পশ্চিম-পাকিস্তানি শাসকেরা কখনই বাঙালিকে আপন করে নিতে পারেনি। ফলে বাঙালিদের সহ্য করতে হয়েছে নিদারুন বৈষম্যের তীব্র আঘাত।এতো আঘাতের পরেও মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি পেলো এক নতুন রাষ্ট্র “বাংলাদেশ”
নিচে পূর্ব-পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম-পাকিস্তানের যে সব বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছিল তার একটি চিত্র তুলে ধরা হলো:
১. রাজনৈতিক বৈষম্যঃ
পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড় যে বৈষমটি ছিল তা হলো রাজনৈতিক বৈষম্য। সেই সময়ে বাঙালিরা বৈষম্যের স্বীকার হয়। আর এর সূত্রপাত হয় ঢাকাকে রাজধানী না করে করাচিকে করার মধ্যমে। সংখ্যাগরিষ্ট বাঙালিকে এইভাবেই কোনঠাসা করেছিল পশ্চিম পাকিস্তানরা। এতেও ক্ষান্ত হয় নি, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ট হাওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদ ও মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে বাঙালিদের আসন কম দেওয়া হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয় লাভ করলেও তাদেরকের সরকার গঠন করতে দেওয়া হয় নি।
২. প্রশাসনিক বৈষম্য:
রাজনৈতিক বৈষ্যমের পর প্রশাসনিক বৈষম্য যেন মাথাচড়া দিয়ে উঠেছিল। বাঙালিদের সংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ন্যায্য পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়। গোটা প্রশাসনই ছিল পশ্চিম-পাকিস্তানের হাতে। সংবিধানকে উপেক্ষা করে বাঙালিদের মৌলিক অধিকার হরণ করতো পশ্চিম-পাকিস্তানের শোষকেরা।
৩. সামরিক ক্ষেত্রে বৈষম্য :
সেই সময়ে সামরিক খাতে যেই বাজেট হতো তার সিংহভাগ ব্যয় করা হতো পশ্চিম-পাকিস্তানে। এখানেও পূর্ব-পাকিস্তনকে পরতে হয়েছিল বৈষম্যের কবলে। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীতে পূর্ব-পাকিস্তনকে দেওয়া হতো কম মর্যাদার পদগুলো। সামরিক বাহিনীতে খুব কম সংখ্যক বাঙালি ছিল অফিসার পদে।
৪. অর্থনৈতিক বৈষম্য :
পূর্ব-পাকিস্তান চরমভাবে যে বৈষম্যের শিকার হয়েছিল তা হলো অর্থনৈতিক বৈষম্য। কেন্দ্রীয় সরকার সব ক্ষমতার অধিকারী থাকার কারনে কেন্দ্রীও ব্যাংক, বীমাসহ অধিকাংশ শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রধান অফিস ছিল পশ্চিম-পাকিস্তানে। বৈদেশিক মুদ্রা পূর্ব-পাকিস্তন বেশি আয় করা সত্ত্বেও ২১ ভাগের বেশি পূর্ব-পাকিস্তানকে দেওয়া হতো না। বৈদেশিক সহায়তাও পেতো শতকরা ২০ ভাগ অন্যদিকে পশ্চিম-পাকিস্তানে ৮০ ভাগ। খুব কম শতাংশ ব্যায় (২০০০ কোটি) করা হতো পূর্ব-পাকিস্তানের উন্নয়নের জন্য অপরদিকে পশ্চিম-পাকিস্তানের উন্নয়ন ছিল চোখে পরার মতো। রপ্তানি আয়ের ২০০০ মিলিয়ন ডলার পূর্ব-পাকিস্তান থেকে পশ্চিম-পাকিস্তানে পাচার করা হয়েছিল। মোট কথা পূর্ব-পাকিস্তান খুবই নিষ্ঠুরভাবে পূর্ব-পাকিস্তানদের উপর অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করেছিল।
৫. সাংস্কৃতিক বৈষম্য : রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামরিক, অর্থনৈতিক বৈষমতেও পশ্চিম-পাকিস্তানের শোষকেরা তুষ্ট হয়নি। বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার খেলায় মত্ত হয়ে উঠলো। ১৯৪৮ সালে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিলো পাকিস্তান সরকার। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনে বাঙালি তাদের মুখের ভাষা ফিরে পেলেও পশ্চিম-পাকিস্তানের ভাষার বিরুদ্ধে চক্রান্তের জালবুন থেকে থাকেনি। এতই কঠোরতা ছিল যে রেডিও টিভিতে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রচার এবং নববর্ষ উদযাপন নিষিদ্ধ ছিল।
সুকরিয়া সুকরিয়া অনেক ভালো হলো প্রশ্নের উত্তর টা পেয়ে। তবে আরেকটা প্রশ্নের উত্তর লাগতো,,বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র ধর্ম ভাষা ও উৎসবের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
সুকরান সুকরান
Keu ki 2nd question er ans ta dite parbe?
Eta amaro lagto
নিজে লিখতে পারো না তাই অন্যেরটা কপি করে খুশি হলে