দৈনন্দিন জীবনে ১০ টি ফজিলতপূর্ণ তাসবীহ
তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর এর ফজিলত অনেক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক হাদিসে তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর এর ফযীলত বর্ণনা করেছেন।
আসুন জেনে আসি তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর এর ফযীলত সম্পর্কে।
(১) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি দৈনিক ১০০ বার বলে,
উচ্চারণঃ সুব্হানাল্লা-হি ওয়াবিহামদিহী
অর্থঃ আমি আল্লাহর সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করছি
তার পাপসমূহ মুছে ফেলা হয়, যদিও তা সাগরের ফেনারাশির সমান হয়ে থাকে। (বুখারী ৭/১৬৮, নং ৬৪০৫; মুসলিম ৪/২০৭১, নং ২৬৯১)
(২) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, যে ব্যক্তি নিম্নোক্ত বাণীটি ১০ বার বলবে,
উচ্চারণঃ লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর।
অর্থঃ একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর; আর তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।
এটা তার জন্য জন্য এমন হবে যেন সে ইসমাঈলের সন্তানদের চারজনকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করল। (বুখারী ৭/৬৭ নং ৬৪০৪; মুসলিম, তার শব্দে ৪/২০৭১ নং ২৬৯৩)
(৩) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দুটি বাক্য এমন রয়েছে, যা যবানে সহজ, মীযানের পাল্লায় ভারী এবং করুণাময় আল্লাহর নিকট অতি প্রিয়। আর তা হচ্ছে,
উচ্চারণঃ সুব্হানাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী, সুব্হানাল্লা-হিল ‘আযীম (বুখারী ৭/১৬৮, নং ৬৪০৪; মুসলিম ৪/২০৭২, নং ২৬৯৪।)
অর্থঃ ‘আল্লাহর প্রশংসাসহকারে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি। মহান আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি’।
(৪) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার- সূর্য যা কিছুর উপর উদিত হয় তার চেয়ে এগুলো বলা আমার কাছে অধিক প্রিয়। (মুসলিম, ৪/২০৭২, নং ২৬৯৫।)
(৫) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমাদের কেউ কি প্রতিদিন এক হাজার সাওয়াব অর্জন করতে অপারগ?” তাঁর সাথীদের মধ্যে একজন প্রশ্ন করে বলল, আমাদের কেউ কী করে এক হাজার সাওয়াব অর্জন করতে পারে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “যে ব্যক্তি ১০০ বার ‘সুবহানাল্লাহ’ বলবে, তার জন্য এক হাজার সাওয়াব লেখা হবে অথবা তার এক হাজার পাপ মুছে ফেলা হবে । (মুসলিম ৪/২০৭৩, নং ২৬৯৮।)
(৬) “যে ব্যক্তি বলবে,
উচ্চারণঃ সুব্হানাল্লা-হিল ‘আযীম ওয়াবিহামদিহী
অর্থঃ মহান আল্লাহর প্রশংসার সাথে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি।
তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ রোপণ করা হবে। (তিরমিযী ৫/১১, নং ৩৪৬৪; হাকেম-১/৫০১ এবং এটাকে সহীহ বলেছেন।)
(৭) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “ওহে আব্দুল্লাহ ইবন কায়েস! আমি কি জান্নাতের এক রত্নভাণ্ডার সম্পর্কে তোমাকে অবহিত করব না?” আমি বললাম, নিশ্চয় হে আল্লাহর রাসূল। তিনি বললেন, “তুমি বল,
উচ্চারণঃ লা হাউলা ওয়ালা কূওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ
অর্থঃ আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি কারো নেই। (বুখারী, ফাতহুল বারীসহ ১১/২১৩, নং ৪২০৬; মুসলিম ৪/২০৭৬, নং ২৭০৪।)
(৮) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় বাক্য চারটি, তার যে কোনটি দিয়েই শুরু করাতে তোমার কোনো ক্ষতি নেই। আর তা হলো,
উচ্চারণঃ সুবহানাল্লা-হি ওয়ালহাম্দু লিল্লা-হি ওয়ালা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার।
অর্থঃ আল্লাহ পবিত্র-মহান। সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। (মুসলিম ৩/১৬৮৫, নং ২১৩৭।)
(৯) সর্বশ্রেষ্ঠ দো‘আ হল, “আলহামদু লিল্লাহ” (উচ্চারণঃ সকল প্রশংসা আল্লাহরই।) আর সর্বোত্তম যিকির হল, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” (উচ্চারণঃ আল্লাহ ব্যতীত কোনো হক্ব ইলাহ নেই।) (তিরমিযী ৫/৪৬২, নং ৩৩৮৩; ইবন মাজাহ ২/১২৪৯, নং ৩৮০০; আল-হাকিম, ১/৫০৩ এবং সহীহ বলেছেন, আর ইমাম যাহাবী তা সমর্থন করেছেন।)
অর্থঃ “আল্লাহ পবিত্র-মহান। সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। আর আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি কারো নেই । (মুসনাদে আহমাদ নং ৫১৩; আহমাদ শাকের এর তারতীব অনুসারে, আর তার সনদ বিশুদ্ধ।)