Uncategorized

“ব্যবসায় উদ্যোগ” সপ্তম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১ অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর

Rate this post
"ব্যবসায় উদ্যোগ" সপ্তম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১ অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর

 “ব্যবসায় উদ্যোগ” সপ্তম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১ অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর – Bebsay Uddog SSC 2021 7th Week Assignment Answer

অ্যাসাইনমেন্ট নম্বরঃ ৫
অধ্যায়ঃ ৪
অধ্যায়ের শিরোনামঃ মালিকানা ভিত্তিতে ব্যবসায়

অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনামঃ বাংলাদেশের  আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সমবায় সমিতির গুরুত্ব বিশ্লেষণ।


নিধারিত কাজঃ

"ব্যবসায় উদ্যোগ" সপ্তম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১ অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর

“ব্যবসায় উদ্যোগ” সপ্তম সপ্তাহ

(ক) আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ধারণাঃ

আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হলো অর্থনৈতিক ও সামাজিক কার্যকলাপের মধ্যে এমন সম্পর্ক যা ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়নকে নির্দেশ করে। অর্থাৎ সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তির অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়ন সাধনই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। একটি সাধারণউদাহরণ হিসেবে বলা যায়- কোনো এক গ্রামের কৃষকেরা খুবই দরিদ্র হওয়ায় উন্নত কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেনা। এমতাবস্থায় সকল চাষী সম্মিলিতভাবে অর্থপ্রদান করে কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করল যা তারা সকলেই ব্যবহার করে নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধনের পাশাপাশি সামাজিক এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।

(খ) সমবায় সমিতির ধারণাঃ

সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা ও চিন্তা থেকেই সমবায়ের উৎপত্তি। পুঁজিবাদী সমাজের সৃষ্ট অর্থনৈতিক বৈষম্য ও দূরবস্থা থেকে মুক্তির প্রয়াসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমবায় সংগঠন গড়ে উঠে। সমবায়ের শব্দগত অর্থ হলো সম্মিলিত উদ্যোগ বা প্রচেষ্টায় কাজ করা। প্রথম সমবায় আন্দোলনের সূচনা হয় পশ্চিম ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও জাপানে। তবে সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রপথিক সংগঠন হচ্ছে বিশ্বের সর্বপ্রথম সমবায় সমিতি রচডেল সমিতি যা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৪৪ সালে ইংল্যান্ডের রচডেল নামক স্থানে।

আমাদের এ উপমহাদেশে সর্বপ্রথম ১৯০৪ সালে সরকারিভাবে সমবায়ের উদ্যোগ গ্রহণকরা হয়। ১৯৫৯ সালে প্রখ্যাত সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা ড. আক্তার হামিদখানের নেতৃত্বে কুমিল্লায় পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (BARD) সমবায় সমিতি আন্দোলন ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২সালে জাতীয় সমবায় ব্যাংক লিমিটেড কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে বাংলাদেশের সকল সমবায়সমিতি ২০০১ সালের সমবায় আইন এবং ২০০৪ সালের সমবায়নীতিমালা অনুযায়ীপরিচালিত হচ্ছে। 

(গ) সমবায় সমিতির প্রকারভেদঃ

সকল ধরনের সমবায় সমিতির মুখ্য উদ্দেশ্য হলো সদস্যগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন। বর্তমানে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ নিজেদের উদ্যোগে ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আর্থিক ও সামাজিকভাবে স্বনির্ভরতা আনয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের সমবায় সমিতি গঠন করছে। তবে সমবায় বিধিমালা ২০০৪-এ পেশা ভিত্তিক সমবায় সমিতিসমূহের মধ্যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা পালনকারী সমবায় সমিতিসমূহ নিম্নরূপঃ

  • মহিলা সমবায় সমিতিঃ যে সমবায় সমিতি মহিলাদের উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত ও পরিচালিত হয় তাকে মহিলা সমবায় সমিতি বলা হয়। এ ধরনের সমিতিসমূহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীদের স্বাবলম্বী করে তুলতে কাজ করে থাকে। এতে সমাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমাজ তথা পুরো রাষ্ট্রের উন্নয়নে অংশ নিতে সমর্থ হয়। এতে রাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তরান্বিতহয়।

  • বিত্তহীন সমবায় সমিতিঃ এ ধরনের সমিতি মূলত বিত্তহীনদের নিয়ে কাজ করে যাতে তারা ধীরে ধীরে নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অগ্রগতি সাধন করতে পারে। সে ক্ষেত্রে সমিতির পক্ষ হতে সকল সদস্যদের জন্য সমান সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়। এবং তারা সমাজের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হয়।

  • শ্রমজীবী সমবায় সমিতিঃ আমাদের দেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানায় কিংবা দালান-কোঠা নির্মাণে ইত্যাদি স্থানে বিভিন্ন কাজে আমরা শ্রমিকদের দেখতে পাই। এমন সব শ্রমিকরা নিজেদের জীবন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে এই ধরনের সমিতি গড়ে তুলে। এই সকল সমিতির তত্ত্বাবধানে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়, যথাযথ পারিশ্রমিক নির্ধারণ, শ্রম ঘন্টার অতিরিক্ত কাজে বাধ্য না করা ইত্যাদি কর্মকাণ্ড সম্পাদিত হয়ে থাকে।

  • চালক সমবায় সমিতিঃ যারা যানবাহন চালিয়ে থাকেন, তারাই হলাে চালক। সমাজে অনেক সময় চালকদের সাথে ন্যূনতম ব্যবহারটুকুও করে না। চালক সমবায় সমিতি মূলত পর্যাপ্ত গাড়ি ভাড়া নির্ধারণ, গাড়ির তেল, সার্ভিসিং চার্জ ন্যূনতম রাখা, গাড়ি চালনায় চালকদের আরাে অভিজ্ঞ ও দক্ষ করে তােলা আইনের নিয়মকানুন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ইত্যাদি কাজ করে থাকে। এছাড়াও আরাে কিছু সমবায় সমিতি রয়েছে যারা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষভাবে ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমনঃ 
    ১. কৃষি বা কৃষক সমবায় সমিতি
    ২. মৎস্যজীবী বা মৎস্যচারী সমবায় সমিতি
    ৩. মৃৎশিল্পী সমবায় সমিতি
    ৪. তাঁতি সমবায় সমিতি
    ৫. ভূমিহীন সমবায় সমিতি (সদস্যগণের সর্বোচ্চ জমির পরিমাণ হবে ৪০ শতক)
    ৬. হকার্স সমবায় সমিতি।
    ৭. পরিবহন মালিক বা শ্রমিক সমবায় সমিতি
    ৮. কর্মচারী সমবায় সমিতি
    ৯. দুগ্ধ সমবায় সমিতি
    ১০. মুক্তিযােদ্ধা সমবায় সমিতি
    ১১. যুব সমবায় সমিতি (১৮ হতে ৩৫ বছর বয়সী যুব ও যুব মহিলাদের জন্য)
    ১২. গৃহায়ন (হাউজিং) সমবায় সমিতি
    ১৩. ফ্ল্যাট বা এপার্টমেন্ট মালিক সমবায় সমিতি
    ১৪. দোকান মালিক বা ব্যবসায়ী বা মার্কেট সমবায় সমিতি ইত্যাদি।
(ঘ) বাংলাদেশের সমবায় সমিতির সমস্যা ও সম্ভবনাঃ

বাংলাদেশে সমবায় সমিতির বিকাশে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। নিম্নে কিছু সমস্যা তুলে ধরা হলােঃ

১। সরকারি পৃষ্ঠপােষকতার অভাব।
২। প্রচার প্রচারণার অভাবে এবং লােকজনের অজ্ঞতার কারণে।
৩। সমাজে সমশ্রেণীর ব্যক্তিবর্গের মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থার অভ…
৪। জনগণের আত্মকেন্দ্রিকতা কিংবা স্বার্থপরতা ।

আর্থসামাজিক উন্নয়নে সমবায় সমিতির গুরুত্ব অপরিসীম। আর বাংলাদেশের মতাে উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে তাে আর্থসামাজিক উন্নয়নে সমবায় সমিতির প্রয়ােজনীয়তা কেমন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

 বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের সমবায় সমিতির বেশ কিছু ক্ষেত্র উল্লেখযােগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়-  কৃষি বা কৃষক সমবায় সমিতি, মৎস্যজীবী বা মৎস্যচাষী সমবায় সমিতি, মহিলা সমবায় সমিতি, শ্রমজীবী সমবায় সমিতি ইত্যাদি। 

বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। এদেশের অধিকাংশ জনগণ গ্রামে বাস করে এবং তাদের প্রধান পেশা কৃষি। তবে বাংলাদেশের অধিকাংশ কৃষক দরিদ্র। তাই বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কৃষি কিংবা কৃষক সমবায় সমিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় এদেশের সমুদ্রতীরবর্তী কিংবা নদীতীরবর্তী এলাকার লােকজন মৎস্য আহরণ কিংবা চাষে অধিক আগ্রহী। ফলে বাংলাদেশে মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের নগর অঞ্চলে অসংখ্য শিল্পকারখানা বিদ্যমান। যেখানে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে হাজারাে শ্রমিক শ্রেণি। এতে শ্রমজীবী সমবায় সমিতি আর্থসামাজিক উন্নয়নের একটা সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে হিসেবে কাজ করে । আবার বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের মহিলারা নানা ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকায় মহিলা সমবায় সমিতির মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ এবং নানা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের এগিয়ে আনা হলে বাংলাদেশ অনেকটাই এগিয়ে যাবে। সুতরাং, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে মহিলা সমবায় সমিতির গুরুত্বও প্রসংশনীয়। 

স্বাধীনতার পর থেকে দেশে অনেক সমবায় সংগঠন প্রতিষ্ঠা হয়েছে যারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নেও অবদান রাখছে। কিন্তু দেশের এবং সমাজের তুলনায় তা যথেষ্ট নয়। সরকারি পৃষ্ঠপােষকতা, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা, জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ইত্যাদির মাধ্যমে সকলকে বিশেষ করে যুবসমাজকে সমবায়ের দিকে উৎসাহিত করা যাবে। এভাবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে ধীরে ধীরে বিশ্বের বুকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

One Comment

  1. ভাইয়া, আপনার ব্যাবসায় উদ্যোগ এসাইনমেন্ট উত্তরটি মোটামুটি ভালোই। ইনশাল্লাহ, আমি আপনার এসাইনমেন্ট উত্তর থেকে আমার এসাইনমেন্ট করব।

মন্তব্য করুন

Back to top button