অনুচ্ছেদ

গ্রন্থাগার / পাঠাগার অনুচ্ছেদ

গ্রন্থাগার / পাঠাগার  অনুচ্ছেদ লিখন ৬ ৭ ৮৯ ১০ শ্রেণি

গ্রন্থাগার / পাঠাগার

শিক্ষান্বেষী মানুষের কাছে গ্রন্থাগার এক চির-কাঙিক্ষত জ্ঞান-তীর্থ, সেখানে সে তার মুক্তির সন্ধান পায়। খুঁজে পায় এক দুর্লভ ঐশ্বর্যের খনি। গ্রন্থাগারেই পাঠক সভ্যতার এক শাশ্বত ধারার স্পর্শ পায়, অনুভব করে মহাসমুদ্রের শত শত বছরের হৃদয় কল্লোল, শুনতে পায় জগতের এক মহা ঐকতান ধ্বনি। দেশে দেশে হৃদয়ে হৃদয়ে রচিত হয় অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন। সভ্যতার ক্রমবিকাশের মত গ্রন্থাগারেরও রয়েছে এক ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস। ধারণা করা হয় প্রাচীন রােমেই সর্বসাধারণের জন্যে প্রথম গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়েছিল। এর আগেও গ্রন্থাগারের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ব্যাবিলনের ভূগর্ত খনন করে আবিষ্কৃত হয়েছে সাড়ে চার হাজার বছরের পূর্বেকার এক গ্রন্থাগার। সন্ধান মিলেছে খ্রিস্টপূর্ব ছ’শ অব্দের আগের আসিরিয়ার রাজা আসুরবানিপালের নিজস্ব গ্রন্থাগারে সঞ্চিত পােড়ামাটির গ্রন্থ। খ্রিস্টপূর্ব চার’শ অব্দে আলেকজান্দ্রিয়ায় ছিল গ্রিক শাসনকর্তা প্রথম টলেমি প্রতিষ্ঠিত প্রাচীনকালের বৃহত্তম গ্রন্থাগার। 
লাইব্রেরির প্রথম ধারণা দেন রােমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার। তিনি যাকে দায়িত্ব দিলেন সেই মার্কাস একজন সুলেখক ছিলেন। তিনি লাইব্রেরির ওপর রচনা করেন একটি গবেষণা-গ্রন্থ। পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যেই তৈরি হয় লাইব্রেরি, কিন্তু বন্ধু ব্রুটাসের হাতে নিহত হওয়ায় সিজার সেই লাইব্রেরি দেখে যেতে পারেন নি। গ্রন্থাগার ভাবের মিলন-সেতু। গ্রন্থাগার অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতের যােগাযােগের অক্ষর-নির্মিত সেতু। নদীর স্রোতের মত জ্ঞান-প্রবাহ দেশ-দেশান্তর ও যুগ-যুগান্তরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চলে। এক হৃদয়ের ভাবরাশি নিঃশব্দে প্রবাহিত হয়ে যায় হৃদয়ান্তরে। গ্রন্থাগার তাই জ্ঞানান্বেষী কোটি কোটি মানুষের নীরব আলাপনের পবিত্র বিদ্যাপীঠ। এখানে চিন্তাবিদ পায় তার নানামুখী চিন্তার খােরাক এবং নানা দুরুহ জিজ্ঞাসার উত্তর, ভাবুক পায় ভাব রসের সন্ধান।

পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশের তুলনায় আমাদের দেশে সাধারণ গ্রন্থাগারের সংখ্যা নগণ্য। তবে স্বাধীন দেশে এ শ্রেণির জনহিতকর প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা যে বেড়েছে তাতে কোনাে সন্দেহ নেই। বর্তমানে বিভিন্ন জেলা শহরে নতুন পুরাতন সাধারণ গ্রন্থাগার দেখা যায়। এছাড়া সমাজের বিভিন্ন ক্লাব ও জনহিতকর সংস্থা এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। অন্যদিকে, রয়েছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার সভ্যসংখ্যা এসব জায়গায় সীমাবদ্ধ। বর্তমানে জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে গ্রন্থাগারের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন অগ্রসর ও উন্নতশিল দেশে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের গ্রন্থাগার। আমাদের বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম নয়। স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর এ দেশে গ্রন্থাগারের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষিত জনসাধারণের মধ্যে গ্রন্থাগার সম্পর্কে নতুন আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দেশের পাবলিক লাইব্রেরি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, বাংলা একাডেমী গ্রন্থাগার জনগণের গ্রন্থপাঠের প্রয়ােজন মেটাচ্ছে।


 এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন। 

Google News

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button