বাংলা রচনা

জগদীশ চন্দ্র বসু – রচনা

4.3/5 - (280 votes)

জগদীশ চন্দ্র বসু – রচনা

বিজ্ঞান প্রাচ্যেরও নহে, পাশ্চাত্যেরও নহে, ইহা বিশ্বজনীন৷ – জগদীশ চন্দ্র বসু

ভূমিকা

জগদীশ চন্দ্র বসু আমেরিকান পেটেন্ট প্রাপ্ত ভারতের প্রথম বিজ্ঞানী। যাঁদের অবদান আধুনিক বিজ্ঞানকে এমন উৎকর্ষের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে তাঁদের মধ্যে বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসুর নাম সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত। তিনি ছিলেন উপমহাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিজ্ঞানী। তার হাত ধরে ভারতীয় উপমহাদেশে গবেষণাধর্মী বিজ্ঞানের সূচনা হয়। জগদীশচন্দ্র বসু সর্বপ্রথম প্রমাণ করেছিলেন যে উদ্ভিদেরও প্রাণ রয়েছে এবং তারা উত্তেজনাই সারা দেয়। একারনেই সবাই তাকে উদ্ভিদ বিজ্ঞানী বলে চিনে থাকে। তিনি যে শুধু উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ছিলেন এমনটা নয়, এছাড়াও তিনি একজন মহান পদার্থবিদ, জীববিজ্ঞানী, বহুশাস্ত্র, এবং প্রত্নতাত্ত্বিক ছিলেন। মহান প্রতিভাধর এই বিজ্ঞানীকে রেডিও বিজ্ঞানের একজন জনক হিসেবে অভিহিত করা হয়।

জন্ম ও শৈশবকাল

জগদীশ চন্দ্র বসু ৩০ নভেম্বর ১৮৫৮ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি পূর্বপ্রান্তে বা অধুনা বাংলাদেশের অন্তর্গত ময়মনসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জগদীশচন্দ্র বসুর পূর্বপুরুষ বাস করতেন মুন্সীগঞ্জ জেলার রাড়িখাল গ্রামে।

পারিবারিক জীবন

জগদীশ চন্দ্র বসুর বাবার নাম ভগবান চন্দ্র বসু এবং মাতার নাম ছিল বামা সুন্দরী দেবী। ভগবান চন্দ্র বসু ব্রাহ্ম ধর্মাবলম্বী ছিলেন এবং ফরিদপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার পূর্বে তিনি ১৮৫৩ থেকে ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ভগবান চন্দ্র এই স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন। মাতা বামা সুন্দরী দেবী গৃহিণী ছিলেন।

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা জীবন

ভগবান চন্দ্র ইংরেজ সরকারের অধীনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও জগদীশ চন্দ্র বসুকে ইংরেজি স্কুলে ভর্তি করান নি। কারণ তিনি মনে করতেন ইংরেজি শিক্ষার পূর্বে এদেশের ছেলে-মেয়েদের মাতৃভাষা সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। এই মানসিকতার প্রেক্ষিতে ছেলে জগদীশচন্দ্র বসুকে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল ভর্তি করিয়ে দেন। ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকেই জগদীশচন্দ্র বসুর শিক্ষাজীবন শুরু হয়।

পিতা ভগবানচন্দ্র ডেপুটি মেজিস্ট্রেট বদলির চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জেলায় তাকে বদলি করা হতাে । যেখানেই যান সেখানকার স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করে দেন । গ্রামের পাঠ শেষ করে কলকাতায় এসে হাইয়ের স্কুলে ভর্তি হন। ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। কলেজের পাঠ শেষ করে তিনি আইসিএস পরীক্ষায় বসার জন্য ইংল্যান্ডে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। প্রথমে ভগবান চন্দ্র এতে রাজি না হলেও পরবর্তীতে বাবার ইচ্ছাতে ১৮৮০ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞান পাঠের উদ্দেশ্যেই লন্ডনে পাড়ি জমান। বিশেষ শারীরিক অসুস্থতার কারণে পড়াশুনা বেশিদিন করতে পারেন নি। তাই তিনি ১৮৮২ সালের জানুয়ারিতে লন্ডন ত্যাগ করেন এবং তার ভগ্নিপতি আনন্দমোহন বসুর কথা মতন প্রকৃতিবিজ্ঞান সম্বন্ধে শিক্ষালাভের উদ্দেশ্যে কেমব্রিজের ক্রাইস্ট কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি ক্রিস্ট কলেজে ভর্তি হন এবং প্রাকৃতিক বিজ্ঞান অধ্যয়ন শুরু করেন। এখান থেকে ট্রাইপস পাশ করেন। ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি পাঠ সম্পন্ন করে দেশে ফিরে আসেন।

বৈবাহিক জীবন

১৮৮৭ সালে ২৯ বছর বয়সে জগদীশচন্দ্র বসু অবলা বসুর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। অবলা বসু ভারতীয় সমাজ সংস্কারিকা ছিলেন, যিনি নারী শিক্ষার প্রসার ও বিধবাদের জীবনযাপন উন্নত করার চেষ্টার জন্য পরিচিত। অবলা বসু বিখ্যাত ব্রাহ্ম সমাজ সংস্কারক দুর্গামোহন দাশের কন্যা ছিলেন। বিবাহের সময় জগদীশচন্দ্র বসু আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় তাদেরকে আর্থিক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কারণ জগদীশের বাবার কিছু ঋণ ছিল যা জগদীশ ও অবলা উভয় মিলে পরিশোধ করে। তাছাড়া সে সময় তিনি কলেজ থেকে বেতন নিতেন না।

অবলা বসু
অবলা বসু

অধ্যাপনা জীবন

লন্ডন থেকে দেশে আসার পর ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে জর্জ রবিনসন এর অনুরোধে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক নিযুক্ত করেন। সে সময় কলেজের অধ্যক্ষ চার্লস হেনরি টনি জগদীশচন্দ্র বসুর নিয়োগের বিপক্ষে ছিলেন। প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা করাটা বসুর জন্য সুখকর ছিল না। গবেষণার জন্য তাকে কোন রকম সুবিধা দেওয়া হত না সেই সাথে বেতনও দেওয়া হত অর্ধেক। এর প্রতিবাদে তিনি টানা তিন বছর কলেজ থেকে বেতন নেওয়া বন্ধ করে দেন। প্রতিবাদের ফলস্বরূপ তার বেতন ইউরোপীয়দের সমতুল্য করা হয় এবং গবেষণার জন্য ২৪ বর্গফুট ছোট একটি ঘর তাকে দেওয়া হয়।

প্রেসিডেন্সি কলেজে গবেষণার জন্য তেমন কোন সুযোগ সুবিধা না থাকা সত্ত্বেও বসুর গবেষণা কার্য থেমে থাকেনি। অধ্যাপনার প্রথম আঠারো মাসে জগদীশ যে সকল গবেষণা কাজ সম্পন্ন করেছিলেন তা লন্ডনের রয়েল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হয়। ১৮৯৬ সালের মে মাসে তাকে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় ডিএসসি ডিগ্রি প্রদান করে। জগদীশচন্দ্র বসু ১৯১৫ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপনা থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

বিজ্ঞান চর্চায় জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান

বাবার ইচ্ছাতেই বাংলা স্কুলে ভর্তি হওয়া এরপর লন্ডনে পাড়ি জমানো ছেলে জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞান চর্চায় অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একজন সফল বিজ্ঞানী হিসেবে। কলেজে অধ্যাপনা করতে এসে হলেন বৈষম্যের স্বীকার। কোনরকম কোণঠাসা রুমে চালাতেন গবেষণা কার্য। আর অর্থ সংকটওতো আছেই। তার গবেষণা কর্ম লন্ডনের রয়েল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হওয়ার পর ইংল্যান্ডের লিভারপুলে বক্তৃতা দেয়ার জন্য ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।

বেতার তরঙ্গ সম্পর্কিত গবেষণা

জগদীশচন্দ্র বসুর অসংখ্য গবেষণার মধ্যে অন্যতম গবেষণা হল বেতার তরঙ্গ সম্পর্কিত গবেষণা। কলেজে অধ্যাপনার ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় দিয়েছিলেন বেতার তরঙ্গে। তিনি বিনা তারে রেডিও সংকেত পাঠানাের যন্ত্র তৈরি করেছিলেন। সে সময়ে তারের মাধ্যমে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় শব্দ পাঠানাে যেত। ১৮৯৫ সালে তিনি প্রথমবারের মতাে বিনা তারে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় শব্দ পাঠাতে সক্ষম হন। তিনি সর্বপ্রথম প্রায় ৫ মিলিমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট তরঙ্গ তৈরি করেন। এ ধরনের তরঙ্গকেই বলা হয়ে অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গ বা মাইক্রোওয়েভ। আধুনিক রাডার, টেলিভিশন এবং মহাকাশ যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই তরঙ্গের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মূলত এর মাধ্যমেই বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ তথ্যের আদান প্রদান ঘটে থাকে।

উদ্ভিদ সংক্রান্ত গবেষণা

ছোটবেলা থেকেই জগদীশচন্দ্র বসুর প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল। প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা করার সময়, তিনি উদ্ভিদ পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে, ক্রেসকোগ্রাফ একটি বিশেষ যন্ত্র আবিষ্কার করেন। এই যন্ত্রটি দ্বারা দীর্ঘ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে, জগদীশ চন্দ্র বসু প্রমাণ করেন যে গাছেরও প্রাণ আছে, তারাও উদ্দীপনায় সাড়া দেয়; তাদেরও আছে সুখ-দুঃখ, বেদনা, আবেগ ইত্যাদি।

স্বদেশপ্রেমী

গবেষণার কাজে নানা দেশে পাড়ি জমালেও নিজ দেশের প্রতি বসুর ছিল অকৃত্রিম ভালবাসা। স্বদেশের টান তিনি সবসময় উপলব্ধি করতেন। স্বদেশপ্রেম ছিল বলেই বাবার কথায় বাংলা মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। একজন অধ্যাপক হিসেবে তিনি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন শিক্ষার আলো ছাড়া এই দেশের মুক্তি সম্ভব নয়। দেশ ও বিদেশে ভারতবর্ষ সম্পর্কিত তার বিভিন্ন বক্তৃতায় এই দৃষ্টিভঙ্গিই প্রতিফলিত হয়। তিনি সবসময় চাইতেন ভারতবর্ষে শিক্ষার আলো উম্মোচিত হোক। বৈজ্ঞানিক গবেষণা কার্যকে ত্বরান্বিত করতে ১৯১৭ সালে ভারতে বসু বিজ্ঞান মন্দির (বোস ইনস্টিটিউট) স্থাপন করে। এটি ভারতের প্রাচীনতম এবং অন্যতম প্রধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি।

বসু বিজ্ঞান মন্দির
বসু বিজ্ঞান মন্দির

সাহিত্যে জগদীশচন্দ্র বসু

জগদীশচন্দ্র বসু শুধু একজন বিজ্ঞানী ছিলেন না, সাহিত্য সাধনায়ও বেশ পটু ছিলেন। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জগদীশচন্দ্র বসু খুব ভালো বন্ধু ছিলেন। জগদীশ চন্দ্র বসুর সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার পরিচয়সূত্র ধরে তাদের মধ্যে সম্পর্কের শুরু। রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘পিতৃস্মৃতি’ গ্রন্থের ‘আচার্য জগদীশচন্দ্র আমার বাল্যস্মৃতি’ প্রবন্ধে তাদের বন্ধুতের কথা তুলে ধরেছেন। রবীন্দ্রনাথের আরোও অনেক লেখায় জগদীশচন্দ্র বসুর নাম উল্লেখ করেছেন। জগদীশ চন্দ্র বসু তার বিজ্ঞানকর্ম দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে প্রভাবিত করেছিলেন। ঠিক তেমনি রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরনায় বসুও অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।

শুধু বিজ্ঞান নয়, বাংলা ভাষায় প্রথম কল্পকাহিনির লেখকও ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু। তাঁর লেখা সায়েন্স ফিকশান ‘নিরুদ্দেশের কাহিনি’ প্রথম ‘কুন্তলীন পুরষ্কার’ লাভ করেছিল। শিশুকিশোরদের জন্য বেশ কিছু বিজ্ঞান-প্রবন্ধ লিখেছিলেন জগদীশচন্দ্র যার সাহিত্য-মূল্যও অনেক। জগদীশচন্দ্র বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সভাপতিও ছিলেন কয়েক বছর। বাংলায় বিজ্ঞান-সাহিত্যে জগদীশচন্দ্রের অবদান ঐতিহাসিক।

‘অব্যক্ত’ বসুর লেখা একটি বিখ্যাত বইয়ের নাম। এছাড়াও তিনি বেশ কিছু ইংরেজি রচনাবলীও লিখেছেন। যেমনঃ Plant Responses as a Means of Physiological Investigations (১৯০৬), Motor Mechanism of Plants (১৯২৮), Growth and Tropic Movement in Plants (১৯২৯)

সম্মান ও পুরস্কার

সমগ্র জীবনব্যাপী মহান সব কর্মের জন্য জগদীশচন্দ্র বসু অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছিলেন। স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর উদ্দেশে মহান বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন – “জগদীশচন্দ্র যেসব অমূল্য তথ্য পৃথিবীকে উপহার দিয়েছেন তার যে কোনটির জন্য বিজয়স্তম্ভ স্থাপন করা উচিত।”

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জগদীশ চন্দ্র বসু সম্পর্কে লিখেছেন, ‘স্যার জগদীশের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসার সৌভাগ্য যখন আমার হয় তখন তিনি যুবক এবং আমিও ছিলাম তাঁহার প্রায় সমবয়সী।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জগদীশচন্দ্র বসুকে কবিতার মাধ্যমে শ্রদ্ধার্ঘ্য জ্ঞাপন করে আচার্য উপাধিতে ভূষিত করেছেন। এছাড়া তিনি অসংখ্য সম্মাননা এবং পুরুস্কার অর্জন করেন। এগুলো হলঃ

  • ১৯১৬ সালে প্রাপ্ত নাইটহুড পুরস্কার
  • রেডিও বিজ্ঞানের একজন জনক হিসেবে অভিহিত করা হয়।
  • ১৯২০ সালে তিনি রয়েল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন।
  • ১৯২৭ ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস-এর ১৪তম অধিবেশনের সভাপতি।
  • বিবিসি এক জরিপে তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকায় সপ্তম স্থান লাভ করেন।
  • কোলকাতা সায়েন্স সিটিতে জগদীশ্চন্দ্র বসুর প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে।
জগদীশ চন্দ্র বসু
কোলকাতা সায়েন্স সিটিতে জগদীশ্চন্দ্র বসুর প্রতিকৃতি

মৃত্যু

বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু ২৩ নভেম্বর ১৯৩৭ সালে ৭৮ বছর বয়সে ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গিরিডিতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বিজ্ঞান ও জাতির সেবায় কাজ করেছেন। মৃত্যুর কিছুদিন আগে, তিনি তার প্রতিষ্ঠিত ‘বসু জ্ঞান মন্দির’-এ জীবনে সঞ্চিত ১৭ লক্ষ টাকার মধ্যে ১৩ লক্ষ টাকা দান করেছিলেন।

উপসংহার

পরাধীন দেশে বাস করেও আজীবন জগদীশ চন্দ্র বসু তার গবেষণা কার্য চালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বিজ্ঞানকে এতোটাই ভালোবাসতেন যে, কোনো আবিষ্কারের জন্য পেটেন্ট গ্ৰহণ করতেন না। তিনি তার আবিষ্কারের মাধ্যমে ব্যবসা করেননি, সমস্ত তথ্য প্রকাশ করেছেন যাতে ভবিষ্যতে বিষয়টিকে নিয়ে অন্য কেউ গভীরভাবে অধ্যয়ন করতে পারে। তারবিহীন প্রযুক্তিতে তিনি যে অবদান রেখেছেন সেটার কল্যাণেই আজকে আমরা ওয়াইফাই, ব্লুটুথ বা স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ খুব সহজে ব্যবহার করতে পারছি।

তথ্যসূত্র

১. Sen, A. K. (১৯৯৭)। “Sir J.C. Bose and radio science”। Microwave Symposium Digest। 2 (8–13): 557–560।
২. জগদীশ চন্দ্র বসুউইকিপিডিয়া।
৩. জগদীশ চন্দ্র বসু’র সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পর্কSomewhereinblog
৪. বসু, আচার্য জগদীশচন্দ্রবাংলাপিডিয়া।
৫. জগদীশচন্দ্র সেরা রচনা সম্ভার, পত্র ভারতী, কলকাতা, ১৯৬০, পৃ. ২৪০,২৪১
৬. জগদীশচন্দ্র সেরা রচনা সম্ভার, পত্র ভারতী, কলকাতা, ১৯৬০, পৃ. ২৪২

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button