A sticky note on the blackboard, Last day of school. Credit:Tick-Tock. Sourece: istockPhoto |
বিদ্যালয়ের শেষ দিন সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ লিখ।
পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে ক্ষণস্থায়ী মানব জীবনের বাঁকে বাঁকে কত স্মৃতিই না জমে থাকে। তেমনি আমার জীবনে বিদ্যালয়ের শেষ দিনের স্মৃতি এক বন্ধময় অনুভব। তবে তখনকার এ মধুময় অনুভব স্মৃতিতে লুকিয়ে ছিলাে বিদ্যালয় ছেড়ে আসার বিষাদময় যন্ত্রণা। সে দিনটি ছিল ২০ জানুয়ারি সােমবার। সেদিন আমাদের এসএসসি পরিক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে বিদায় অনুষ্ঠানের আয়ােজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠান শুরু – হবে সকাল দশটায়। আমি ঘণ্টা খানেক আগেই বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে আমার প্রিয় বন্ধুরা একে একে বিদ্যালয়ে এসে হাজির। আমরা সেদিন সবাই একই রঙের পােশাক পরেছিলাম। সকলকে এক সাথে দেখে মনটা আনন্দে নেচে উঠেছিল। তবে ভিতরে ভিতরে কষ্টের যন্ত্রণার স্রোতধারাও প্রবাহিত হচ্ছিল যে, আজই ওদের সাথে এ বিদ্যালয়ে আমার শেষ দিন। এ কথা ভাবতেই বিদায় অনুষ্ঠানের আনন্দ বিষাদে পরিণত হলাে। বার বার আমি আমার সেই প্রিয় শ্রেণিকক্ষের দিকে দৃষ্টিপাত করছিলাম। মনে হচ্ছিল দীর্ঘ পাঁচটি বছর এ শ্রেণিকক্ষে কতই না সময় কাটিয়েছি। পড়া না পারলে স্যারের পিটুনি, কান ধরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা আরও কত কি! এসব কিছু। ভাবতে ভাবতে কখন যে চোখের কোণে অশ্রুর শিশির জমে গেল তা বুঝতেই পারিনি। এমন সময় আমার প্রিয় গণিত স্যার সঞ্জয় কুমার আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি স্যারের সাথে দেখা করতেই স্যার আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলেন। আমাকে আশীর্বাদ করলেন। তখন আমিও আমার কান্না ধরে রাখতে পারি নি। স্যার মঞ্চে উঠে আমাকে কিছু বলার জন্য বললেন। আমি মঞ্চে উঠেছিলাম ঠিকই কিন্তু বলতে পারিনি কিছুই। দু’চোখ বেয়ে চোখের জলে আমি শুধু একটা কথাই বলেছিলাম, “স্যার, আপনারা সকলেই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা যেন আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করতে পারি।” সেদিন আমি ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলাম। সকল বন্ধুরা স্যারদের সাথে ছবি তুলেছিলাম। যা দেখলে আজও বিদ্যালয় জীবনের শেষদিনের স্মৃতি মানসপটে ভেসে ওঠে। বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিতে গেলে তারা আমাকে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে। আমিও কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমি কখনাে ভাবতে পারিনি যে এ মানুষগুলাে ও প্রিয় বিদ্যালয়কে এভাবে ছেড়ে যেতে হবে। আর ছেড়ে যাবার যন্ত্রণা যে এত কঠিন হবে তা আগে কখনাে বুঝিনি। এ যন্ত্রণার স্মৃতি আজও আমাকে স্মৃতিকাতর করে তােলে। এ স্মৃতি কখনােই ভুলবার নয়।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।

বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাসের সাজেশন দেন