এ বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে যা কিছু আছে সবই গতিময়। গ্রহ, তারা, নক্ষত্র, চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী, দিবস-রজনী, দিন, তারিখ, মাস, বছর, সবই গতিময়তারই নামান্তর। কোনাে মানুষ বা প্রাণী এমনকি উদ্ভিদেরও জন্মগ্রহণের পর তার বেড়ে ওঠা, শৈশব, কৈশাের এবং বার্ধক্যে উপনীত হওয়া এর সব কিছুর মধ্যে গতিময়তাই ক্রিয়াশীল। জীবন মানেই গতিশীল। গতিশীলতাই জীবনের ধর্ম। পক্ষান্তরে, কোনাে কিছুর স্থিতিশীলতার অর্থই হলাে মৃত্যু। জীবন পথে চলতে চলতে যখন জীবনের গতি থেমে যায় তখনই তা মৃত্যু ডেকে আনে। একটি বাস, ট্রেন বা আকাশ যান চলতি পথে যদি হঠাৎ থেমে যায় তবে তার অর্থ হলাে গতির পতন। দিন ও রাত্রি উভয়েই যেমন উভয়কে পূর্ণ করে চলেছে তেমনি জীবন মৃত্যুর দোলাতেই গতির ঐশ্বর্য দীপ্যমান হয়ে ওঠে। তাল বিনা সুর যেমন অর্থহীন, আবার সুর বিনা তালও তেমনি নিরর্থক। চলার সময় আমরা এক পায়ে চলি অন্য পায়ে দাঁড়াই। উভয়ে মিলেই গতি। যেমন চলার অঙ্গ পা তোলা পা ফেলা। মৃত্যু ও জীবনকে তাই বলতে পারাে-
তাই বলা যায়, জীবনের মৃত্যু নেই, মৃত্যুই মরে। বীজের মধ্যে প্রাণ এলেই যেমন অঙ্কুর হয়ে সে বীজের আবরণ বিদীর্ণ করে। প্রাণের ধর্মই এই। তেমনি গতিই বিশ্বের শাশ্বত ধর্ম। আর সেই গতির স্থিতিশীলতার অপর নাম জরা বা মৃত্যু।