ইসলাম ও জীবন

নফল রোজা আদায় করবেন যেভাবে জেনে নিন । নফল রোজা আদায়ের নিয়ম কি?

Rate this post

নফল রোজা আদায় করার নিয়মঃ আসসামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক, আশা করি আল্লাহ্‌র রহমতে আপনারা ভালো আছেন। নফল রোজা আদায় করার নিয়ম সম্পর্কে জানবো। রমজান মাসের সবগুলো রোজা রাখার পর অনেকেই আছেন সারা বছর নফল রোজা রাখেন। এটি অনেক ফজিলতপূর্ণ।

রোজা কি?

রোজা শব্দের অর্থ হল “বিরত থাকা”। আরবিতে রোজাকে “সাওম” বলা হয়। যার বহুবচন হল “সিয়াম”। সিয়াম অর্থ হল উপবাস থাকা, রক্ষা করা। রমজন মাস সিয়াম সাধনার মাস। ইসলামি শরীয়াতের পরিভাষায় আল্লাহপাকের হুকুম পালনার্থে এবং সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, সঙ্গম,পাপাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস ও অপ্রয়োজনীয় কাজ থেকে বিরত থাকার নামই হচ্ছে সিয়াম। পবিত্র কুরআনে আল্লহপাক শুধুমাত্র একটি আয়াতে রোজার কথা বলেছেন। দ্বিতীয়বার এর পুনরাবৃত্তি করেননি। সূরা বাকারার ১৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলেনঃ

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার।

 

রোজার ফজিলত

হাদিসে কুদসীর মধ্যে আল্লাহ্পাক বলেছেন:

রোজা আমার, এর পুরষ্কার আমি আল্লাহ নিজেই দিব।

অন্য রেওয়াতে হাদিসে কুদসীর মধ্যে আল্লাহ্পাক বলেনঃ

রোজা আমার জন্যে, এর প্রতিদান আমি আল্লাহ নিজেই হয়ে যাব।

 

এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার হল আল্লাহ্পাক বলেছেন, রোজা আমার জন্য। অথচ আমরা যে নামাজ পড়ি, যাকাত দেই , হজ্জ্ব করি আল্লাহর জন্যই করি। কিন্তু আল্লাহপাক কোথাও বলেননি নামাজ, যাকাত, হজ্জ্ব আমার জন্যে। শুধু রোজার ক্ষেত্রে বলেছেন রোজা আমার জন্যে। সুতরাং রোজার ফজিলত অনেক।

[box type=”note” align=”” class=”” width=””]আরও পড়ুনঃ রোজার নিয়ত বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ | রোজার নিয়ত করার নিয়ম[/box]

রোজাদারদের জন্য আল্লাহ্পাক ৫টি পুরুষ্কারের কথা বলেছেন। যা শুধু উম্মতে মুহাম্মদের (স.) জন্য।

[tie_list type=”plus”]

  • রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ্পাকের কাছে মিসক আম্বরের চাইতে অধিক সুঘ্রাণযুক্ত।
  • রোজাদার ব্যক্তি যখন রোজা রাখে ইফতার করার আগ পর্যন্ত সে যত দোয়া করবে আল্লাহ্পাক সমস্ত দোয়াকে কবুল করে নিবেন। এমনকি ইফতার করার আগ পর্যন্ত রোজাদার ব্যক্তির জন্য সমুদ্রের মাছ আল্লাহ্পাকের কাছে ক্ষমা চাইতে থাকে।
  • রোজাদারদের জন্য আল্লাহ্পাক বেহেস্তকে সুসজ্জিত করেন। এবং জান্নাতকে বলতে থাকেন আমার বান্দরা পৃথিবীতে কষ্ট করে আমল করছে তারা অচিরেই দুনিয়ার কষ্ট থেকে মুক্ত হয়ে তোমার ভিতর চলে আসবে।
  • রমজানের শেষ রাত্রিতে আল্লাহ্পাক বান্দার গুন্নাহগুলোকে মাফ করে দেন।
  • উশৃখল শয়তানকে আল্লাহ্পাক বাঁধার কারণে গুন্নাহমুক্তভাবে জীবন-যাপন করতে পারা যায়।

[/tie_list]

এক হাদিসে রাসূল (স.) বলছেন:

তিন প্রকার ব্যক্তির দোয়া কখনো বৃথা যাবে না। অবশ্যই তাদের দোয়া আল্লাহর কাছে গৃহিত হবে। (১) রোজাদার ব্যক্তি। (২) ন্যায়পরায়ণ শাসক ও (৩) নির্যাতিত ব্যক্তি

[box type=”note” align=”” class=”” width=””]আরও পড়ুনঃ রোজা নিয়ে ৮ টি প্রশ্ন-উত্তর যা সকলের জানা উচিত | মাহে রমজান[/box]

আল্লাহর হাবিব (স.) বলেছেন: যে ব্যক্তি পরিপূর্ণ ঈমানের সাথে আল্লাহ্পাকের সন্তুষ্টির জন্য রোজা আদায় করবে আল্লাহ্পাক তার জিন্দেগীর সমস্ত গুন্নাহ মাফ করে দিবেন। (সুবাহানাল্লাহ)। এর চাইতে বড় পুরষ্কার আর কি হতে পারে।

নফল রোজা রাখার নিয়ম

পাঁচদিন ব্যতীত সারা বছরের যেকোনো দিন নফল রোজা রাখা যায়। উক্ত পাঁচ দিন হল ঈদুল ফিতরের দিন, ঈদুল আযহার দিন ও ঈদুল আযহার দিনের পরের তিন দিন অর্থাৎ ১১ই, ১২ই ও ১৩ই যিলহজ্জ। এই পাঁচ দিন যেকোনো রোজা রাখা হারাম। তাই এই পাঁচ দিন এবং রমযানের রোজা ব্যতীত বাকি দিনগুলোতে নফল রোজা রাখা যায়।

যে ব্যক্তি প্রত্যেক চন্দ্র মাসের ১৩ই, ১৪ই, ১৫ই তারিখে নফল রোজা রাখল সে যেন সারা বছর রোজা রাখল। এটাকে আইয়ামে বীযের রোজা বলে।

[box type=”note” align=”” class=”” width=””]আরও পড়ুনঃ রোজার নিয়ত কিভাবে করবেন?[/box]

প্রত্যেক সোমবার এবং বৃহস্পতিবার নবী করীম (সঃ) নফল রোজা রাখতেন। এতেও অনেক সওয়াব আছে। বেলা দ্বিপ্রহর এর একঘন্টা পূর্ব পর্যন্ত নফল রোজার নিয়ত করা দুরস্ত আছে।

নফল রোজা শুরু করলে সেটা পুরো করা ওয়াজিব হয়ে যায়। তাই নফল রোজার নিয়ত করার পর সেটা ভাঙলে তার কাযা আদায় করা ওয়াজিব।

স্বামী বাড়িতে থাকা অবস্থায় তার বিনা অনুমতিতে স্ত্রীর জন্য নফল রোজা রাখা দুরস্ত নয় । রাখলে স্বামীর হুকুম করলে তা ভেঙে দিতে হবে এবং পরে কাযা করে দিতে হবে।

মেহমান যদি একা খেতে মনে কষ্ট পায় তাহলে তার খাতিরে নফল রোজা ভেঙে ফেলতে পারে। ভাঙলে পরে কাযা করে নিতে হবে। তবে এই ভাঙ্গার অনুমতি সূর্য ঢলার পূর্ব পর্যন্ত।

নফল রোজা আদায় যেভাবে জেনে নিন । নফল রোজা আদায়ের নিয়ম কি? লিখাটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের মঝে শেয়ার করবেন।

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button