যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অনেকেই রান্নায় চিনির পরিবর্তে গুড় খাচ্ছেন ডায়াবেটিস থাকলে খাবারে গুড় ব্যবহার করা কি আদৌ ভালো?
বেশিরভাগ ডায়াবেটিস রোগী টাইপ ২ ডায়াবেটিসে ভোগেন। ফলে একের পর এক রোগ শরীরে বাসা বাঁধে একাধিক জটিল রোগ দেখা দেয়। শারীরিক পরিশ্রম কম করা, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রার কারণে অল্প বয়সেই শরীরে ডায়াবেটিসের মতো রোগ বাসা বাঁধছে। চিকিৎসকরা বলছেন, জীবনযাত্রায় একটু পরিবর্তন আনলেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বিশেষ করে খাবারের প্রতি বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে।
গুড় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। |
অনেকেই মনে করেন অতিরিক্ত চিনি খেলে ডায়াবেটিস হতে পারে। কিন্তু বিষয়টি সঠিক নয়। তবে একবার কারো শরীরে এই রোগ বাসা বেঁধে গেলেই চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবারের ইতি টানতেই হবে। এটা পুরোপুরি বন্ধ করতে পারলে খুব ভালো হয়। অনেকেই আছেন যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ায় রান্নায় চিনি খাওয়া বন্ধ করলেও এর বদলে গুড়ের বা আখের গুড় খাচ্ছেন ডায়াবেটিস রোগীদের খাবারে গুড় ব্যবহার করা কি আদৌ ভালো?
গুড় প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি এক ধরনের মিষ্টি। এটি সাধারণত খেজুরের রস বা আখের রস দিয়ে তৈরি করা হয়। গুড়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যেমন পটাসিয়াম, আয়রন এবং ক্যালসিয়াম। তবে এর মানে এই নয় যে গুড় খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর। যদিও গুড়ে আয়রন থাকে যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, তবুও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি এড়িয়ে চলাই উত্তম। 100 গ্রাম গুড়ে 363 ক্যালরি, 75 থেকে 85 শতাংশ সুক্রোজ এবং 10 থেকে 15 শতাংশ ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ থাকে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গুড় খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। অনেকে মনে করেন চিনির পরিবর্তে গুড় খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটা ঠিক না। বরং গুড়ের সুক্রোজ চিনির মাত্রা বাড়ায়। এ কারণে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিনির মতোই ক্ষতিকর। ডায়াবেটিস রোগীদের তাদের খাদ্যতালিকায় কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। গুড়ের জিআই মাত্রা অনেক বেশি। গুড় খেলে তাৎক্ষণিকভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। একজন ডায়াবেটিস রোগীর প্রতিদিনের খাবারে গুড় থাকলে কিডনির সমস্যা, হার্টের সমস্যা এমনকি শরীরের অন্যান্য অংশও বিকল হতে পারে।