সামনেই ঈদুল আযহা (কোরবানির ঈদ)। আমরা সকলেই কোরবানি পশু ক্রয়ের জন্য ব্যস্ত আছি। কোরবানির পশু ক্রয় থেকে শুরু করে জবেহ্ পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে। আমরা আজ কোরবানির পশু জবেহ করার তরীকা সম্পর্কে জানবো।
কোরবানির পশু জবেহ করার সুন্নাহ বা পদ্ধতি
১। নিজের কোরবানির পশু নিজেই জবেহ করা উত্তম । নিজে জবেহ না করলে বা করতে না পারলে জবেহের সময় সামনে থাকা ভাল । মেয়েলোকের পর্দার ব্যাঘাত হওয়ার কারণে সামনে না থাকতে পারলে ক্ষতি নেই।
২। কুরবানীর পশুকে মাটিতে শুইয়ে তার মুখ কেবলামুখী করে নিমের দুআ পাঠ করা উত্তম।
অতঃপর বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবেহ করবে। কেউ দুআ পড়তে না পারলে শুধু ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে জবেহ করলেও চলবে।
৩। কুরবানীদাতা বা কুরবানীদাতাগণের নাম মুখে উচ্চারণ করা বা কাগজে লিখে পড়া জরুরি নয় । আল্লাহ পাক জানেন এটা কার কুরবানী । সে অনুযায়ীই সে কুরবানী গৃহীত হবে।
৪। ঈদের নামাযের পূর্বে কুরবানী করা জায়েয নয়। তবে যেখানে জুমুআ ও ঈদের নামায দুরস্ত নয় সেখানে সুবহে সাদেকের পর থেকেই কুরবানী করা দুরস্ত আছে।
৫। জবাইকারীর মুসলমান হওয়া শর্ত। কাফেরের জবাই করা জন্তু খাওয়া হারাম।
৬। মুসলমান পুরুষ হােক বা মহিলা উভয়ের জবাই খাওয়া হালাল।
৭। নাবালেগ ছেলে মেয়ে জবাই করতে জানলে এবং বিসমিল্লাহ (আল্লাহর নাম) বললে তার জবাই খাওয়া হালাল।
৮। জবাই করার সময় জন্তু ও জবাইকারী উভয়ের মুখ কেবলার দিকে থাকা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।
৯। জবাই করার সময় জবাইকারী কর্তৃক আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা শর্ত । “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার” বলে সাধারণত এ শর্ত পূরণ করা হয় । ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ না বললে বা অন্য কোনাে বাক্যে আল্লাহর নাম না নিলে সে জন্তু খাওয়া হারাম হয়ে যায়। তবে ভুলে ছুটে গেলে খাওয়া দুরস্ত আছে ।
১০। জবাইর মধ্যে জানােয়ারের চারটা রগ কাটতে হবে । তিনটা রগ কাটলেও দুরস্ত আছে। তিনটার কম কাটলে সে জন্তু মৃত বলে গণ্য এবং হারাম হয়ে যাবে। রগ চারটা এই- শ্বাসনালী, খাদ্যনালী ও দুইটা শাহরগ।
১১। ধারালাে ছুরি দ্বারা জবাই করা উত্তম। ভোতা বা কম ধারালাে ছুরি দ্বারা জবাই করা মাকরূহ।
১২। ছুরির অভাবে ধারালাে পাথর, বাঁশ বা আখের ধারালাে বালা দ্বারা জবাই করা দুরস্ত আছে।
১৩। পাথরের আঘাতে, বন্ধুকের গুলিতে মারা গেলে খাওয়া দুরস্ত নয়। তবে বন্ধুকের গুলি বা পাথরের আঘাত লাগার পর মরে যাওয়ার পূর্বে জবাই করতে পারলে তা খাওয়া জায়েয।
১৪। দাঁত বা নখ দ্বারা জবাই করা দুরস্ত নয়।
১৫। জবাই করার সময় জানােয়ারের মাথা সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে গেলেও তা খাওয়া দুরস্ত আছে। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এরূপ কেটে আলাদা করে দেয়া মাকরূহ। তবে এরূপ জানােয়ার খাওয়া মাকরূহ নয়।
১৬। জবাই করার পর জানােয়ার ঠাণ্ডা হওয়ার পূর্বে চামড়া খসানাে, হাত পা কাটা বা ভাঙ্গা কিংবা সমস্ত গলা কেটে দেয়া মাকরূহ।
১৭। গােসল ওয়াজিব বা উযূ নেই- এমন অবস্থায়ও জবাই করা যায়
১৮। জবাই করার পূর্বে প্রাণীকে ক্ষুধার্ত রাখা জুলুম। আর আল্লাহ্ জুলুমকারিরকে অপছন্দ করে।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।