মঙ্গল করিবার শক্তিই ধন বিলাস ধন নহে
ভাবসম্প্রসারণ মঙ্গল করিবার শক্তিই ধন বিলাস ধন নহে বাংলা ২ য় ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ শ্রেণী SSC HSC JSC PSC
মূলভাব
যে প্রাচুর্য বা ধনসম্পদ মানুষের মঙ্গল সাধনে সক্ষম, সে প্রাচুর্য বা ধনসম্পদই প্রকৃত ধন। বিলাসিতায় ব্যয়িত অর্থ কখনই ধন হিসেবে গণ্য হয় না।
সম্প্রসারিত ভাব
পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষই চায় সুখ-শান্তিতে বাস করতে। আর এজন্য প্রত্যেকে কষ্ট করে অর্থোপার্জন ও সঞ্চয় করে। জীবনে অর্থের প্রয়ােজনীয়তা অনস্বীকার্য। অনেকে অর্থকে ধন বলে মনে করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অর্থ ধন নয়। অর্থোপার্জন করে তা শুধু স্বীয় ভােগ-বিলাসে ব্যয় করলে সেই অর্থ দেশ ও সমাজের কোনাে কাজে আসে না। ধনের মালিককেও তা প্রশান্তি দেয় না। আসলে যারা মনে করে অর্থই মানুষকে সুখ-শান্তি দিতে পারে এবং এ বিশ্বাসের প্রেক্ষিতে শুধু ভােগের প্রত্যাশায় অর্থোপার্জন করে তারা কখনাে সুখ পায় না। বরং অর্থ তাদের জন্য নানা অশান্তি বয়ে আনে।
তাছাড়া অর্থ-সম্পদ অনিত্য। জোয়ারের মতাে উদ্বেল হয়ে আসে, আবার ভাটার মতাে নিমেষেই চলে যায়। অঢেল টাকাপয়সার মালিক হলেই কাউকে ধনী বলা যায় না। যার হৃদয়ে মানবকল্যাণ সদা জাগ্রত, যিনি পরােপকারী, মহৎ ও উদার হৃদয়ের অধিকারী, তিনিই সত্যিকারের ধনী। লােকে তাঁকে মান্য করে, সম্মান করে। মরণের পরও তিনি অমর হয়ে মানব হৃদয়ে বেঁচে থাকেন। মানবকল্যাণে যিনি আত্মনিবেদিত, তিনিই প্রকৃত ধনী। সম্পদ উপার্জন করে তা ভােগ-বিলাসে ব্যয় করলে আত্মা সংকুচিত হয়ে পড়ে, মানব-মহিমা কলঙ্কিত হয়।
সম্পদের আধিক্য বিলাসিতা বাড়ায়। আর মানবকল্যাণের মনােবৃত্তি মনুষ্যত্বকে উজ্জীবিত করে। যারা মানবকল্যাণে স্বীয় ধনসম্পদ উৎসর্গ করেন, মূলত তারাই প্রকৃত ধনী। কারণ তাদের এই সম্পদের ধ্বংস নেই, নিঃশেষ নেই। এ সম্পদের বদৌলতে তারা অমরত্ব লাভ করেন। পৃথিবীর বহু মনীষী দরিদ্র ছিলেন, অর্থসম্পদ তাদের ছিল না। কিন্তু মানবকল্যাণে তারা ছিলেন সদা উদগ্রীব। তারা যে ধন অর্জন করে গেছেন, তা আজও অক্ষত রয়েছে। অতএব, মানবকল্যাণে যারা নিজেকে নিয়ােজিত রাখেন, তারাই প্রকৃত ধনী।
মন্তব্য
যে ধন অপরের মঙ্গল এবং মানবকল্যাণে ব্যয় হয়, প্রকৃত অর্থে তা-ই ধন।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।