কালাে আর ধলো বাহিরে কেবল
ভিতরে সবারই সমান রাঙ্গা।
মূলভাব
নানান কারণে এ পৃথিবীতে মানুষে মানুষে পার্থক্য লক্ষ করা যায়। এ পার্থক্যকে কেন্দ্র করেই বিরাজ করে বিদ্বেষ। অথচ বাইরে এত পার্থক্য থাকলেও সবার শরীরেই প্রবাহিত হয় একই লাল রক্ত।
সম্প্রসারিত ভাব
পৃথিবীর সব মানুষই সৃষ্টির দিক থেকে এক ও অভিন্ন। সারা পৃথিবীর মানুষ এক মানবজাতির সদস্য, সবাই সৃষ্টির সেরা। প্রত্যেকের ধমনিতেই বইছে একই লাল রক্ত। কিন্তু এ সত্যটি উপেক্ষা করে কেউ কেউ নিজেদেরকে অভিজাত ভাবে। ফলে সারা পৃথিবীজুড়ে আজ চলছে জাতিতে জাতিতে বিদ্বেষ, ধর্মে-ধর্মে সংঘাত, বর্ণ-গােত্রের বাছবিচার, যেগুলাে মানুষকে পরস্পরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। এক আদম-হাওয়ার সন্তান আমরা সবাই। অথচ আমাদের মাঝে আজ কত বিভক্তি। শ্বেত বর্ণধারীরা ঘৃণা করে কালাে বর্ণধারীদের। ধনী এবং অভিজাত শ্রেণির মানুষেরা ঘৃণা করে বিত্তহীন মানুষদের। প্রতিহিংসার উন্মাদনায় আক্রান্ত হয়ে এক মানুষ অবলীলায় কেড়ে নিচ্ছে আরেক মানুষের প্রাণ। সাম্রাজ্যবাদী রাজশক্তি নিজের ক্ষমতা বাড়াতে ব্যবহার করছে আধুনিক মারণাস্ত্র। শােষিত, বঞ্চিত মানুষের আহাজারিতে ভারী হচ্ছে আকাশ-বাতাস।
একদিকে দারিদ্র্যপীড়িত মানুষ ভাগ্যকে সম্বল করে অনাহারে বেঁচে আছে; অন্যদিকে সম্পদশালীরা দিনদিন তাদের বিত্ত-বৈভবের পরিমাণ বাড়িয়ে চলেছে। সম্পদের সুষম বণ্টনের অভাবে পৃথিবীর এক অংশের মানুষ ক্ষুধা, দারিদ্র্য আর অপুষ্টির শিকার, আরেক অংশের মানুষ সম্পদের পাহাড় গড়ে সাধারণ মানুষকে শােষণ করে চলেছে। অসহায় মানুষদের কথা তারা চিন্তা করে না। তারা একবারও ভাবে না নিগৃহীত মানুষেরা তাদের মতােই রক্ত-মাংসের মানুষ। সবার দেহে একই বর্ণের রক্তধারা, শারীরিক গঠন কাঠামােও একই ধরনের। বাইরে আমাদের মধ্যে নানা ব্যবধান রচিত হলেও আমরা একই উৎস থেকে সৃষ্টি ।
মন্তব্য
সবচেয়ে বড় কথা হলাে পৃথিবীর সকল মানুষের বড়াে পরিচয় সবাই মানুষ। সকলের দেহে একই লাল রক্ত বিদ্যমান রয়েছে। সুতরাং মানুষে মানুষে বৈষম্য করা একেবারেই অনুচিত।