অনুচ্ছেদ

অনুচ্ছেদঃ শ্রমের মর্যাদা

4.7/5 - (41 votes)
শ্রমের মর্যাদা অনুচ্ছেদ ৬ ৭ ৮ ৯ শ্রেণি

শ্রমের মর্যাদা

বেঁচে থাকার জন্যে প্রতিটি মানুষকে জীবনযুদ্ধের সম্মুখীন হতে হয় এবং জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে পরিশ্রম। কর্মই জীবন। জীবনের লক্ষ্য অর্জনের জন্যে মানুষকে কর্মমুখর জীবন কাটাতে হয়। হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি নিজের জন্যে কিংবা পরের জন্যে পরিশ্রম করতে চায় না, সে আল্লাহর পুরস্কার থেকে বঞ্চিত। মানবজীবনের যে উৎকর্ষ সাধিত হচ্ছে এবং মানব সভ্যতার যে বিকাশ ঘটছে তাতে শ্রমদানের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষ শ্রম দেয় বলেই সভ্যতার চাকা ঘোরে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তবে সুখের মুখ দেখতে হয়। বর্তমান বিশ্বের যা কিছু অগ্রগতি তা মানুষের শ্রমদানের ফলেই সম্ভব হয়েছে এবং হচ্ছে। কাজের প্রকারভেদের কারণে মানুষের মধ্যে শ্রেণি-বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। কাজের বিভিন্নতার জন্যে যেমন, তেমনি যােগ্যতার পার্থক্যের জন্যেও ব্যবধান প্রকট হয়েছে। ফলে কেউ অল্প পরিশ্রমে বেশি সুখ ভােগ করছে, কেউ সর্বাধিক শ্রম দিয়েও ন্যূনতম সুখ পাচ্ছে না। তাই শ্রমের তারতম্য মানুষের মধ্যে সামাজিক বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে। সামাজিক বৈষম্যই বিশ্বে অশান্তির একটি বিশেষ কারণ। তবু একথা অনস্বীকার্য যে, সবাইকে শ্রম দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করতে হয় এবং প্রত্যেকের শ্রমই দেশ ও জাতির তথা বিশ্বের অগ্রগতির জন্যে অপরিহার্য। কিন্তু শ্রমের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে তার মর্যাদা পর্যালােচনা করলে পরিস্থিতি খুবই নৈরাশ্যজনক মনে হয়। মানুষে মানুষে হাজারাে ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছে শ্রমের পরিপ্রেক্ষিতে। সবাই এক ধরনের শ্রম দেয় না বলে তাদের মর্যাদায় রয়েছে ভিন্নতা। যারা তথাকথিত নিচু স্তরে কাজ করে তাদের মর্যাদা নেই। তারা সমাজের দৃষ্টিতে হেয় এবং অবহেলিত। আর যারা সে কাজ করে তাদের শ্রমের পরিমাণ কম হলেও তারা বেশি সুবিধাভােগী। তারা সমাজের ও দেশের কর্ণধার। তাদের মর্যাদা অনেক বেশি। ফলে শ্রমবিমুখতা এখন জাতীয় জীবনে প্রকট হয়ে ওঠেছে। শ্রমের মর্যাদা স্বীকৃত না হওয়ার ফলেই এই জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দেশে কায়িক শ্রমকে মর্যাদাহীন বলে বিবেচনা করা হয় বলে শ্রমের প্রতি প্রায় সবারই একটা বিমুখতা রয়েছে। এটা ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনের উন্নতির জন্যে ক্ষতিকর। কিন্তু পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। পরিশ্রম ছাড়া কোনাে কিছুই সফল হয় না। কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, মজুর এ ধরনের পেশার লােকেরা যদি কর্মবিমুখ হয়ে পড়ে তাহলে জাতি মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে মানুষের শ্রমের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং প্রতিষ্ঠিত করতে হবে শ্রমের মর্যাদা।

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button