামনা মানুষকে অসৎ পথে পরিচালিত করে। পাওয়া না-পাওয়ার দ্বন্দ্বে মানুষ ভুল পথে পা বাড়ায়। হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়ে বিবেকহীন অমানুষে পরিণত হয়। অপরদিকে মিথ্যা হল মানবজীবনের তথা মনুষ্যত্বের অন্তরায়। মিথ্যা মানুষকে অমানুষে পরিণত করে। একটি মিথ্যার আশ্রয় নিতে গিয়ে মানুষ অসংখ্য মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়। মিথ্যা সততার অন্তরায়। তাই এসব বিষয় থেকে নিজেকে দূরে রেখে সত্যের ও সততার চর্চা করতে হবে।
সত্যের জয়
সমাজে সত্যের জয় এবং মিথ্যার পরাজয় নিশ্চিত। স্বার্থান্ধ মানুষ অনেক সময় নিজের সুবিধার জন্যে মিথ্যার আশ্রয় নেয়। নিজের লােভী মন অপরের ক্ষতিসাধনে তৎপর হয়। মিথ্যার ছলনায় মানুষ নিজের স্বার্থ উদ্ধার করে নেয়। আপাতদৃষ্টিতে মিথ্যার জয় প্রতীয়মান হলেও তা স্থায়ী নয়। বরং সত্যের প্রকাশ এক সময় অনিবার্য হয়ে ওঠে এবং পরিণামে সত্যের বিজয় ঘােষিত হয়। সত্য-বিশ্বাসীরা পরম ধৈর্য-সহকারে সত্যের অনুসরণ করে এবং পরিণামে জয়লাভ করে।
অন্যদিকে, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মানুষ ধ্বংসের পথে পরিচালিত হয়। যে অসৎ সে হয়তাে কখনাে কখনাে ভােগে, সম্পদে বিলাসবাসনে অনেক বড়াে হয়ে ওঠে কিন্তু তা ক্ষণিকের। পরিণামে সে অসৎ পথের জন্য অশান্তি ও দুর্ভোগ পােহাতে হয়। পক্ষান্তরে সৎ ব্যক্তি সাময়িক দুঃখ-কষ্টে জীবন অতিবাহিত করলেও ব্যক্তিজীবনে সে সফল ও কৃতকর্মে তৃপ্ত এবং আনন্দ লাভ করে। মহাকাল সৎ পথের যাত্রীদের নামই লিখে রাখে, অসৎ ব্যক্তিদের মহাকালের বুকে ঠাই নেই, তারা নিক্ষিপ্ত হয় ইতিহাসে আস্তাকুড়ে। সততাই সত্য, আসল এবং খাঁটি। এর রূপের কোনাে পরিবর্তন নেই। মিথ্যায় রয়েছে প্রলােভন, ছলচাতুরি। হীরা রং বদল করে না বলেই মূল্যবান, মুক্তো তা করে বলেই তার কম দাম। সত্যই জীবনকে পরিপূর্ণ বিকশিত করে, মিথ্যা জীবনকে পঙ্গু করে দেয়।
সত্যবাদিতার দৃষ্টান্ত
মহামানবগণ সত্যের অনুসরণে তাদের জীবনের মহান সাধনাকে সফল করেছেন। মহৎ ও বরণীয় মানুষ মাত্রই সত্যবাদিতার দৃষ্টান্ত। সত্যবাদিতার জন্য যেমন তারা লক্ষ্য অর্জনে সাফল্য লাভ করেছেন, তেমনি সত্যের বলে বলীয়ান হয়ে তারা প্রবল শত্রুকেও পরাজিত করে নিজেদের প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করেছেন। সর্বকালের মহামানব, মহাপুরুষ, মানব মুক্তির অগ্রদূত হযরত মুহাম্মদ (স.) সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁর সমস্ত জীবন নানা দুঃখকষ্ট সহ্য করে কঠোর সাধনা মগ্ন ছিলেন। সত্যের সাধনায় তিনি ছিলেন অটল-অবিচল। হাজার দুঃখ-যন্ত্রণায়ও তিনি সত্যের পথ থেকে কখনাে বিদ্যুৎ হন নি। সত্যের সাধনার বলেই তিনি সবার কাছে আল-আমিন বিশ্বাসী উপাধিতে ভূষিত হন। সত্যের জন্য ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছেন জিশুখ্রিস্ট। সত্যাশ্রয়ী জোন অব আর্ককে (Joan of Arc) ‘ডাইনি’ বলে মিথ্যা অভিযুক্ত করে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। সত্যকে সমুন্নত রাখতে হেমলক (Hemlock) বিষপানে জীবন দিতে হয়েছে জ্ঞানপ্রেমিক দার্শনিক সক্রেটিসকে (Socrates)। এমনি করে সত্যের সাধনায় মহাপুরুষগণ জীবনকে যেভাবে গৌরবান্বিত করে গেছেন তা মানুষের কাছে মহান আদর্শ হিসেবে যুগ যুগ ধরে প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এঁদের নাম লেখা হয়েছে স্বর্ণাক্ষরে।
উপসংহার
সত্যকে যারা মর্যাদা দেয় না তারা উদার হতে পারে না, তাদের মনে চিরদিন ভয় বিরাজ করে। সত্যবাদিতার মহৎ গুণের অভাবে মানুষের মন সব সময়ের জন্য ছােট হয়ে থাকে। অন্যদিকে, সত্যবাদী মানুষ নির্ভীক হয়, দুর্বার সাহস তার মনে বাসা বাঁধে। সে জন্য সত্যের পথ দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে থাকতে হবে, আর মনে রাখতে হবে কবির অমর বাণী-
Tnx. But aro ektu choto hole valo hoto