
On-page-SEO: বলা হয়ে থাকে “কন্টেন্ট ইস দ্যা কিং” কথাটার মাহাত্ম অনেক। ওয়েবসাইট বা পোস্ট সার্চ ইঞ্জিনে (Search Engine) রেঙ্ক করার জন্য এসইও অপটিমাইজড আর্টিকেল লিখতে হয়। আপনার আর্টিকেলটি কীভাবে লিখনে গুগল সার্চে রেঙ্ক পাবেন এটাই হল অন পেজ এসইও।
মূলত SEO এর জন্য On-page-SEO কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। আজ আমরা এর খুঁটিনাটি ও প্রোফেসনাল অন পেজ এসইও টেকনিক নিয়ে বিস্তারিত জানবো।
চলুন শুরু করা যাক…………
অন পেজ এসইও কি? (What is On-Page-SEO)
অন পেজ এসইও কি তা বলার আগে এসইও (SEO) কি তা জানা দরকার। ওয়েবসাইট বা পোস্টকে সার্চ ইঞ্জিনে রেঙ্ক করার জন্য অপটিমাইজেশনের কাজগুলোকে বলা হয় এসইও (Search Engine Optimization)
অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিনে রেঙ্ক করার জন্য যা যা করা হয় সবই এসইও।
অন্যদিকে ওয়েবসাইটের ভিতরে যে এসইও করা হয় তা হল অন পেজ এসইও (On-Page-SEO). এখন প্রশ্ন আসতে পারে ওয়েবসাইটের ভিতরে আবার কি? বুঝিয়ে বলছি।
আমি এখন অন পেজ এসইও নিয়ে লিখছি। আমার পোস্টটিকে সার্চ ইঞ্জিনে রেঙ্ক করানোর জন্য, পোস্ট লিখা থেকে শুরু করে পাবলিশ করা পর্যন্ত যেসকল এসইও টেকনিক আমি প্রয়োগ করেছি তাদেরকে বলা হয় অন পেজ এসইও। পরবর্তীতে আমি আমার পোস্টটিকে বিভিন্ন সোশিয়াল নেটওয়ার্ক (যেমন: ফেসবুক, টুইটার) এ শেয়ার করবো, গেস্ট পোস্ট করে ব্যাকলিংক নিবো, এগুলো হল অফ পেজ এসইও (Off-Page-SEO)
অন পেজ এসইও কেন গুরুত্বপূর্ণ? (Why On-page SEO is Important)
একটি সমীকরণ আছে, বেশি ট্রাফিক = বেশি ইনকাম। অৰ্থাৎ ওয়েবসাইটে ট্রাফিক যত বেশি হবে ইনকাম ততই বেশি হবে। আমরা যারা ব্লগিং করি তাদের মূল টার্গেট হল অর্গানিক ট্রাফিক পাওয়া এবং ব্লগিং করে ইনকাম করা।
পূর্বে গুগল সার্চ এলগোরিদম যেভাবে কাজ করতো বর্তমানে সেভাবে কাজ করে না। আগে পোস্টের ভিতর কিওয়ার্ড টাইপ করে দিলেই হল। কিন্তু দিন দিন গুগল সার্চ এলগোরিদম স্মার্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন আর শুধু কিওয়ার্ডকে একমাত্র রেঙ্কিং ফেক্টর হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।
ধরুন আপনি অনলাইনে ইন্সুরেন্স সেবা দিয়ে থাকেন। আপনার কম্পিটিটর থাকবে এটাই স্বাভাবিক। যারা অনলাইনে ইন্সুরেন্স সেবা লিখে সার্চ দিবে তারা প্রথম পেজে থাকা লিংকগুলো থেকে সেবা নিবে। তাই না। ধরে নিচ্ছি প্রথম পেজে আপনার লিংকটি স্থান পেয়েছে কিন্তু অনেক নিচে। আপনার উপরে যারা আছে তারা একই কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করেছে। তাহলে তারা কেনো আপনার উপরে স্থান পেলো?
এর উত্তর হল অন-পেজ-এসইও।
উপরের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন সার্চ রেঙ্কিংএ থাকা সবগুলো পোস্টের কিওয়ার্ড হলো “অধ্যবসায়”. সবাই যদি একই কিওয়ার্ড নিয়ে এসইও করে তাহলে সার্চ ইঞ্জিন কাকে প্রথমে রেঙ্ক করাবে? এমন প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক। সহজ উত্তর যে ভালো করে অন পেজ এসইও করেছে তাকেই গুরুত্ব দেওয়া হবে।
আশা করি, অন পেজ এসইও’র গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
এসইও-এর জন্য কন্টেন্ট অপটিমাইজ করা
আপনারা হয়তো বুঝতে পেরেছেন অন পেজ এসইও সার্চ রেঙ্কিং এ কেমন প্রভাব ফেলে। এখন আমরা জানবো কন্টেন্ট অপটিমাইজ কীভাবে করলে সার্চে রেঙ্কিং পাওয়া যায়।
আপনার ওয়েবপোস্ট বা পেজের জন্য কিওয়ার্ড অপ্টিমাইজেশন কীভাবে করবেন তার একটি ধারণা এই চ্যাপ্টারে দেওয়ার চেষ্টা করব।
প্রথমেই টাগের্ট কিওয়ার্ড ব্যবহার করা
আপনি যে কিওয়ার্ড নিয়ে আর্টিকেল লিখছেন সেই কিওয়ার্ড অবশ্যই আর্টিকেলের শুরুতে ১০০ থেকে ১৫০ শব্দের মধ্যে একবার রাখবেন। আপনার কিওয়ার্ড যদি প্রথম পেরাগ্রাফের মধ্যে না থাকে তাহলে সার্চ ইঞ্জিন সঠিকভাবে আপনার আর্টিকেলটি কি নিয়ে লিখছেন তা সহজে বুঝতে পারবে না।
আমার এই পোস্টার দিকে একটু নজর দেন তাহলে দেখতে পাবেন আমি “অন পেজ এসইও” এই কিওয়ার্ডটি টার্গেট করে আর্টিকেল লিখেছি এবং প্রথম ১০০ শব্দের মধ্যে কিওয়ার্ডটি রেখেছি।
এটা কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ?
কিওয়ার্ড যখন আর্টিকেলের শুরুতে থাকবে গুগল এটিকে অধিক গুরুত্ব দিবে।
একটুভেবে দেখুন, আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে একটি আর্টিকেল পাবলিশ করলেন। আপনার আর্টিকেলটি যদি সত্যি ডিজিটাল মার্কেটিং উপর হয়ে থাকে, তাহলে এটা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে যদি আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শব্দটি আর্টিকের মাঝখানে লিখেন।
নিশ্চই না।
সুতরাং আর্টিকেলের প্রথম ১০০ শব্দের যেকোন জায়গায় কিওয়ার্ড রাখুন। এতে করে গুগল খুব সহজে বুঝতে পারবে আর্টিকেলটিতে কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
পোস্ট টাইটেল-এ H1 ট্যাগ ব্যবহার করা
H1 ট্যাগ হল ছোট একটি টাইটেল।
গুগল H1 ট্যাগ বুঝতে পারে এবং পেজের কাঠামো সহজভাবে অনুধাবন করতে পারে।
জনপ্রিয় ব্লগিং প্লাটফর্ম (যেমন: ওয়ার্ডপ্রেস ও ব্লগার) – এ পোস্ট টাইটেল H1 ট্যাগ থাকে। যদি থাকে তাহলে আপনাকে কিছু করতে হবে না।
তবে সবক্ষেত্রে যে থাকে তা কিন্তু নয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে সাইটের কোড চেক করতে হবে। এবং আরও চেক করতে হবে H1 ট্যাগের ভিতর কিওয়ার্ডটি আছে কিনা।
সাবহেডিং (H2 ট্যাগ)
আপনার কিওয়ার্ডটি কম করে হলেও অন্তত একবার সাবহেডিং (H2 ট্যাগ) – এ রাখুন এবং সাবহেডিংকে H2 ট্যাগ ব্যাবহার করুন।
অনেকে মনে করেন H2 ট্যাগ অন পেজ এসইওর জন্য তেমন সুবিধা নিয়ে আসতে পারে না। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমার দীর্ঘ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, H2 ট্যাগ এর ভিতর কিওয়ার্ড দিলে এটা মেজিকের মত কাজ করে। অনেকটা বড়শি দিয়ে মাছ ধরার মত।
উপরের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন, আমিও এই কৌশলটি নিজের ব্লগে ব্যবহার করি। এখানে দেখতে পাচ্ছেন আমি H2 ট্যাগ এর ভিতর কিওয়ার্ড (কিওয়ার্ড রিসার্চ) রেখেছি।
কিওয়ার্ড এর সংখ্যা
আর্টিকেলে কিওয়ার্ড কতবার লিখছেন তা গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা অনেকেই Keyword Frequency শব্দটি শুনেছেন। এত মানে হল আর্টিকেলে কতবার কিওয়ার্ড উল্ল্যেখ করেছেন।
আসলে ঠিক কতবার কিওয়ার্ড ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। একই কিওয়ার্ড একাধিকবার ব্যবহার করলে সার্চে রেঙ্ক পাওয়া যায়, গুগল এটা মানতে চায় না। কিন্তু এসইও এক্সপার্টরা বিশ্বাস করেন কিওয়ার্ড একাধিকবার ব্যবহার করলে ভালো রেঙ্ক পাওয়া যায়।
বিষয়টি যদি অন্যভাবে চিন্তা করা যায় তাহলে কেমন হয়?
মনে করুন আপনার একটি পোস্ট রয়েছে, গুগল মনে করছে একটি নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড নিয়ে পোস্ট লিখা হয়েছে। অথচ, আপনি কিওয়ার্ডটি মাত্র একবার ব্যবহার করেছেন।

কিন্তু আপনি কিভাবে নিশ্চিত হবেন যে পোস্টি উমুক কিওয়ার্ড নিয়ে লিখা? উত্তরটি কমেন্ট করে জানাবেন।
অন্যদিকে, কিওয়ার্ডটি যদি পোস্টে অনেকবার (যেমন ১০বার) উল্লেখ থাকতো তাহলে গুগল আরও বেশি নিশ্চিত হতে পারতো। এবং বুঝতে পারতো পোস্টটি আসলেই উমুক কিওয়ার্ড নিয়ে লিখা।

এখানে বলে রাখা ভালো, অনেকে ভাবতে পারেন কিওয়ার্ড বেশি ব্যবহার করলে তা হয়তো কিওয়ার্ড স্টাফিং হয়ে যাবে।
আসলে নেচেরালভাবে যদি কয়েকবার কিওয়ার্ড ব্যবহার করেন তাহলে তা কিওয়ার্ড স্টাফিং নয়। অনেকেই এমনভাবে পোস্ট লিখেন যেখানে কিওয়ার্ডের সাথে টপিকের কোন সামঞ্জস্য নেই।
আসল কথা হল আপনি একাধিকবার কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। তবে অতিরিক্ত কখন ভালো নয়।
এক্সটার্নাল (Outbound) লিংক
এক্সটার্নাল লিংক গুগলকে এটা বুঝাতে সাহায্য করে যে আপনি যে টপিকটি কি বিষয়ের উপর লিখেছেন। গুগল আরও বুঝতে পারে আপনার ওয়েবপেজটি মানসম্পন্ন তথ্যের একটি কেন্দ্র।
রোবট অনলাইনের করা ১০ টি নতুন সাইটের উপর জরিপ করা হয়। সেখানে অর্ধেক সাইটে অর্থোরিটি সাইটের লিংক দেওয়া হয় এবং বাকি অর্ধেক সাইট কোন এক্সটার্নাল (Outbound) লিংক দেওয়া হয় নাই।
যারা এক্সটার্নাল দিয়েছে তারা সার্চে প্রথমে স্থান পেয়েছে।
URL অপ্টিমাইজ করা
URL হল সাইটের পেজ বা পোস্টের লিংক। পূর্বে URL কে SEO এর জন্য এতো গুরুত্ব দেওয়া হতো না। কিন্তু বর্তমান সময়ে রেঙ্কিং ফেক্টর হিসাবে URL Structure কি টনিক হিসাবে দেখা হয়।
SEO Friendly URL কিভাবে তৈরী করবেন?
জাস্ট দুইটা জিনিস মাথায় রাখবে-
- URL অবশ্যই ছোট রাখবেন।
- URL – এ কিওয়ার্ড রাখুন
খুবই সহজ তাই না। আপনি চাইলে কিওয়ার্ড এর সাথে অতিরিক্ত শব্দ যোগ করতে পারেন।
উদাহরণস্বরূপ, প্রফেশনাল কিওয়ার্ড রিসার্চ কিভাবে করবেন এই পোস্টে কিওয়ার্ড “কিওয়ার্ড রিসার্চ” কিওয়ার্ডটি আমি আমার পোস্টার URL – এ রেখেছি।

টাইটেল ও ডিস্ক্রিপশন ট্যাগ
এই চ্যাপ্টারে আমরা জানবো এসইওর জন্য কিভাবে টাইটেল ও ডিস্ক্রিপশন ট্যাগ অপ্টিমাইজশন করবো।
গুগল তাদের এক টুইটে বলেছিলো “টাইটেল ইস এ গুড রেঙ্কিং ফেক্টর”
একইভাবে ডিস্ক্রিপশন সার্চ ইঞ্জিন ও ভিজিটরদেরকে জানান দেয় পোস্টটির বিষয়বস্তু কি।
সুতরাং, আপনি যদি জানতে চান টাইটেল ও ডিস্ক্রিপশন ট্যাগ অপ্টিমাইজশনের টেকনিক তাহলে এই অধ্যায়টি আপনার জন্য।
টাইটেলের শুরুতে কিওয়ার্ডের ব্যবহার
অন পেজ এসইওর জন্য টাইটেল ট্যাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আপনি কোন বিষয়ের উপর আর্টিকেলটি লিখেছেন টাইটেল ট্যাগ দেখে সার্চ ইঞ্জিন তা বুঝতে পারে।
আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, টাইটেলের শুরুতে যদি কিওয়ার্ডটি দেওয়া যায় তাহলে সার্চ ইঞ্জিনে পোস্টির গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।

প্রশ্ন করতে পারেন, সবসময় কি কিওয়ার্ড টাইটেলের শুরুতে দিতে হবে?
না। টাইটেলর শুরুতে কিওয়ার্ড সবসময় অর্থবোধক হবে এমনটা নয়। এখানে বুঝানো হয়েছে, টাইটেলের খুব কাছাকাছি কিওয়ার্ডটিকে রাখা।
আপনারা নিশ্চই long tai keyword এর নাম শুনেছেন। দুই বা এর অধিক কিওয়ার্ডগুলোকে লং টেইল কিওয়ার্ড বলে।
টার্গেটেড কিওয়ার্ড এর সাথে এমনকিছু ওয়ার্ড যুক্ত করে সেটিকে যদি লং টেইল কিওয়ার্ড-এ রূপান্তর করা যায় তাহলে অর্গানিক ট্রাফিক অধিক পাওয়া যায়।
উদাহরণস্বরূপ,
আপনি SEO Tools আপনার টার্গেটেড কিওয়ার্ড। এখন এরসাথে যদি SEO Tools for Free, SEO Tools for Beginners, 25+ Free SEO Tools যুক্ত করা হয় তাহলে এগুলো long tai keyword হয়ে যাবে ।
ইউনিক ডিস্ক্রিপশন
Google’s Search Engine Optimization Starter Guide বলা হয়েছে, “প্রতিটি পেজের জন্য মেটা ডিস্ক্রিপশন দেওয়া SEO এর জন্য ভালো।”
শুধু তাই নয়, গুগল অসংখ্য লিখায় মেটা ডিস্ক্রিপশনের কথা উল্ল্যেখ। করেছে।
কিন্তু বর্তমানে গুগল তার সার্চ রেজাল্টে মেটা ডিস্ক্রিপশনকে তেমন গুরুত্ব দেয় না। তাহলে প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে মেটা ডিস্ক্রিপশন দিয়ে কি লাভ? কে
এটা ঠিক যে পূর্বে গুগল মেটা ডিস্ক্রিপশনকে গুরুত্ব দিলেও বর্তমানে তেমন গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু মেটা ডিস্ক্রিপশন Organic CTR বাড়াতে সাহায্য করবে।
অন পেজ এসইওর জন্য মেটা ডিস্ক্রিপশন কিভাবে লিখবো?
মেটা ডিস্ক্রিপশনর জন্য আমি নিচের ফর্মুলাটি ব্যবহার করি।

মেটা ডিস্ক্রিপশন লিখার ক্ষেত্রে একটু বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করতে হবে। কারণ ১৫০ টি বর্ণ দিয়ে আপনাকে একটি আকর্ষণীয় সারাংশ লিখতে হবে। আপনার কিওয়ার্ডটি একবার ডিস্ক্রিপশনে অন্তর্ভুক্ত করুন।
কারণ, গুগল সার্চ রেজাল্টে কোয়ারিগুলো বোল্ড করে দেখায়।

এসইও কন্টেন্ট লিখা
আমরা যারা আর্টিকেল পাবলিশ করি তাদের একটাই চাওয়া থাকে, পোস্টটি যেন গুগল এক নম্বর রেঙ্কিং-এ থাকে।
কিন্তু পোস্টটি এসইও ফ্রেন্ডলি হলো কিনা সেটাও তো ভাবা দরকার। কোনরকম করে আর্টিকেল লিখে দিলেই যে রেঙ্কিং হয়ে যাবে এমনটা ভাবা বোকামি। কারণ গুগল সার্চ এলগোরিদম অনেক বেশি স্মার্ট ও জটিল।
তাই এসইও কন্টেন্ট লিখার জন্য তিনটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন:
- ইউনিক কন্টেন্ট
- ভেলুয়েবল কন্টেন্ট
- লোকেরা কোনো সার্চ করবে তার লক্ষ্য খুঁজে বের করা
এই অধ্যায় থেকে আমরা জানবো কিভাবে উপরের তিনটি পয়েন্টকে কাজে লাগিয়ে এসইও কন্টেন্ট লিখা যায়।
ইউনিক কনটেন্ট
আগেও বলেছি ইউনিক কনটেন্ট গুগলের কাছে পছন্দনীয়। এবং এটি ইউজারদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব পায়।
অনেকেই মনে করে থাকেন ডুপ্লিকেট কনটেন্টও রেঙ্ক হয়। হ্যা। আমিও একমত। কিন্তু আপনি যদি রেঙ্ক ধরে রাখতে চান তাহলে ইউনিক কনটেন্ট – এর বিকল্প নেই।
ইউনিক ও এভারগ্রীন কনটেন্ট সহজে ব্যাকলিংক পেতে পারে। এটাও সার্চ রেঙ্কিং এর জন্য ভালো কাজ দেয়।
এমন কিছু টপিক খুঁজে বের করুন যা ইতোপূর্বে আর কেউ দেয় নি, অথবা দিলেও কোন কোন বিষয়গুলো আলোচনা থেকে বাদ পড়েছে তা খুঁজে বের করে আপনি সে টপিক নিয়ে লিখতে পারেন।
অনেকেই মনে করেন কিওয়ার্ড অধিক ব্যবহার করলে সার্চে টপে আসা যায়। কিওয়ার্ড অন পেজ এসইওর জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু এটা একমাত্র রেঙ্কিং ফেক্টর না।
কম কিওয়ার্ড ব্যবহার করেও শুধুমাত্র ইউনিক কনটেন্ট দিয়ে রেঙ্ক পাওয়া যায়।
ভেলুয়েবল কন্টেন্ট
একবার ভাবুন তো যাদের জন্য কনটেন্ট লিখছেন তাদের কাছে আপনার পোস্টটি আসলেই কি মূল্যবান?
প্রতিদিন মিলিয়ন মিলিয়ন ব্লগ পোস্ট হচ্ছে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এতো এতো কনটেন্ট-এর মধ্যে টিকে থাকতে হলে অবশ্যই আপনার কনটেন্টটি সুপার ভেলুয়েবল হতে হবে।
কিছু বিষয় মাথায় রেখে যদি ব্লগ পোস্ট করেন তাহলে আপনার কনটেন্ট ভেলুয়েবল হতে পারে।
- কিওয়ার্ড রিসার্চ: আপনার কিওয়ার্ডটির চাহিদা কেমন আছে তা প্রথমেই নির্ণয় করুন। লো ভ্যালু কিওয়ার্ড এড়িয়ে চলুন। অথাৎ পোস্ট লিখার পূর্বে কিওয়ার্ড রিসার্চ করে নিন।
- বিশদ বিবরণ: ভিজটদের কাছে যত সহজ ও সাবলীলভাবে কনটেন্ট তুলে ধরবেন কনটেন্ট ভ্যালু ততই বাড়বে। আপনার কনটেন্টকে আকর্ষণীয় করার জন্য ইমেজ, স্ক্রিনশুট, ইনফোগ্রাফ, ভিডিও ইত্যাদি ব্যবহার করুন।
- উদাহরণ ও কেস স্টাডি: আপনার ব্লগ পোস্টে যদি সুযোগ থাকে তাহলে উদাহরণ ও কেস স্টাডি যুক্ত করতে পারেন। যেমন আপনি যে টপিক নিয়ে লিখছেন সে রিলেটেড কোন রিয়েল এক্সাম্পল থাকলে বা আপনি কোন বিষয় নিয়ে রিসার্চ করেছেন তার ফাইন্ডিংসগুলো যদি পোস্টে যুক্ত করতে পারেন তাহলে কনটেন্ট ভেলু বাড়বে।
- নতুন উপডেট যুক্ত করা: এভার গ্রিন কনটেন্ট-এ ভিজিটর আকর্ষণ বেশি থাকে। তাই আপনার পুরোনো পোস্টে যদি নতুন কোন উপডেট আসে তাহলে ভিজিটরদের কাছে তার গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে যায়।
- পোস্টকারীর সম্পর্কে তথ্য: অনেকেই এমন কনটেন্ট লিখেন যেখানে তার কোন অভিজ্ঞতাই নেই। আপনি যে বিষয়ে জানেন সে বিষয়ে কনটেন্ট লিখলে তার গ্রহণযোগ্যতা বেশি। তাই যিনি কনটেন্ট লিখছেন তার সম্পর্কে ছোট তথ্য অবশ্যই দিবেন।
এভাবে আপনি আপনার ব্লগ পোস্ট ভিজিটরদের কাছে ভেলুয়েবল ও আকর্ষণীয় করতে পারেন। মনে রাখবেন, ভালো কনটেন্ট সাইটের রেঙ্ক অনেক বাড়িয়ে দেয়। কনটেন্ট ভালো মানেই বেশি শেয়ার, বেশি ব্যাকলিংক।
সার্চ ইনটেন্ট
ইউনিক ও আকর্ষণীয় কনটেন্ট রেঙ্কিং এর জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রেঙ্ক ধরে রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই সার্চ ইনটেন্ট মাথায় রাখতে হবে।
সার্চ ইনটেন্ট মানে কি? মানে হল গুগল সার্চকারীরা যেটা সার্চ দিচ্ছে এক্সেক্ট সেটা আপনার পেজ বা পোস্টটে আছে কিনা। অর্থাৎ, সার্চকারীর চাওয়া আপনার পেইজ পূরণ করতে পারলে আপনি সার্চ ইনটেন্ট এর শর্ত পূরণ করেছেন।
CTR বৃদ্ধি করা
Click through rate (CTR) দুইটি কারণে আপনার সাইটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত, CTR গুগল রেঙ্কিং ফেক্টর হিসেবে কাজ করে।
দ্বিতীয়ত, CTR বেশি মানে আপনি সার্চ ইঞ্জিন থেকে বেশি ভিজিটর পাবেন।
এই অধ্যায় থেকে আমরা জানবো কিভাবে CTR বৃদ্ধি করে বেশি অর্গানিক ট্রাফিক পাওয়া যায়।
টাইটেল ট্যাগে প্রশ্নের ব্যবহার
আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন? রেঙ্কিং এ টপে থাকার পরেও আপনি কেনো বেশি ট্রাফিক পাচ্ছেন না?
এর কারণ হলো আপনার টাইটেলটি আকর্ষণীয় হয়নি। তাই CTR কম।
এক নিরীক্ষায় দেখা গেছে, যেসকল পোস্ট টাইটেলে প্রশ্নবোধক ব্যবহার করা হয়েছে তাদের CTR অন্যদের থেকে বেশি।
মেটা ডিস্ক্রিপশন চেক করা
CTR কম হওয়ার প্রধান কারণ হতে পারে আপনি মেটা ডিস্ক্রিপশন দিতে ভুলে গেছেন অথবা কিওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করেননি।
অধ্যায় ১ এ সম্পর্কে উল্ল্যেখ করা হয়েছে। আপনার মেটা ডিস্ক্রিপশন যদি আকর্ষণীয় না হয় তাহলে এতে ক্লিক স্বাভাবিকভাবে কম হবে।
তাই আমার পরামর্শ থাকবে আপনার সাইট অডিট করে মিসিং মেটা ডিস্ক্রিপশন খুঁজে বের করে তাতে মেটা ডিস্ক্রিপশন যুক্ত করা।
Review or FAQ Schema এর ব্যবহার
যদিও Schema সরাসরি সার্চ রেঙ্কিং তেমন প্রভাব ফেলে না। কিন্তু এটি আপনার CTR বাড়াতে পারে।
গুগল অনেক সময় Rich Snippets রেজাল্ট দেখিয়ে থাকে। এতে ভিজিটররা বেশি ক্লিক করে থাকে।
এক নিরীক্ষায় দেখা গেছে Review Schema – তে ভিজিটরদের আগ্রহ বেশি।

এবং FAQ Schema
আপনার পোস্টার Schema ঠিক আছে কিনা তা নিজেই দেখতে পারেন Structured Data Testing Tool ব্যবহার করে।
বর্তমান বছর টাইটেল ও ডেসক্রিপশনে যুক্ত করা
টাইটেল ও মেটা ডেসক্রিপশনে বর্তমান বছর যুক্ত করলে CTG বেশি পাওয়া যায়। আপনি নিজের দিক থেকে ভাবুন তো সার্চ রেজাল্টে দেখানো লিঙ্কগুলোর মধ্যে বর্তমান বছর উল্ল্যেখ আছে এমন লিংকে ক্লিক করবেন নাকি বছর উল্ল্যেখ নেই এমন লিংকে ক্লিক করবেন?
নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন

টাইটেলে বছর যুক্ত করার কারণে সকলেই মনে করবে আপনার ব্লগ পোস্টটি উপ টু ডেট আছে।
তাছাড়া সব পোস্টার সাথে বছর উল্ল্যেখ করাও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তাই কখন ব্যবহার করবেন এটা আপনাকে বের করতে হবে।
অ্যাডভান্সড এসইও টিপস
এটি ও পেজ এসইওর শেষ অধ্যায়।
আমরা জেনেছি কিভাবে টাইটেল, ডেসক্রিপশন, H1 ট্যাগ অপ্টিমাইজ করতে হয়। এই অধ্যায় থেকে আমরা আরও কিছু এসইও টিপস জানবে যেটি অন পেজ এসইওর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ওরিজানল ইমেজ ব্যবহার
আপনি কি কনটেন্টের সাথে স্টক ইমেজ ব্যবহার করেন?
বেশ! কিন্তু স্টক ইমেজ আপনার এসইওকে নষ্ট করে দিতে পারে। অনেকে জানেন না স্টক ইমেজ গুগল রেঙ্কিং ফেক্টর হিসেবে কাজ করে। এসইও এক্সপার্টরা মনে করেন ডুপ্লিকেট ইমেজ গুগল সার্চে ভালো রেঙ্ক হয় না।
তাই একই ইমেজ অনেকেই ব্যবহার করেছে এমন ইমেজে একটু মডিফাই করে দেওয়া ভালো।
ইন্টারলিংকিং
ইন্টারনাল লিংক এসইওর জন্য আশীর্বাদ। কারণ আপনার হাই অথরিটি পেজ থেকে যদি লো অথরিটি পেজর ব্যাকলিংক দেন তাহলে লো অথরিটি পেজটির এসইও স্কোর অনেকটাই বেড়ে যায়।
আমার হাই অথরিটি পেজ SEMRush এর টুলস ব্যবহার করে তার একটি তালিকা করি এবং সেখানে লো অথরিটি পেজর keyword-rich anchor text লিংক দিয়ে দেই।

পেজ স্পিড
পেজ স্পিড কি এসইওতে ইফেক্ট ফেলে?
হ্যা। পেজ লোড হতে টাইম বেশি লাগলে ট্রাফিক দ্রুত সাইট থেকে বের হয়ে যায় এবং পরবর্তী রেজাল্টের লিংকে ভিজিট করে। এটি যদি বেশি হয় তাহলে আপনার রেঙ্ক হওয়া পোস্টটি আস্তে আস্তে রেঙ্ক হারিয়ে ফেলবে।
পেজ স্পিড বুস্ট করার জন্য gtmetrix সাইট থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
ইমেজ অপটিমাইজেশন
পূর্বেই বলেছি ইমেজ এসইও জন্য রেঙ্কিং ফেক্টর। তাই ইমেজ এসইও ফ্রেন্ডলি হওয়া চাই।
ইমেজে টাইটেল ট্যাগ ও ALT ট্যাগ অবশ্যই ব্যবহার করুন।
সম্ভব হলে ইমেজের টাইটেল ট্যাগে কিওয়ার্ড যুক্ত করুন।

যদি একাধিক ইমেজ হলে তাহলে একই কিওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। রিলেটেড কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন। (এসইও, এসইও চার্ট)
ইমেজে টাইটেল ট্যাগ থাকলে গুগল সার্চ সহজে বুঝতে পারে পেজটি কি সম্পর্কে।
png, jpg ফরমেট-এর ছবি WEBP তে কনভার্ট করে দিতে পারেন। আমি আমার পোস্টে WEBP ফরমেটের ছবি আপলোড করে থাকি। অনলাইন এটি খুব সহজেই করা যায়। WEBP কনভার্ট করার জন্য এই লিংকটি দেখতে পারেন।
আশা করি অন পেজ এসইও (On Page SEO) কীভাবে করবেন ও এর খুঁটিনাটি সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন। আমি আমরা ব্লগ পোস্টের জন্য যেসকল টিপস ব্যবহার করি তা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আপনারা কোন কোন টিপস ব্যবহার করে তা কমেন্ট করে জানাবেন।
অন পেজ এসইও নিয়ে আপনাদের কোন পরামর্শ থাকলে জানাবেন। আর SEO সম্পর্কে আর কোন কোন বিষয় নিয়ে আপনাদের জানার আছে তা আমাকে জানাবেন।
অনেক ভালো হয়েছে। কীওয়ার্ড রিসার্চ এর জন্য কোন টুলস ভালো। একটু বলবেন কি
আপনাকে ধন্যবাদ
আমি SEMrush ব্যবহার করি। আপনি এটি ট্রাই করতে পারেন
This is huge effective article about SEO that I have never seen before. THANKS to Rimon.
এসইও নিয়ে এত সুন্দর পোস্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ