জগতে দরিদ্ররূপে ফিরি দয়া তরে গৃহহীনে গৃহ দিলে আমি থাকি ঘরে
বিষয়ঃ ভাবসম্প্রসারণ
শ্রেণীঃ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ SSC HSC JSC
মূলভাব
যে মানুষ পরের স্বার্থে নিজেকে উৎসর্গ করে সেই প্রকৃত মানুষ। অসহায়কে সহায় দিলে সে চিরস্মরণীয় থাকে।
সম্প্রসারিত ভাব
এ বিশ্বের সকল মানুষ একইভাবে জীবন যাপন করতে পারে না। ধনী-দরিদ্র, ভালাে-মন্দ ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষিত করে বিপুল জনগােষ্ঠীকে চিহ্নিত করা হয়। এই শ্রেণি বিভাজনে দেখা যায়, যুগ যুগ ধরে ধনীর হাতে শােষিত হয়, দরিদ্র, মন্দের হাতে নিষ্পেষিত হয় ভালাে। ফলে যুগ যুগ ধরে অত্যাচারিত, শােষিত, বঞ্চিত মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় পৃথিবীর বাতাস ভারী হয়েছে। কিন্তু বিশাল জনগােষ্ঠীর জীবনে শুধু স্বার্থান্ধ মানুষের পরিচয় পাওয়া যায় না। এমন অনেক মহৎপ্রাণের সন্ধান পাওয়া যায় যারা নিজের জীবনের কথা ভাবেন নি, ভেবেছেন দরিদ্র-নিগৃহীত মানবসমাজের কথা। অবহেলিত মানুষকে জীবনযন্ত্রণার অভিশাপ থেকে মুক্ত করার জন্য তাদের ছিল নিরন্তর প্রচেষ্টা। তাদের নিঃস্বার্থ অবদানে অসহায় মানবগােষ্ঠী খুঁজে পেয়েছে জীবনের মহৎ অর্থ।
এই নিঃস্বার্থ মহৎ ব্যক্তিরা দরিদ্রের মুখে খাবার তুলে দিয়ে, গৃহহীনে গৃহ দিয়ে, বঞিতের মুখে হাসি ফুটিয়ে নিজেদের জীবনের আনন্দ খুঁজে পেয়েছেন। জীবনের সার্থকতা তারা খুঁজে পেয়েছেন পরার্থে আপন স্বার্থের বলিদানে। আর্তপীড়িত মানুষকে মানবেতর অবস্থা থেকে মুক্তি দিয়ে তারা নিজেদের আনন্দ খুঁজে পেয়েছেন। বিলাসিতা, আত্মসুখ বিসর্জন দিয়ে দরিদ্রের মুখে হাসি ফুটাতে পারলে নিজের জীবন ধন্য মনে করে। আর তাই তারা মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।
মন্তব্য
পরার্থে উৎসর্গীকৃত জীবনই ধন্য। তাই পৃথিবীর যত দিকে যত পীড়িত মানুষের হাহাকার ধ্বনি শােনা যাবে তার সাথে আপন ধ্বনির মেলবন্ধন ঘটাতে হবে। এতেই ব্যক্তিজীবনের চরম সার্থকতা।