এ পৃথিবী অলস কর্মভীরুদের জন্য নয়
ভাবসম্প্রসারণ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ শ্রেণী SSC HSC JSC
মূলভাব
যারা কাজকে ভালােবাসে এমন পরিশ্রমী ও সাহসী মানুষেরাই পৃথিবীতে টিকে থাকে এবং সকল প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে এগিয়ে চলে। অন্যদিকে, অলস কর্মভীরুদের পদে পদে হেরে যেতে হয়, সময়ের অতলে তলিয়ে যায়।
সম্প্রসারিত ভাব
জীবন মানেই সংগ্রাম। এ সংগ্রাম বেঁচে থাকার জন্য। সৃষ্টিজগতের প্রতিটি প্রাণীকেই নিজের অস্তিত্ব রক্ষার্থে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত যারা কাজের মাধ্যমে অতিবাহিত করে তারাই জীবনে সফল হতে পারে। কাজের প্রতি আন্তরিক নয় কিংবা কাজ দেখলে যারা ভয় পায় তারা জীবনের কোনাে ক্ষেত্রেই সফলকাম হতে পারে না। মানবজীবনে যে উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে এবং মানব সভ্যতার যে বিকাশ ঘটেছে তা পরিশ্রমেরই ফলশ্রুতি।
শ্রমজীবীরা শ্রম দেয় বলেই সভ্যতার চাকা এগিয়ে চলে। কাজের মাধ্যমেই মানুষ আরােহণ করতে পারে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে। সেই আদিপর্বে মানুষ কায়িক আর মানসিক শ্রমের বিনিময়ে শিখেছে তির ও নৌকা চালানাে, তারপর সভ্যতার কৈশােরে চাষাবাদ শুরু করেছে মানুষ। পরিশ্রমের দ্বারা ফলিয়েছে শস্য। আর সভ্যতার যৌবনে শিখেছে প্রাসাদ নির্মাণ, নগর পত্তন।
পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীদের জীবনী পর্যালােচনা করলে জানা যায়, তারা প্রত্যেকেই পরিশ্রমী ছিলেন। হযরত মুহম্মদ (সা), ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিংকন (Abraham Lincoln), বিজ্ঞানী আইনস্টাইন (Albert Einstein) এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মহানবী (সা) নিজ হাতে সকল কাজ সমাধা করতেন। অর্থাৎ এ পৃথিবীতে যারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকে কাজের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন।
অন্যদিকে, কর্মবিমুখ লােকেরা কখনাে সফল হতে পারে না। তাদের পক্ষে নিজেদের মান-সম্মান রক্ষা করাও সম্ভব হয় না। তারা তলিয়ে যায় বিস্তৃতির অতলে। মানুষ তাদেরকে ঘৃণা করে। পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়স্বজনও তাদেরকে অবহেলার দৃষ্টিতে দেখে। তাই বলা যায়, পৃথিবী এক কর্মশালা আর জীবনমাত্রই কাজের ক্ষেত্র। কাজের মাধ্যমেই এখানে টিকে থাকতে হয়। আর অলস ও কর্মভীরুরা সমাজের বোঝা। কর্ম সম্পাদনে যারা সৎ, সাহসী ও আন্তরিক তাদের জন্যই এ পৃথিবী।
মন্তব্য
প্রতিযােগিতাময় এ সমাজে টিকে থাকার মূলমন্ত্র হলাে পরিশ্রম। পরিশ্রম মানবজীবনে এনে দেয় সাফল্য। কিন্তু যারা অলস, কর্মভীরু তারা কখনাে সাফল্য লাভ করতে পারে না।