![]() |
source: istockphoto |
ঘুম মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের এক অশেষ রহমত। আল্লাহ্ দিনকে দিয়েছেন কাজের জন্য আর রাতকে দিয়েছেন বিশ্রামের জন্য। মূলত এক একপ্রকার মৃত্যুর মতই। আমারা আল্লাহ্র হুকুমেই ঘুমিয়ে পড়ি আরা আল্লাহ্র হুকুমেই আবার জেগে উঠি।
আসুন জেনে নেই কুরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে ঘুমানোর যিকিরসমুহ ।
(১) ওযু করাঃ ঘুমানোর আগে পাক পবিত্র হাওয়া অর্থাৎ ওযু করা ছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ। ওযু করলে আল্লাহ্ বান্দার গুনাহ মাফ করে দেন। সুতরাং আমাদের উচিত বেশি থেকে বেশি ওযু করা। তাছাড়া ওযু করলে শরীর পরিষ্কার পরিছন্ন থাকে। আর পরিষ্কার পরিছন্নতা হল ঈমানের অর্ধেক। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তুমি বিছানা গ্রহণ করবে, তখন নামাযের মত ওযু করবে, তারপর তোমার ডান পার্শ্বদেশে শুয়ে পড়বে। তারপর বল, ( আল-হাদীস।)
(২) সূরা ইখলাস , সূরা ফালাক, সূরা নাস পাঠ করাঃ দুই হাতের তালু একত্রে মিলিয়ে একবার সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করে তাতে ফুঁ দিয়ে তারপর দুই হাতের তালু দ্বারা দেহের যতোটা অংশ সম্ভব মাসেহ করবে। মাসেহ আরম্ভ করবে তার মাথা, মুখমণ্ডল ও দেহের সামনের দিক থেকে। (এভাবে ৩ বার করবে)। বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ৯/৬২, নং ৫০১৭; মুসলিম ৪/১৭২৩, নং ২১৯২।
(৩) আয়াতুল কুরসী পাঠ করাঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: যে কেউ যখন রাতে আপন বিছানায় যাবে এবং আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে, তখন সে রাতের পুরো সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য হেফাযতকারী থাকবে; আর সকাল হওয়া পর্যন্ত শয়তান তার নিকটেও আসতে পারবে না। বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ), ৪/৪৮৭, নং ২৩১১।(৪) সূরা আল-বাকারা শেষ দুই আয়াতঃ সূরা আল-বাকারা ২৮৫-২৮৬ আয়াত পাঠ করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি রাতের বেলা সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পড়বে, তা তার জন্য যথেষ্ট হবে। বুখারী, ফাতহুল বারীসহ, ৯/৯৪, ৪০০৮; মুসলিম ১/৫৫৪, নং ৮০৭।
(৫) বিছানা ঝেড়ে নেওয়াঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তোমাদের কোনো ব্যক্তি তার বিছানা ত্যাগ করলো, আবার ঘুমাতে ফিরে এলো সে যেনো তার চাদর বা লুঙ্গির আঁচল দিয়ে তিনবার বিছানাটি ঝেড়ে নেয়। আর যেন সে বিসমিল্লাহ পড়ে, (আল্লাহর নাম নেয়); কেননা সে জানে না যে, তার চলে যাবার পর এতে কী পতিত হয়েছে। তারপর সে যখন শোয়, তখন যেনো এ দো‘আটি বলে।
(৬) ডান পাশ হয়ে ঘুমানোঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন তাঁর ডান হাত তাঁর গালের নীচে রাখতেন, তারপর এ দো‘আটি বলতেন –
অতঃপর বলতেন
(৭) সুবহা-নাল্লাহ, আলহামদুলিল্লা-হ, আল্লা-হু আকবার বলাঃ সুবহা-নাল্লাহ (আল্লাহ অতি-পবিত্র) ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লা-হ (সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য) ৩৩ বার এবং আল্লা-হু আকবার (আল্লাহ অতি-মহান) ৩৪ বার বলা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী এবং ফতেমাকে বলেন: আমি কি তোমাদেরকে এমন কিছু বলে দিবো না যা তোমাদের জন্য খাদেম অপেক্ষাও উত্তম হবে? যখন তোমরা তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন তোমরা দু’জনে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদু লিল্লাহ, এবং ৩৪ বার আল্লা-হু আকবার বলবে, যা তা খাদেম অপেক্ষাও তোমাদের জন্য উত্তম হবে’’। বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ)
(৮) সূরা সাজদা এবং সূরা মুলক পাঠ করাঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা সাজদা এবং সূরা মুলক না পড়ে ঘুমাতেন না।
প্রিয় পাঠকগণ আশা করছি লিখাটি আপনাদের ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আমকে কমেন্ট করে জানাবেন এবং আমাকে অনুপ্রেরণা দিবেন। লিখাটি বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে আপনিও সওয়াবের ভাগিদার হবেন এই আশা করছি।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
