➤ অথবা, ভােগে সুখ নাই, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।
➤ অথবা, ত্যাগে সুখ নাই, কর্ম-সম্পাদনেই প্রকৃত সুখ।
➤ অথবা, ভােগে সুখ নাই, ত্যাগেই মনুষ্যত্বের প্রকাশ।
➤ অথবা, ভােগে নয়, ত্যাগেই মনুষ্যত্বের বিকাশ।
মূলভাব
পরার্থে নিজেকে সবসময় নিয়ােজিত রাখতে পারার মধ্যেই প্রকৃত সুখ নিহিত। স্বার্থপরতার মাঝে কোনো সুখ নিহিত নেই বরং অন্যের স্বার্থের জন্যে কাজ করার মধ্যে লুকিয়ে আছে প্রকৃত সুখ এবং মনুষ্যত্ব
সম্প্রসারিত ভাব
ভােগ-লালসার কোনাে সীমারেখা নেই। মানুষ যত ভােগ করে, ততই তার ভােগের লালসা বেড়ে চলে। অতৃপ্ত কামনা তার হৃদয়ে এক তীব্র দহন জ্বালা ও দুঃখানুভূতির সৃষ্টি করে। দহন জ্বালা ও দুঃখানুভূতি মানুষকে স্বার্থান্বেষী করে তােলে। আর স্বার্থান্বেষী মানুষ মাত্রই বিচার-বুদ্ধিহীন। তাদের কাছে ভােগের বস্তু যত বেশিই থাকুক না কেন; সেগুলাে তাদের কাছে পর্যাপ্ত মনে হয় না। অত্যধিক ভােগ-লালসা তাদেরকে এমনভাবে পেয়ে বসে যে, তাদের কাছে যত সুখ-সম্পদই থাকুক না কেন, আরও বেশি পাওয়ার জন্য তারা সদা তৎপর থাকে। কিন্তু মানুষ সবসময় সবকিছু চাইলেই পায় না। সংগত কারণেই মানুষের সব চাওয়া পূরণ হয় না। কিন্তু এ বিষয়টি তারা সহজভাবে মেনে নিতে পারে না। ফলে না পাওয়ার দুঃখ তাদের হৃদয়কে দংশন করতে থাকে। তাদের জীবনের সকল আনন্দ নষ্ট হয়ে যায়। এমতাবস্থায় তাদের কাছে জীবন অর্থহীন মনে হয় । মনের দুঃখে তারা তখন মরণকে আহ্বান করতে থাকে। পক্ষান্তরে, সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যারা স্বজন, প্রতিবেশী, সমাজ ও দেশের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করে।
সমাজ এবং দেশের প্রতি এই দায়িত্ববােধ তাদেরকে মহান ও উদার করে তােলে। ফলে তারা স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থের চেয়ে দেশ-জাতি-সমাজ তথা মানবতার কল্যাণে সর্বস্ব বিলিয়ে দেওয়ার মাঝেই অনাবিল আনন্দ খুঁজে পায়। পৃথিবীর সব ভালো কাজের পিছনে রয়েছে কারো না কারো ত্যাগ। আর ত্যাগের মূর্ত প্রতীক হয়ে আজও আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন হযরত মুহাম্মদ (সঃ ), যীশু খ্রিষ্ট, গৌতম বুদ্ধ, রামকৃষ্ণ, সক্রেটিস, নেনসন মেন্ডেলা, মাদার তেরেসা, মহাত্মা গান্ধী প্রমুখের নাম আজও ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর। চারপাশের শত-সহস্র অসহায়-দুঃস্থ ও আর্ত-পীড়িতের সেবার মধ্যে তারা স্বর্গীয় আনন্দ লাভ করে। এ ধরনের অনাবিল আনন্দের লেশমাত্র ভােগের মধ্যে নেই। ১৯৫২ সালে ২১ শে ফেব্রুয়ারীতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার প্রমুখ সূর্যসন্তানরা যদি রাজপথে তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে জীবন উৎসর্গ না করতেন তাহলে হয়তো আমরা মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে পেতাম না। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্যে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম ও ত্যাগ বিলিয়ে দিতে হয়েছিল। জাতি হিসেবে আমরা আজও সেই ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর। তাই বলা হয়ে থাকে, ভােগে সত্যিকারের সুখ নেই; বরং পরার্থে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার মাঝেই প্রকৃত সুখ নিহিত।
মন্তব্য
যথার্থ সুখের নাগাল পেতে হলে অবশ্যই ভােগের মােহ ত্যাগ করতে হবে। ভোগ করার ইচ্ছা মানুষকে অন্যায়ের দিকে ধাবিত করে। পক্ষান্তরে ত্যাগী মানুষের নাম পৃথীর বুকে অমর হয়ে থাকে সম্মানের সাথে।
Akhon board book gulu te sundor kore totally likha thake na
Onek book thake likhte hoi
Aijonno @ hazabarolo.com onek helpful
আপনার মতামত এর জন্য ধন্যবাদ
Seriously apnr lekha onk vlo hoise
আপনার কমেন্ট এর জন্য ধন্যবাদ।