ছবিঃ ইন্টারনেট |
এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না যে সুখী হতে চায় না। সুখ পাক বা না পাক, কিন্তু মনের মাঝে সুপ্ত ইচ্ছাটা লালন করে সুখ নামে সোনার হরিণের পিছনে ছুটছি আমরা। কারো কপালে সুখ ধরা দেয় আবার কারো কপালে সুখের ছায়াটাও পড়ে না।
২০১২ সালের ২৮ জুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ২০ মার্চ আন্তর্জাতিক সুখ দিবস বা বিশ্ব সুখী দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অধিবেশনে জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশের প্রতিনিধিরা দিবসটিকে স্বীকৃতি দেন। এর পর থেকে প্রতিবছর বিশ্বের একাধিক দেশ নানা আয়োজনে দিনটি পালন করে আসছে।
২০১৫ সালে, জাতিসংঘ মানুষের জীবনকে সুখী করতে ১৭ টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা চালু করেছে। এর প্রধান উন্নয়ন লক্ষ্য হল দারিদ্র্য দূর করা, বৈষম্য কমানো এবং আমাদের গ্রহকে রক্ষা করা।
দিবসটি পালন সংক্রান্ত বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রস্তাবে বলা হয়, সুখের অনুসন্ধান একটি মৌলিক মানবিক লক্ষ্য। মানুষের জীবনের মূল উদ্দেশ্য সুখে থাকা। ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণসহ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিতে দিবসটি পালন করা হবে।
দিবসটির প্রতিষ্ঠাতা অর্থনীতিবিদ জেমে ইলিয়ান। তিনি জাতিসংঘের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও জাতিসংঘের পরামর্শদাতা এবং শান্তি ও নিরাপত্তা অর্থনীতিবিদদের প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘ অনুমোদিত এনজিও ইসিওএসসি বিশেষ পরামর্শদাতার দায়িত্ব পালন করেন।
জেমে ইলিয়ান |
আন্তর্জাতিক সুখ দিবস প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে, বিশ্ব সুখ ফাউন্ডেশনের সভাপতি লুইস গ্যালার্দোর সাথে, জেমে ইলিয়ান “হ্যাপিটালিজম” প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ইলিয়েন ২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে সুখ, মঙ্গল এবং গণতন্ত্রের প্রাধান্যকে উত্সাহিত ও অগ্রসর করার জন্য একটি প্রচারাভিযান চালিয়েছিলেন। ২০১১ সালে, জেমে ইলিয়ান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক সুখ দিবসের ধারণাটি প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সকল দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সুখী অর্থনীতির প্রচার করবে। ১৯ জুলাই ২০১১, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ একটি রেজুলেশন পাস করে। ভুটানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জিগমে থিনলি “গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস” এর লক্ষ্য অনুসরণ করে “হ্যাপিনেস টুওয়ার্ড এ হোলিস্টিক অ্যাপ্রোচ টু গ্রোথ” নামে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
২০১২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আন্তর্জাতিক সুখ দিবস’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ২০১৩ সালে প্রথম এটিকে স্মরণ করা হয়েছিল। জেমে ইলিয়ানের ধারণার উপর ভিত্তি করে, জাতিসংঘ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যাতে করে মানুষ সুখের গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝতে পারে।