আমরা সকলেই পিপীলিকার নাম নিশ্চয়ই শুনেছি। প্রায় বাসা-বাড়িতে দেখা মিলে ছোট ছোট পিঁপড়ার। অনেকেই আবার পিঁপড়ার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে যায়। আল্লাহ সেই পিঁপড়ার নামে একটি সূরা নাজিল করেছেন। সূরাটি হল আন নম্ল। এটি পবিত্র কুরআন শরীফের ২৭ তম সূরা। সূরাটির অর্থ হল “পিপীলিকা বা পিঁপড়া”
পিঁপড়া আল্লাহর এক অপূর্ব সৃষ্টি। মানুষের জন্য এতে অনেক নিদর্শন রয়েছে। সূরা আন নম্ল এর ১৭ ও ১৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে:
সুলায়মানের সামনে জিন, মানুষ ও পাখিদের বাহিনীকে সমবেত করা হল, উহাদেরকে বিন্যস্ত করা হল বিভিন্ন ব্যুহে। যখন তারা পিপীলিকা অধ্যুষিত এলাকায় পৌছাল, তখন একটি পিপীলিকা বলল : হে পিপীলিকারা! তােমরা তােমাদের গর্তে/ঘরে প্রবেশ কর যেন সুলায়মান এবং তার বাহিনী অজ্ঞাতসারে তােমাদেরকে পদতেল পিষ্ট করে না ফেলে।” (আল-কুরআন-২৭:১৭-১৮)
অতীতে সম্ভবত: কিছু ব্যক্তি রূপকথার ও গল্পের বই মনে করে উপহাস করে থাকতে পারে কুরআনকে। যাতে উল্লেখ আছে পিপীলিকাদের পারস্পরিক কথাবার্তা বলার এবং উন্নত সূক্ষ্ম পন্থায় বার্তা বিনিময়ের বিষয়। সাম্প্রতিক সময়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পিপীলিকাদের জীবন ধারার এমন সব সঠিক তথ্য প্রদর্শন করেছে যা পূর্ববর্তীরা মােটেই জানতাে না। গবেষণায় দেখা গেছে মানুষের জীবন ধারার সাথে যে সকল প্রাণী বা কীট পতঙ্গের জীবন ধারার ঘনিষ্ঠতম সাদৃশ্য রয়েছে সেটা হল পিপীলিকার জীবন ধারা।
পিপীলিকা সম্পর্কে নিম্নে বর্ণিত গবেষণালব্ধ ফলাফল হতে এটা সহজেই প্রতীয়মান হয়।
১. মানুষের ন্যায় পিপীলিকা একইভাবে মরদেহ কবরস্থ করে।
২. পিপীলিকাদের রয়েছে শ্রম বিভাজনের পরিশীলিত উন্নত পদ্ধতি, তাই তাদের পরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক, শ্রমিক প্রধান, শ্রমিক ইত্যাদি আছে।
৩. মাঝে মধ্যে খােশ গল্প করার জন্য তারা নিজেরা এক সঙ্গে মিলিত হয়।
৪. নিজেদের মধ্যে যােগাযােগ রক্ষা করার জন্য তাদের রয়েছে উন্নত যােগাযােগ পদ্ধতি।
৫. তারা নিয়মিত বাজার বসায় দ্রব্যাদি বিনিময়ের জন্য।
৬. শীতকালে দীর্ঘসময়ের জন্য তারা খাদ্যশস্য জমা করে রাখে এবং যদি শস্য কণার অঙ্কুরিত হওয়া শুরু হয় তারা তখন শেকড়গুলাে কেটে দেয় মনে হয় তারা যেন এটা বুঝে যে, অঙ্কুর বৃদ্ধির জন্য রেখে দিলে এটা পচে নষ্ট হয়ে যাবে। জমাকৃত খাদ্যশস্য বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেলে তারা সেগুলাে রােদে শুকানাের জন্য বের করে আনে, শুকিয়ে গেলে আবার তারা সেগুলাে ভিতরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যেন তারা এটা জানে যে, আর্দ্রতা অঙ্কুর গজানাের কারণ এবং এর ফলে শস্যের পচন হতে পারে।