অনুচ্ছেদ

গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়া ও বাংলাদেশ অনুচ্ছেদ

3.5/5 - (169 votes)

গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়া ও বাংলাদেশ অনুচ্ছেদ লিখন ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ শ্রেণি

গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়া ও বাংলাদেশ

প্রাচীনকাল থেকেই বিশ্বের মানুষ তার চারপাশের পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে জীবনযাপন করে আসছে। পরিবেশ কথাটির অর্থ হলাে আমরা যে যেখানে থাকি তার চারপাশের জগৎ, অর্থাৎ গাছপালা, মাটি, পানি, পাহাড়-পর্বত, নদী-সাগর, প্রাণী, উদ্ভিদ ইত্যাদি মিলেই পরিবেশ। মানুষ আর পরিবেশের মধ্যে যতদিন সময় বিদ্যমান ছিল ততদিন মানুষের কোনাে দুর্ভাবনা ছিল না। কিন্তু সভ্যতার বিকাশ আর মানুষ বৃদ্ধির সাথে সাথে পরিবেশও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। ভবিষ্যতে এই সমস্যা আরও প্রকট হবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে নগরায়ণ, অপরিকল্পিতভাবে মিল-কারখানা স্থাপন, যানবাহন থেকে নির্গত কালাে ধোঁয়া, অধিকমাত্রায় বৃক্ষনিধন, কীটনাশকের ব্যবহার, রাসায়নিক তেজস্ক্রিয়তা, বনভূমি ধ্বংস ইতাদি কারণে প্রতিদিন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

বাষ্পশক্তি ও বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের মূলে রয়েছে দহন। এই দহনের ফলে বায়ুতে অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সূর্যের ক্ষতিকারক তেজস্ক্রিয় রশ্মি পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভূপৃষ্ঠের উত্তাপ বৃদ্ধি পেতে পারে বায়ুমণ্ডলে এমন গ্যাসের পরিমাণ বাড়ছে। এসব গ্যাস সূর্য থেকে আসা স্বল্প দৈর্ঘ্য বিকিরণের জন্যে স্বচ্ছ কিন্তু লম্বা দৈর্ঘ্য বিকিরণ ধরে রেখে ভূপৃষ্ঠ এবং নি বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত করে তােলে। বায়ুমণ্ডলে পরিবেশ দূষণের ফলে যেসব গ্যাস জমছে তার অবর্তমানে লম্বা দৈর্ঘ্যের বিকিরণ মহাশূন্যে হারিয়ে যেতাে। এসব গ্যাস হলাে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, ক্লোরােফ্লোরাে কার্বন ইত্যাদি। এসব গ্যাস যদি বর্তমান হারে বাড়তে থাকে তবে ২০১৫ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে তা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। তাতে ভূপৃষ্ঠের উত্তাপ ১.৫ ডিগ্রি থেকে ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, আগামী ৫০ বছরের মধ্যে বৃদ্ধির এই পরিমাণ মানব ইতিহাসের এক অভাবনীয় ঘটনা বলে বিবেচিত হবে। কেননা এক ডিগ্রি তাপের কয়েক দশমাংশ উত্তাপ বৃদ্ধি বিশ্বের আবহাওয়ায় এক বিরাট পরিবর্তন আনতে সক্ষম। এই গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়ার ফলে সাগরের তলদেশের উচ্চতা বেড়ে যাবে, ঝড়ের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে, উপকূলমণ্ডল ও নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যাবে এবং বাড়বে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। এতে বিশ্বের বহুভূমি বন্যাকবলিত হবে আর ছড়িয়ে পড়বে লবণাক্ততা। পরিণামে শিল্পকারখানা, জনবসতি, কৃষি উৎপাদন, মৎস্য চাষ এবং বনাঞ্চলের ওপর ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব দেখা দেবে। গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়া সবচেয়ে বেশি আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশের জন্যে। একুশ শতকের মাঝামাঝি আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং ভূপৃষ্ঠের উত্তাপ বেড়ে গেলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের মতাে ব-দ্বীপ অঞ্চলে সবচেয়ে ভয়ংকরভাবে অনুভূত হবে। উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলে অবস্থিত বলে বাংলাদেশে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। তাই এখন থেকেই পরিবেশ দূষণ রােধ করে ভবিষ্যতের জন্যে প্রস্তুতি নিতে হবে।

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button