সাহিত্য জাতির দর্পণস্বরূপ
ভাবসম্প্রসারণ সাহিত্য জাতির দর্পণস্বরূপ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ শ্রেণী SSC HSC JSC PSC বাংলা ২ য় পত্র।
মূলভাব
রচনায় সাহিত্যে বা একটি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা ও চিন্তা-চেতনা প্রতিফলিত হয়। সাহিত্য পাঠ করে সংশ্লিষ্ট জাতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করা যায়।
সম্প্রসারিত ভাব
সাহিত্যের সঙ্গে জাতীয় জীবনের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। জাতীয় জীবনের নানা গতিধারা ও ভাঙাগড়ার প্রতিফলন ঘটে সাহিত্যে। তবে জাতীয় চেতনার সঙ্গে সাহিত্যের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা দরকার। কেননা জাতীয় চেতনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ব্যতীত কোনাে দেশের সাহিত্যই জাতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করতে পারে না। সাহিত্য ব্যক্তি-হৃদয়ের অনুভূতি জাগ্রত করলেও তার পরিপুষ্টি ঘটে সমাজ-মানসের বিশাল অঙ্গনে। ব্যক্তির জীবনধারা ও ব্যক্তি-মান সমাজ-পরিপুষ্ট বলেই একে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়।
ব্যক্তির জীবনদৃষ্টি ও সৃষ্ট সাহিত্য যদি যুগচেতনা, ইতিহাস-ঐতিহ্য অনুসন্ধানী হয় তবে সে সাহিত্য সমাজ তথা জাতির সামগ্রিক চিন্তা-চেতনায় একটা বিরাট পরিবর্তন বয়ে আনতে পারে। সৃষ্টি জগতে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব অনস্বীকার্য হলেও মানুষের মধ্যে বিস্তৃত হয়ে আছে নানা অপূর্ণতা জীবনের সকল বােধ, বৃত্তি ও আকাঙ্ক্ষাকে সমভাবে সে বিকশিত করতে অক্ষম। মানুষ চায় অপূৰ্ণকে পূর্ণ করতে, শ্রেয়কে প্রিয় করতে। মানুষের আবেগ আকাঙ্ক্ষা, হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার প্রতিফলন ঘটে সাহিত্যে। তাই কোনাে জাতির পরিচয় পেতে হলে সর্বপ্রথম জানতে হবে সেই জাতির সাহিত্যকে। বিশ্বের প্রতিটি জাতির সাহিত্যে সেই জাতির নিজ নিজ পরিচয় উন্মােচিত হয়েছে।
দর্পণ বা আয়নায় যেমন মানুষের চেহারা ফুটে ওঠে বা ছবি দেখা যায়, ঠিক তেমনই সাহিত্যে একটি জাতির চেহারা ফুটে ওঠে বা ছবি দেখা যায়। সংগত কারণেই বাংলা সাহিত্যও এর ব্যতিক্রম নয়। আমাদের সাহিত্যের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে বাঙালি জাতির আবেগ, জীবনধারা, সংগ্রাম, শৌর্য-বীর্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। অতএব, জাতীয় উন্নয়নে সাহিত্যচর্চা অতীব জরুরি।
মন্তব্য
সাহিত্য শুধু কবির কবিতা বা সাহিত্যিকের রচনা নয়, এটি একটি জাতির সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। সুতরাং সাহিত্যের প্রতি যত্নবান হওয়া একান্ত আবশ্যক।