Uncategorized

“ব্যবসায় উদ্যোগ” এসএসসি ২০২১ দ্বিতীয় সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর

Rate this post
২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট ব্যবসায় উদ্যোগ এর উত্তর। SSC 2021 Bebsay Uddog / business entrepreneurship 2nd week Assignment Answer
"ব্যবসায় উদ্যোগ" এসএসসি ২০২১ দ্বিতীয় সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর


নির্ধারিত কাজ :
"ব্যবসায় উদ্যোগ" এসএসসি ২০২১ দ্বিতীয় সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর

নমুনা উত্তর:

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যবসায় উদ্যোগ ও উদ্যোগক্তার ভূমিকা অপরিহার্য। অর্থিনৈতিক চাকা সচল রাখার জন্য যে ক্ষেত্রটি সবচেয়ে বেশি অবদান রেখে চলেছে তা হল ব্যবসা। 

(ক) উদ্যোগ ও ব্যবসায় উদ্যোগের ধারণা:
উদ্যোগ ও ব্যাবসায় উদ্যোগের শব্দ দুইটির মধ্যে মিল থাকলেও দুইটির ধারণা একেবারেই ভিন্ন। সাধারণ অর্থে উদ্যোগ হল কোন কিছু করার পরিকল্পনা। তবে উদ্যোগ যেকোন বিষয়ের উপর হতে পারে। একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যাক। এলাকার যুবক মিলে বর্তমান করোনা পরিস্থিতে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করলো এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আরও কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করল। এটি একটি জনসেবামূলক  বা সামাজিক উদ্যোগ।
অপরদিকে লাভের আশায় ঝুঁকি আছে জেনেও ব্যবসায় পরিচালনা করাকে ব্যবসায় উদ্যোগ বলে। যিনি ব্যবসায় উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি ব্যবসায় উদ্যোগক্তা। যেমনঃ রহিম সাহেব দর্জি ব্যবসায় অনেক টাকা লোকসান করার পর সকল কিছু বিবেচনা করে লাভের আশায় মুদি ব্যবসা করার উদ্যোগ নিলেন। এটাই হল ব্যবসায় উদ্যোগ। কারণ ব্যবসায় অনিশ্চয়তা, ঝুঁকি, মুনাফা বিদ্যমান।
সুতরাং সকল উদ্যোগ কিন্তু ব্যসায়ের অন্তর্ভুক্ত নয়। অন্যদিকে, প্রতিটি ব্যবসায় শুরু হয় উদ্যোগ থেকেই। তাই বলা হয় একজন উদ্যোগক্তা জন্মগতভাবেই উদ্যোগক্তা।
(খ) ব্যবসায় উদ্যোগ গড়ে উঠার অনুকূল পরিবেশঃ
আশেপাশের পরিবেশ যেমন ব্যবসায়ের উপর প্রভাব বিস্তার করে ঠিক তেমনি ব্যবসায়ের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রয়োজন অনুকূল পরিবেশ। আমাদের দেশে মেধা ও দক্ষতার ঘাটতি না থাকলে, রয়েছে অনুকূল পরিবেশের অভাব। যার ফলে নতুন উদ্যোগক্তা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে। ব্যবসায় উদ্যোগ গড়ে উঠার জন্য অনুকূল পরিবেশের উপাদানগুলো ব্যাখ্যা করা হল। 
  • উন্নত অবকাঠামো: ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য অবকাঠামোগত উপাদানের যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস ও যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নয়ন করা প্রয়োজন। কেননা ব্যবসার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য এই সকল উপাদান থাকা আবশ্যক।
  • সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা: সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে ব্যবসা উদ্যোগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব। সরকার কর্তৃক সিদ্ধান্ত যেমন স্বল্প বা বিনা সুদে ঋণ প্রদান ও কর মওকুফ, প্রণোদনা ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যবসা উদ্যোগের সম্প্রসারণ বৃদ্ধি করা সম্ভব।
  • আর্থ-সামাজিক স্থিতিশীলতা: অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা অনেকাংশেই ব্যবসায় উদ্যোগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে সহায়তা করে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা ব্যবসায় উদ্যোগ এর পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
  • অনুকূল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিঃ অনুকূল আইন-শৃঙ্খলা ব্যবসায় স্থাপন ও পরিচালনায় সহায়তা করে। অপরদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বা অস্থিতিশীলতা ব্যবসায় স্থাপন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি করে।
  • পর্যাপ্ত মূলধনের প্রাপ্যতাঃ মূলধন হলো ব্যবসায়ের প্রাণ। যেকোন ব্যবসায় উদ্যোগের সফলতা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন অর্থ ও মূলধনের। মূলধনের স্বল্পতার কারণে বেশিরভাগ ব্যবসায় স্থাপন ও পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকিং ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। 
  • প্রশিক্ষণের সুযোগঃ কোন বিশেষ কাজ যথার্থভাবে সম্পাদন করার স্বার্থে এবং জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ একান্ত প্রয়োজন। প্রশিক্ষণ কর্মদক্ষতা ও যোগ্যতা বৃদ্ধি করে। অনেক উদ্যোক্তার মধ্যে সফল উদ্যোক্তার বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য ও গুণ জন্মগতভাবে থাকে। কিন্তু অনেক সময় উদ্যোক্তা নিজেই নিজের গুণগুলো সম্পর্কে জানে না। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যমান গুণগুলোকে আরো শাণিত করা যায় । এভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ব্যবসার জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব।

(গ) ব্যবসায় উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য:

যে কোন কিছুর উদ্যোগকে ব্যবসায় বলা যায় না। তাই কোন উদ্যোগকে ব্যবসায় উদ্যোগ বলে বিবেচিত করার জন্য নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো থাকা প্রয়োজন।
  • একজন উদ্যোক্তার সকল কার্যাবলীকে উদ্যোগ বলা হয়।  যার প্রাথমিক লক্ষ্য হলো নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
  • এটি ব্যবসায় বা শিল্প স্থাপনের একটি কর্মপ্রচেষ্টা বা পরিকল্পনা অর্থাৎ নতুন কিছু সৃষ্টির পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ব্যবসায় উদ্যোগ এর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
  • ব্যবসায় উদ্যোগকে একটি বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়। কারণ ঝুঁকি আছে জেনেও লাভের আশায় নতুন কোন ব্যবসায়ে  বিনিয়োগ ও তা পরিচালনা করা হয়।
  • ব্যবসায় সংস্থাপন সংক্রান্ত সকল কর্মকান্ড সফলভাবে পরিচালনা করতে ব্যবসায় উদ্যোগ সহায়তা করে।
  • ব্যবসায় উদ্যোগের সফলতা নির্ভর করে উদ্যোক্তার সাহস, মেধা ও সাংগঠনিক ক্ষমতা প্রদর্শনের উপর।
  • ব্যবসায় উদ্যোগ হচ্ছে সৃজনশীলতা ও নৈপুণ্য প্রদর্শনের একটি ক্ষেত্র। ব্যবসায় উদ্যোগ প্রকৃতপক্ষে একটি উদ্ভাবনকে ধারণ করে সৃষ্ট হয় এবং উক্ত উদ্ভাবনকে কর্ম ক্ষেত্রে প্রয়োগের চেষ্টা করে।
  • ব্যবসা উদ্যোগের মাধ্যমে উদ্যোক্তা শুধু নিজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে না। পাশাপাশি সে অন্যের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা করে থাকেন।
  • ব্যবসা উদ্যোগের মাধ্যমে নতুন সম্পদ সৃষ্টি হয় ফলে যেমন মূলধন গঠন হয়, তেমনি মানবসম্পদ উন্নয়ন হয়।
  • ব্যবসায় উদ্যোগ দেশের আয় বৃদ্ধি ও বেকার সমস্যার সমাধানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও অবদান রাখতে পারে।
  • ব্যবসা উদ্যোগের ফলে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি উদ্যোক্তাগণের মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ব্যবসা উদ্যোগ তাদের সমাজে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণে অনুপ্রাণিত করে।
(ঘ) আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যবসায় উদ্যোগের গুরুত্ব
উন্নয়ন বলতে বোঝায় বিদ্যমান অবস্থার ইতিবাচক ও অগ্রসরমান পরিবর্তন। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বলতে বুঝায় দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন। যেকোনো দেশের উন্নয়নে শিল্পখাত মুখ্য ভূমিকা পালন করে। ব্যবসা উদ্যোগের মাধ্যমে শিল্প খাত সহ সকল খাতের উন্নয়ন সম্ভব। তাই আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যবসায় উদ্যোগ এর অবদান বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
  • সম্পদের সঠিক ব্যবহার: ব্যবসা উদ্যোগ আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ও মানব সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে। নতুন নতুন শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব।
  • আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি: সরকারের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে দেশের শিল্প কারখানাস্থাপন পরিচালনা ও সম্প্রসারণ হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে নিত্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয় যা বেকার সমস্যা দূর করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
  • দক্ষ মানব সম্পদ সৃষ্টি: বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ আমাদের এই বিশাল জনসংখ্যায় আমাদের সম্পদ হতে পারেন কারণ ব্যবসায় উদ্যোক্তা দেশের অদক্ষ জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনশীল কাজে নিয়োজিত করে দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তর করতে পারে।
  • জাতীয় আয় ও উৎপাদন বৃদ্ধি: ব্যবসায় উদ্যোগ আমাদের জাতীয় আয় ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ব্যবসা উদ্যোগের ফলে নতুন নতুন  শিল্প স্থাপন এবং আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে একদিকে যেমন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া যায় অন্যদিকে দেশের জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা যায়।
পরিশেষে বলা যায়, ব্যবসায় উদ্যোক্তাগণ হচ্ছেন উদ্ভাবক যারা নতুন পণ্য বা সেবা সামগ্রী ও প্রচলিত কোনো পণ্য বা সেবা সামগ্রীকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেন। তাই ব্যবসা উদ্যোগের পরিবেশের উপাদানগুলোকে আরো উপযুক্ত এবং সুগঠিত করার লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি আমাদের কেউ এগিয়ে আসতে হবে।

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Back to top button