
হজ্জ ইসলামের পঞ্চম ভিত্তি। এটি এমন ইবাদত যেখানে আর্থিক ও শারীরিক উভয়েই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এটি বিশ্ব মুসলমানদের মহামিলনের মাধ্যম। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানদের হজ্জ পালন করা অপরিহার্য কর্তব্য। আসুন জেনে নেই কাদের উপর হজ্জ ফরয।
হজ্জ কী?
হজ্জ আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হলো – ইচ্ছে করা, ঘোরাফেরা করা, সংকল্প করা, পর্যবেক্ষণ করা ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোরআন ও হাদীসের নিয়ম অনুযায়ী জিলহজ্জ মাসের নির্ধারিত দিনসমূহে নির্ধারিত পদ্ধতিতে বাইতুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর ঘর ও সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহ যিয়ারত করাকে হজ্জ বলে।
হজের অনুষ্ঠানগুলো দশ দিনের মেয়াদে সংঘটিত হয়, যা জ্বিলহজ্জ মাসের ১ তারিখ থেকে শুরু হয় এবং ১০ তারিখ শেষ হয়। এই দশ দিনের মধ্যে, ৯ জ্বিলহজ্জ আরাফাতের দিন হিসাবে পরিচিত এবং এই দিনটিকে হজ্জের দিন বলা হয়।
[box type=”note” align=”” class=”” width=””]আরও পড়ুনঃ ঋণ বা ধার করা অর্থ দিয়ে হজ্জ করা যাবে কিনা?[/box]
কাদের উপর হজ্জ ফরয?
সবার উপর হজ্জ ফরয নয়। যারা বিত্তবান তাদের উপর হজ্জ ফরয। কিন্তু বিত্তবান হলেই যে হজ্জ ফরয বিষয়টি এমন নয়। যাদের উপর হজ্জ ফরয তা নিচে দেওয়া হলঃ
[tie_list type=”checklist”]
- যার নিকট মক্কা শরীফ থেকে হজ্জ করে ফিরে আসা পর্যন্ত পরিবারের আবশ্যকীয় খরচ বাদে মক্কা শরীফ যাতায়াতের মোটামুটি খরচ পরিমাণ অর্থ থাকে তার উপর হজ্জ ফরয। ব্যবসায়িক পণ্য এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত জমির মূল্য এ অর্থের হিসাবে গণ্য করতে হবে।
- মেয়েলোকের জন্য নিজ স্বামী বা নিজের কোনো বিশ্বস্ত দ্বীনদার মাহরাম পুরুষ ব্যতীত হজ্জে যাওয়া দুরস্ত নয় । শুধু এমন কোন মহিলা থাকা যথেষ্ট নয়, যার সাথে তার মাহরাম পুরুষ রয়েছে।
- অন্ধের উপর হজ্জ ফরয নয় যত ধনই থাকুক না কেন।
- নাবালেগের উপর হজ্জ ফরয হয় না । নাবালেগ অবস্থায় হজ্জ করলেও বালেগ হওয়ার পর প্রয়োজনীয় সামর্থ হলে পুনরায় হজ্জ করতে হবে।
[/tie_list]
হজ্জ ও উমরার ফযীলত
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে হজ্জ গোনাহ এবং খারাবী থেকে পবিত্র হয়, জান্নাতই হল তার পুরস্কার । (বোখারী ও মুসলিম)।
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, এক উমরার পর আর এক উমরা করলে দুই উমরার মধ্যবর্তী সব গোনাহ মোচন হয়ে যায়।
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে আল্লাহ্ সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ্জ করে এবং হজ্জের প্রাক্কালে অশ্লীল কথা কাজ ও পাপ থেকে বিরত থাকে, সে মায়ের পেট থেকে জন্ম গ্রহণের দিনের ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসে।
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, একাধারে হজ্জ ও উমরা করতে থাক । এটা পাপ ও দরিদ্রতাকে এমনভাবে মিটিয়ে দেয় যেমন আগুন লোহার ময়লা দূর করে দেয় । (তিরমিযী ও নাসায়ী)।