১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত যে কোন ১০টি উল্লেখযোগ্য ঘটনার সময়কালসহ একটি পোস্টার তৈরি করা হল। ৮ম শ্রেণি ২য় সপ্তাহের উত্তর ২০২১

১৭৫৭ সালের পর থেকে ১৯৪৭ সাল পর পর্যন্ত বাংলায় যে শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে
ঔপনিবেশিক শাসন বলা হয়। বাংলায় ইউরোপীয় বণিকের আগমনের পিছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল
বাংলার রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা। তাদের এই উদ্দেশ্য সফল হয়েছিল বাংলার শেষ নবাব
সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করে। এরপর অনেক সংঘাতের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল।
১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত যে কোন ১০টি উল্লেখযোগ্য ঘটনার সময়কালসহ একটি পোস্টার তৈরি করা হল।
-
পলাশী যুদ্ধ (১৭৫৭): ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এদেশে তাদের প্রতিপত্তি বিস্তার লাভ করে। আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পর ক্ষমতার উত্তরাধিকার নিয়ে নবাব পরিবারের সাথে রাজপ্রসাদের অভিজাতদের দ্বন্দ্ব হলে কোম্পানির কর্তারা এর সুযোগ নেয়। নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তার খালা ঘসেটি বেগম, মীর জাফরসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ। ১৭৫৭ সালে ২৩শে জুন পলাশীর প্রান্তরে মীর জাফর বিশ্বাসঘাতকতা করলে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় হয় এবং নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়।
-
দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা (১৭৬৫): দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা ১৭৬৫ সালে লর্ড
ক্লাইভ বাংলার নবাব থেকে দেওয়ানি সনদ প্রাপ্ত হলে যে শাসন প্রণালীর উদ্ভব হয়,
তা ইতিহাসে দ্বৈত শাসন নামে পরিচিত। মীর জাফরের মৃত্যুর পর লর্ড ক্লাইভ ১৭৬৫
সালে মোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার
দেওয়ানি লাভ করে। এই ব্যবস্থার ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রচুর অর্থনৈতিক
ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠে এবং বাংলার নবাব সামান্য বৃত্তিভোগী কর্মচারীতে পরিণত
হন।
-
ছিয়াত্তরের মন্বন্তর (১৭৭০ বাংলা ১১৭৬ ) : দ্বৈত
শাসন ছিল এ দেশের মানুষের জন্য অভিশাপ। ইংরেজরা প্রজাদের উপর অতিরিক্ত
কর আরোপ করে। কর্মচারীদের অর্থের লোভ লালসা দিন দিন বাড়তে থাকে। সে সময় দেশে পর
পর তিন বছর অনাবৃষ্টির ফলে কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৭৭০ সালে
দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে কৃষকের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। লক্ষ লক্ষ লোক অনাহারে মারা
যায়। এটি ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নাম পরিচিত।
-
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত (১৭৯৩): চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ১৭৯৩ সালে
কর্নওয়ালিস প্রশাসন কর্তৃক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সরকার ও বাংলার ভূমি
মালিকদের (সকল শ্রেণির জমিদার ও স্বতন্ত্র তালুকদারদের) মধ্যে সম্পাদিত একটি
স্থায়ী চুক্তি। এর প্রবক্তা লর্ড কর্নওয়ালিস। এ চুক্তির আওতায় জমিদার
ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় ভূ-সম্পত্তির নিরঙ্কুশ স্বত্বাধিকারী হন।
-
ভারত শাসন আইন পাস (১৮৫৮): কোম্পানি শাসনের প্রায় একশ বছর পরে
ইংরেজ অধ্যুষিত ভারতের বিভিন্ন ব্যারাকে সিপাহীদের মধ্যে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়।
এরপর ১৮৫৮ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারত শাসন আইন পাস হয়।
-
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অবসান (১৮৫৮): ভারত শাসন আইন পাস করার ফলে
১৮৫৮ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অবসান ঘটে। ভারতের রাষ্ট্র
ক্ষমতা ব্রিটিশ রাজার হাতে চলে যায়।
-
মুদ্রণযন্ত্র স্থাপন (১৮২১): বাংলার নবজাগরণের পথকে অনেকটা সুগম করেছিল
১৮২১ সালে শ্রীরামপুরে স্থাপিত প্রথম মুদ্রণযন্ত্র। এতে করে সাধারণ মানুষের
মধ্যে জ্ঞানচর্চা বৃদ্ধির পাশাপাশি শাসকদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি
হয়।
-
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা (১৮৫৭): ইংরেজরা তাদের শাসন
পাকাপোক্ত করার জন্য ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ইংরেজরা উচ্চ শিক্ষার জন্য ধর্মীয়
স্কুল স্থাপনের পাশাপাশি কলেজ স্থাপনের পিছনে জোর দেয়। অবশেষে ১৮৫৭ সালে
উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে।
-
বঙ্গভঙ্গ (১৯০৫): ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অবসানের বীজ রোপিত হয়েছিল ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনার মাধ্যমে। এ সময় বাংলার সীমানা বড় হওয়ার কারণে ইংরেজি শাসকদের পক্ষে দূরবর্তী অঞ্চলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা কঠিন ছিল। তাই সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাকে "পূর্ব বঙ্গ" ও "আসাম" দুইভাগে ভাগ করা হয়। কিন্তু শিক্ষিত বাঙ্গালি তা মেনে নিতে পারেনি কারণ তারা মনে করেন ইংরেজরা সুশাসনের অজুহাতে হিন্দু - মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ভাঙ্গন ধরাতে চাইছে। বঙ্গভঙ্গ কার্যকর না করার জন্য বাঙ্গালি হিন্দু নেতারা স্বদেশি আন্দোলন, বয়কট আন্দোলন, স্বরাজ আন্দোলন এবং সশস্ত্র আন্দোলন করে তা প্রতিহত করে। এতে করে মানুষের মধ্যে দেশপ্রেমে জাগ্রত হয়।
- ভারত বিভাজন ও ইংরেজ শাসনের অবসান (১৯৪৭): ১৯৪০ সালে মুসলিম লীগ দ্বি-জাতিত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভক্তির পরিকল্পনা করলে বাংলার জনগণ হিন্দু-মুসলমান পরিচয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে। কার্যকর হয় লাহোর প্রস্তাব। ব্রিটিশ অধীনতা থেকে মুক্তি লাভ করে পূর্ব-বাংলা। যদিও এ মুক্তি প্রকৃত স্বাধীতনা ছিল না। অবশেষে ১৯৪৭ সালে ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটে।
thank for it . কিন্তু ছবি দিলে ভালো হতো
ReplyDeleteভারত শাসনের অধিকার ব্রিটেনের রাজার কাছে নয় রানির কাছে চিলে যায়।😑
ReplyDeleteচিলে যায় নয়, চলে যায়
Deletethanks a lot
ReplyDeleteছবি দিলে ভালো হতো
ReplyDelete