অনুচ্ছেদ

অনুচ্ছেদ “পর্যটন শিল্প”

Rate this post
পর্যটন শিল্প অনুচ্ছেদ লিখন ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ শ্রেণি

পর্যটন শিল্প

মানুষের একে অপরকে জানার আগ্রহ থেকেই পর্যটনের বিকাশ ঘটেছে। হয়ত পর্যটনের নামে নয়, কিন্তু পর্যটন বিষয়টি অনেক পুরাতন। মার্কোপােলাে, ইবনে বতুতা, ফাহিয়েন, হিউয়েন সাং-সহ বিশ্ববিখ্যাত পর্যটকরা ইতিহাসে স্থায়ী হয়ে আছেন, সেই সময়ে যখন যােগাযােগের ব্যবস্থা ছিল খুবই কষ্টকর, সেই সময়েও ভ্রমণপিপাসুরা ঘুরে বেড়েয়িছেন দেশে দেশে। এসব বিখ্যাত পর্যটকের অনেকেই এ উপমহাদেশে এসেছিলেন যে কথা আমরা ইতিহাস থেকে জানতে পাই। আজ পর্যটনের যে ধারণা প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে পৃথিবীব্যাপী, দেশে দেশে গড়ে উঠেছে সমৃদ্ধ পর্যটন শিল্প , লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে দেশ-দেশান্তরে।

পর্যটন এমনই এক অর্থনৈতিক খাত যেখানে প্রচুর বিনিয়ােগ না করেও বিপুল আয় করা সম্ভব। পর্যটনের জন্য তেমন নতুন কিছু সৃষ্টি করতে হয় না। শুধু প্রকৃতি প্রদত্ত উপকরণকে রূপান্তরের মাধ্যমে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করলেই চলে। পর্যটন স্পটগুলােকে সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করলেই এ খাতে বিপুল আয় করা সম্ভবপর। বিশ্বের অনেক দেশ আছে যাদের জাতীয় আয়ের বিরাট অংশই পর্যটন খাত হতে আসে। বাংলাদেশ একটি সুপ্রাচীন দেশ। প্রাচীনত্বের গরিমায় বাংলা সারা বিশ্বে পরিচিত। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজরাজাদের পৃষ্ঠপােষকতায় এ-দেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি দারুণভাবে উন্নতি লাভ করেছে। আমরা জানি খ্রিস্টপূর্বকালে বিশ্ব জয় করেছিল বাংলার মসলিন। পৃথিবীব্যাপী এদেশের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল সােনারগাঁও-এ তৈরি সূক্ষ্ম বত্র মসলিনের মাধ্যমে। দেশের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও ইতিহাস বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করে দেশের জন্য আর্থিক সমৃদ্ধি আনয়ন করেছে।

বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা বর্তমান। কেননা, পৃথিবীর সবচেয়ে বড়াে ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন(Sundarbans) রয়েছে বাংলাদেশে যা বিশ্ববাসীর মনােযােগ আকর্ষণে রাখতে পারে ব্যাপক ভূমিকা। আমাদের রয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত যা অবিচ্ছিন্নভাবে ১২০ কিলােমিটার দীর্ঘ। আরাে একটি কারণে বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে গৌরবজনক আসন অলংকৃত করে আছে, তা একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বস্তুত ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের দেশটি যেন প্রাকৃতিক এক মিউজিয়াম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর উপমহাদেশের এ দেশটি তাই মন-মাতানাে, দৃষ্টিনন্দন এবং কবি লেখক তৈরিতে সহায়ক হয়েছে। চোখ জুড়ানাে মন ভুলানাে এ দেশ আমার আপনার গর্ব। এর সৌন্দর্যে বিভাের হয়ে কবি পেয়েছে ভাষা, মানুষ পেয়েছে আশা। পর্যটক চোখ খুলে মন ভরে উপভােগ করে এর সৌন্দর্য, মেটায় অন্তরের তৃষ্ণা ভ্রমণের মাধ্যমে। বাংলাদেশের অনুপম নিসর্গ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পর্যটন শিল্প প্রসারের অনন্য উপাদান। এ অনুপম নৈসর্গিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উপভােগের জন্য বাংলাদেশে যুগে যুগে হাতছানি দিয়েছে কাছের ও দূরের ভ্রমণপিপাসুদের। তারা অবাক হয়ে দেখেছে এই পৃথিবীতে এমন একটি দেশ আছে যা ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা, সবুজ শ্যামল প্রকৃতিময় আর আছে সুখ-শান্তি সমৃদ্ধির অফুরন্ত ভাণ্ডার। সম্প্রতি দেশে উৎসাহজনকহারে বাড়ছে বিদেশি পর্যটক ও পর্যটক খাত থেকে আসা বৈদেশিক মুদ্রার আয়। তবে প্রতিবেশি দেশগুলাের তুলনায় তা অতি ক্ষুদ্র। বর্তমানে বাংলাদেশের পর্যটন খাতের সম্ভাবনা আরাে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button