দুঃখের মতাে এত বড়াে পরশপাথর আর নেই
ভাবসম্প্রসারণ দুঃখের মতাে এত বড়াে পরশপাথর আর নেই ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ শ্রেণী SSC HSC JSC
মূলভাব
প্রচলিত একটি কথা আছে- পরশপাথরের ছোঁয়ায় লােহাও সােনায় পরিণত হয়। তেমনই মানবজীবনে কোনাে কোনাে দুঃখময় ঘটনা ক্ষুদ্র মানুষকে মহৎ মানুষে পরিণত করে। একজন মানুষ তার দুঃখময় সময় থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে, যা তার জীবনকে এগিয়ে নিতে নানাভাবে সাহায্য করে।
সম্প্রসারিত ভাব
মানুষের জীবনে সুখ ও দুঃখ নামক দুটি জিনিসের অস্তিত্ব বিদ্যমান রয়েছে। সুখ-দুঃখ পর্যায়ক্রমে আসে। তাই জীবনে দুঃখ এলে ভেঙে পড়লে চলবে না। আর সুখ এলেও তা নিয়ে অতি গর্ব করারও কিছু নেই। আগুনে পােড়ালে যেমন খাঁটি সােনার পরিচয় স্পষ্ট হয়, তেমনই দুঃখের দহন মানুষকে খাটি মানুষে পরিণত করে। আঘাতে আঘাতে, বেদনায় বেদনায় মানুষের মনুষ্যত্ববােধ, সত্যনিষ্ঠা ও বিবেকবােধ জাগ্রত হয়। দুঃখে না পড়লে কোনাে মানুষই জীবনের যথার্থ স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারে না। মনীষীগণ তাই দুঃখকে পরশপাথরের সাথে তুলনা করেছেন।
পরশপাথরের ছোঁয়ায় যেমন লােহা সােনায় পরিণত হয়, তেমনই দুঃখের আঘাত অমানুষকে মহৎ মানুষে পরিণত করতে পারে। বেদনার অশ্রুতে যখন ভেসে যায় সমস্ত গ্লানি, তখন অপার্থিব এক পবিত্ৰবােধ জন্ম নেয় হৃদয়ে। সেই পবিত্ৰবােধই তাকে সুন্দর করে, নতুন এক মানুষে পরিণত করে। পৃথিবীর ইতিহাসে মনীষীদের জীবনীতে আমরা দেখি যে, তারা দুঃখময় জীবন কাটিয়েই সুখের সন্ধান পেয়েছেন। দুঃখকে সাদরে গ্রহণ করে নেওয়ার ফলেই তারা সুখের দেখা পেয়েছেন। দুঃখকে কখনাে তারা অবজ্ঞা করেননি।
মন্তব্য
মানুষের জীবনে জরা, ব্যাধির মতাে সুখ-দুঃখও নিয়মিত ব্যাপার। এ দুটি বিষয়কে এড়িয়ে যাওয়ার কোনাে পথ নেই। তবে বাস্তব জীবনে এমন অনেক বিষাদময় ঘটনা ঘটতে দেখা যায়, যা সাধারণ মানুষকে মহৎ হৃদয়ের মানুষে পরিণত করে। স্রষ্টার পক্ষ থেকে দুঃখও এক ধরনের পরীক্ষা। দুঃখের অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে সাধারণ মানুষ উত্তম মানুষে পরিণত হয়।
ভালো