Uncategorized

“বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা” এসএসসি ২০২১ প্রথম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর

Rate this post

"বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা" এসএসসি ২০২১ প্রথম  সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর

এসএসসি (SSC) ২০২১ সালের “বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা”  প্রথম  সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর। 

নির্ধারিত কাজ

নমুনা উত্তর

বর্তমানের সকল বিষয়ে অতীতের ক্রমবিবর্তন অতিভুজের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। মানব সমাজ ও সভ্যতার বিবর্তনে সত্যনির্ভর বিবরণ হচ্ছে ইতিহাস। ইতিহাসকে ভিত্তি করে সভ্যতার বিকাশ সূচিত হয়েছে।

ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ব্যাখ্যা

‘ইতিহাস’ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ‘ইতিহ’ শব্দ থেকে যার অর্থ ‘ঐতিহ্য’। ইতিহাস ও ঐতিহ্য শব্দটি একে অন্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যেমন অতীতের শিক্ষা, ভাষা, সাহিত্য-সংস্কৃতিকে ঐতিহ্য বলা হয়। আর ইতিহাস হাজার বছরে ধরে লালন করা ঐতিহ্যকে পৌঁছে দেয় এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে। অতীতের ক্রমবিবর্তন ও ঐতিহ্যের বস্তুনিষ্ঠ বিবরণের মাধ্যমে বর্তমান ও অতীতের মধ্যে মিলন্ধন করে দেয় ইতিহাস। তাই “ইতিহ + আস” সন্ধি বিচ্ছেদ দিয়ে ইতিহাসকে সংজ্ঞায়িত করা দুরূহ কাজ। তাও ঐতিহাসিক ড. জনসন ছোট একটি লাইনে ইতিহাসকে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে বলছেনঃ

যা কিছু ঘটে তাই ইতিহাস।

ইতিহাস রচনার উপকরণ ও প্রকারভেদের ব্যাখ্যা

 ঐতিহাসিক ঘটনাকে সত্যে রুপদানের জন্য প্রয়োজন তথ্য ও প্রমাণের। তথ্য ও প্রমাণের উপর ভিত্তি করে ইতিহাসের উপাদানকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

  • (ক) লিখিত উপাদানঃ ইতিহাস রচনার নির্ভুল ও নির্ভরযোগ্য উপাদান হচ্ছে লিখিত উয়াপাদান। ইতিহাস রচনায় লিখিত উপাদানের মধ্যে রয়েছে সাহিত্য,সংস্কৃতি,সমাজ, অর্থনীতি, রাজনৈতিক, ধর্ম, আচার-অনুষ্ঠান, বৈদেশিক বিবরণ, দলিলপত্র ইত্যাদি। 
  • (খ) অলিখিত উপাদানঃ বিভিন্ন সময়ের বস্তু, স্থান, মুদ্রা, শিলালিপি, স্থাপত্য ইত্যাদি থেকেও ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায়। এসব উপাদানকে বলা হয় অলিখিত বা প্রত্নতত্ত্ব উপাদান।
মানব সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে সম্প্রসারিত হয়েছে ইতিহাসের পরিসর। তাই ইতিহাসকে বিভিন্ন শাখায় ভাগ করা কঠিন। আলোচনা ও গবেষণা কর্মের সুবিধার্থে ইতিহাস কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
  • (ক) ভৌগলিক অবস্থান ইতিহাসঃ যে বিষয়টি ইতিহাসে স্থান পেয়েছে তা স্থানীয়, জাতীয় নাকি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে রচিত তা ভৌগলিক অবস্থানগত ইতিহাস এর মাধ্যমে জানা যায়। ভৌগলিক অবস্থান ইতিহাসেরও আবার তিনটি শাখা রয়েছে। যেমনঃ আঞ্চলিক ইতিহাস, জাতীয় ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক ইতিহাস।
  • (খ) বিষয়বস্তুগত ইতিহাসঃ কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে যে ইতিহাস রচিত হয় তাকে বিষয়বস্তুগত ইতিহাস বলে। বিষয়বস্তুগত ইতিহাসকে আবার পাঁচভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ রাজনৈতিক ইতিহাস, সামাজিক ইতিহাস, অর্থনৈতিক ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ইতিহাস ও সম্প্রসারিত ইতিহাস।

ইতিহাসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা

ইতিহাস শুধু ঘটনা সমষ্টি নয় বরং ঘটনার অন্তরালে থাকা পরিস্থিতি বিশ্লেষণও ইতিহাসের অন্তর্ভুক্ত। ইতিহাসের অন্যতম বিষয়বস্তু হল মানব সমাজ সভ্যতা বিকাশের ধারাবিবরণী। অর্থাৎ মানুষের আদিম সভ্যতা ও ক্রমবিকাশ ইতিহাসের অন্তর্ভুক্ত বিষয়। এক সময় মানুষ ছিল গুহাবাসী। তাদের জীবিকা নির্বাহের উপায় ছিল পশু শিকার করা, মাছ ধরা, ফলমূল সংগ্রহ এরপর ধীরে ধীরে তার জীবিকার ধরন বদলাতে থাকে। একসময় যাযাবর মানুষ কৃষিজীবী মানুষের পরিণত হয়। একই স্থানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। কৃষি সভ্যতার সঙ্গে সঙ্গে গড়ে উঠতে থাকে নগর সভ্যতা। এসব পরিবর্তনে বিবরণ ইতিহাসের বিষয়বস্তু। মানুষের গুরুত্বপূর্ণ অর্জন যা মানব  সমাজ সভ্যতার উন্নতি অগ্রগতিতে অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে তার সব ইতিহাস ভুক্ত বিষয়। যেমনঃ   শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, দর্শন,  স্থাপত্য রাজনীতি, যুদ্ধ, ধর্ম, আইন প্রভৃতি বিষয়ে সামগ্রিকভাবে যা কিছু সমাজ সভ্যতা বিকাশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করেছে তা ইতিহাসের বিষয়বস্তু। 

মানবজীবনে ইতিহাস চর্চার প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ

ইতিহাস মানুষকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শিক্ষা দান করে। অতীতের নানামুখী ঘটনা মানুষ কি দৃষ্টিভঙ্গিতে বর্তমানে বিচার করবে ইতিহাস সে বিষয়ে মানুষের কর্মপন্থা নির্ধারণ শিক্ষা দিয়ে থাকে। মানব সমাজ ও বিবর্তনের সত্যনির্ভর বিবরণ হচ্ছে ইতিহাস। যে কারণে জ্ঞানচর্চার শাখা হিসেবে ইতিহাসের গুরুত্ব অসীম। ইতিহাস পাঠের ফলে মানুষের পক্ষে নিজে ও নিজ দেশ সম্পর্কে মঙ্গল-অমঙ্গল এর পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব। সুতরাং দেশ ও জাতির স্বার্থে এবং ব্যক্তি প্রয়োজনে ইতিহাস পাঠ অত্যন্ত জরুরী।

  • অতীতে সত্যনিষ্ঠ বর্ণনা মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর বিবরণ যদি হয় নিজ দেশ জাতির সফল সংগ্রাম গৌরবময় অতীতের তাহলে তা মানুষকে দেশপ্রেমে উৎসাহিত করে।
  • ইতিহাস পাঠের চর্চা মানুষকে আত্মপ্রত্যয়ী ও আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করে।
  • ইতিহাস জ্ঞান মানুষকে সচেতন করে তোলা। বিভিন্ন মানব গোষ্ঠীর উত্থান-পতন এবং সভ্যতার বিকাশ ও পতনের কারণগুলো জানতে পারলে মানুষ ভালো-মন্দের পার্থক্যটা সহজেই বুঝতে পারে। ফলে সে তার কর্মের পরিণতি সম্পর্কে সচেতন থাকে।
  • ইতিহাস এর ব্যবহারিক গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষ ইতিহাস পাঠ করে অতীত ঘটনাবলীর দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা নিতে পারে। 
  • ইতিহাস দৃষ্টান্তের মাধ্যমে শিক্ষা দেয় বলে ইতিহাস কে বলা হয় শিক্ষণীয় দর্শন।
  • মানুষ কৌতুহলী প্রিয়। মানুষ তার অতীত ঘটনা নিয়ে জানতে চায়। ইতিহাস পাঠ করার মাধ্যমে অতীতকে জানা সম্ভব।
  • সত্যনিষ্ঠ ইতিহাস পাঠ করে যে জ্ঞান লাভ করা হয় তা বাস্তব জীবনে চলার জন্য উৎকৃষ্টতম শিক্ষা। ইতিহাস পাঠ করলে বিচার-বিশ্লেষণে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে সাহায্য করে । ফলে জ্ঞানচর্চার প্রতি আগ্রহ জন্মে।
ইতিহাস হল অতীত কালের ঘটনা ধারাবাহিক বর্ণনা। ইতিহাসের মূল উপজীব্য হল মানুষ ও তার কর্মকাণ্ড। ইতিহাস পাঠ করলে কেবল আমরা অতীতে অবস্থানকেই  জানতে পারি না, সেই সাথে আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতকে গড়তে পারি। সর্বোপরি ইতিহাস পাঠ মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম এবং জাতীয়তাবোধের জন্ম দেয়।


এসএসসি ২০২১ সকল অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

One Comment

মন্তব্য করুন

Back to top button