সূরা আদিয়াত (Surah Al-Adiyat) পবিত্র কুরআন শরিফের ১০০ তম সূরা যার অর্থ অভিযানকারী। সূরাটির আয়াত সংখ্যা ১১। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়। ← পূর্ববর্তী সূরা যিলযাল পরবর্তী সূরা → সূরা ক্বারিয়াহ
সূরা আদিয়াত নাযিলের সময় ও স্থান
সূরাটি মক্কায় নাকি মদিনায় নাযিল হয়েছে তা নিয়ে অনেক মতবিরোধ থাকলেও হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) মতে সূরা আদিয়াত মক্কায় নাযিল হয়। সূরার বিষয়বস্তু এবং বর্ণনা এটারই জানান দেয় যে সূরাটি শুধু মক্কায় নয় বরং মাক্কি যুগের প্রথম দিকের সূরা।
সূরা আদিয়াতের শানে নুযূল
হিজরির অষ্টম সনের এক যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে সূরা আদিয়াত নাযিল হয়। সেই সময় আরবের ইয়াবেস উপত্যকার মুশরিকরা মুসলিমদের উপর হামলার উদ্দেশ্যে মদিনার পার্শ্ববর্তী এলাকায় উপস্থিত হয়। এ সংবাদ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর কানে আসলে তিনি মুশরিকদের প্রতিহত করার জন্য সেনাদল পাঠান যার নেতৃত্বে ছিলেন আবু বকর (রাঃ)। কিন্তু শত্রুপক্ষ খুবই শক্তিশালী ছিল বিদায় আবু বকর (রাঃ) সেখান থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
পরবর্তীতে উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) এবং আমর ইবনে আস (রাঃ) কে পাঠানো হলে তারাও ফিরে আসেন। সবশেষে হযরত আলী (রাঃ) কে নেতা নিযুক্ত করে সেনাদল নিয়ে পাঠানো হল এবং শত্রুপক্ষকে পরাস্থ করল। ইসলামের ইতিহাসে এ যুদ্ধকে বলা হয় “বাতুল আখদাল”।
বিজয়ী হযরত আলী (রাঃ) মুজাহিদদের নিয়ে মদিনায় পৌঁছানোর পূর্বেই সূরা আদিয়াত নাযিল হয়। ফজরের নামাজে মহানবী (সাঃ) এই নতুন সূরা (সূরা আদিয়াত) পাঠ করলে, সাহাবিদের প্রশ্নের জবাবে তিনি হযরত আলীর নেতৃত্বাধীন সেনাদের বিজয়ের সুসংবাদ শোনান।
সূরা আদিয়াতের আরবি বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
Go to: 10
(১
وَالْعَادِيَاتِ ضَبْحًا
শপথ উর্ধ্বশ্বাসে চলমান অশ্বসমূহের,
ওয়াল ‘আ-দিয়া-তি দাবহা-।
(২
فَالْمُورِيَاتِ قَدْحًا
অতঃপর ক্ষুরাঘাতে অগ্নিবিচ্ছুরক অশ্বসমূহের
ফাল মূরিয়া-তি কাদহা-।
(৩
فَالْمُغِيرَاتِ صُبْحًا
অতঃপর প্রভাতকালে আক্রমণকারী অশ্বসমূহের
ফাল মুগীরা-তি সুবহা-।
(৪
فَأَثَرْنَ بِهِ نَقْعًا
ও যারা সে সময়ে ধুলি উৎক্ষিপ্ত করে
ফাআছারনা বিহী নাক‘আ-।
(৫
فَوَسَطْنَ بِهِ جَمْعًا
অতঃপর যারা শক্রদলের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে-
ফাওয়াছাতানা বিহী জাম‘আ-।
(৬
إِنَّ الْإِنسَانَ لِرَبِّهِ لَكَنُودٌ
নিশ্চয় মানুষ তার পালনকর্তার প্রতি অকৃতজ্ঞ।
ইন্নাল ইনছা-না লিরাব্বিহী লাকানূদ।
(৭
وَإِنَّهُ عَلَى ذَلِكَ لَشَهِيدٌ
এবং সে অবশ্য এ বিষয়ে অবহিত
ওয়া ইন্নাহূ‘আলা-যা-লিকা লাশাহীদ।
(৮
وَإِنَّهُ لِحُبِّ الْخَيْرِ لَشَدِيدٌ
এবং সে নিশ্চিতই ধন-সম্পদের ভালবাসায় মত্ত।
ওয়া ইন্নাহূলিহুব্বিল খাইরি লাশাদীদ।
(৯
أَفَلَا يَعْلَمُ إِذَا بُعْثِرَ مَا فِي الْقُبُورِ
সে কি জানে না, যখন কবরে যা আছে, তা উত্থিত হবে
আফালা-ইয়া‘লামুইযা-বু‘ছিরা মা-ফিল কুবূর।
Go to: 10
(১০
وَحُصِّلَ مَا فِي الصُّدُورِ
এবং অন্তরে যা আছে, তা অর্জন করা হবে?
ওয়া হুসসিলা মা-ফিসসুদূর,
(১১
إِنَّ رَبَّهُم بِهِمْ يَوْمَئِذٍ لَّخَبِيرٌ
সেদিন তাদের কি হবে, সে সম্পর্কে তাদের পালনকর্তা সবিশেষ জ্ঞাত।
ইন্না রাব্বাহুম বিহিম ইয়াওমাইযিল্লাখাবীর।