বাংলার মুখ
– জীবনানন্দ দাশ
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ
খুঁজিতে যাই না আর : অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে
চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নিচে ব’সে আছে
ভোরের দোয়েল পাখি- চারিদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ
জাম-বট-কাঁঠালের-হিজলের-অশ্বত্থের ক’রে আছে চুপ,
ফণীমনসার ঝোপে শটিবনে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে,
মধুকর ডিঙা থেকে না জানি সে কবে চাঁদ চম্পার কাছে
এমনই হিজল-বট-তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ
দেখেছিলো, বেহুলাও একদিন গাঙুড়ের জলে ভেলা নিয়ে
কৃষ্ণা দ্বাদশীর জ্যোৎস্না যখন মরিয়া গেছে নদীর চড়ায়
সোনালি ধানের পাশে অসংখ্য অশ্বত্থ বট দেখেছিল, হায়,
শ্যামার নরম গান শুনেছিলো- একদিন অমরায় গিয়ে
ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিল ইন্দ্রের সভায়
বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো তার কেঁদেছিলো পায়।
_________________________________________
[post_ads]
কবি পরিচিতিঃ
জন্ম: ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৯
জন্মস্থানঃ বরিশাল
মৃত্যু: ২২ অক্টোবর ১৯৫৪ (বয়স ৫৫)
মৃত্যুর কারণ: ট্রাম দুর্ঘটনায়
সমাধি: ভারত
অন্য নাম: মিলু
পিতা: সত্যানন্দ দাশগুপ্ত
মাতা: কুসুমকুমারী দাশ
[সুত্রঃ জীবনানন্দ দাশ – উইকিপিডিয়া ##fa-external-link##]