Uncategorized

কালিমা তায়্যিবা ও কালিমা শাহাদাতের আলােকে আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদের উপর একটি প্রতিবেদন

Daraz cupon Code
শ্রেণি ঃ ৬ ষষ্ঠ, বিষয়ঃ ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা।
অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের ক্রমঃ অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ ১ 
অধ্যায় বা অধ্যায়ের শিরোনামঃ প্রথম অধ্যায়ঃ আকাইদ 
বিসয়বস্তুঃ তাওহিদ, কালিমা তায়্যিবা, কালিমা শাহাদাত, ইমান মুজমাল, আল আসমাউল হুসনা
অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজঃ তােমার চারপাশের নানা নিদর্শন উল্লেখসহ কালিমা তায়্যিবা ও কালিমা শাহাদাতের আলােকে আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদের উপর একটি প্রতিবেদন তৈরি কর।

উত্তরঃ 

আল্লাহ তায়ালাকে  এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে মনে প্রাণে বিশ্বাস করাই হল তাওহিদ বা একত্ববাদ। আল্লাহ একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিজিকদাতা এবং নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করাই হল তাওহিদের পরিচয়। মুসলিম হওয়ার পূর্ব শর্ত হল তাওহিদে বিশ্বাস স্থাপন করা। সকল নবি-রাসূল মানুষকে তাওহিদের প্রতি আহ্বান করে গেছেন এবং তাওহিদের শিক্ষা দিয়ে গেছেন। কারন ইসলামে তাওহিদের গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেনঃ

لَوْ كَانَ فِيهِمَا آلِهَةٌ إِلَّا اللَّهُ لَفَسَدَتَا فَسُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ عَمَّا يَصِفُونَ
যদি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলে আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য উপাস্য থাকত, তবে উভয়ের ধ্বংস হয়ে যেত। অতএব তারা যা বলে, তা থেকে আরশের অধিপতি আল্লাহ পবিত্র।
সূরা আম্বিয়া, আয়াত ২২

ইসলামে প্রবেশের প্রধান ধাপ হল “কালিমা তায়্যিবা” যার অর্থ হল পবিত্র বাক্য। এটি তাওহিদ, ঈমান ও ইসলামের মূল ভিত্তি। 

সম্পর্কিত টপিক
لا إله إلا الله محمد رسول الله
আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ (ইবাদতের যােগ্য) নেই। হযরত মুহাম্মদ (সঃ ) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।
আমাদের চারপাশেই কালিমা তায়্যিবার নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যায় বিশাল এই পৃথিবীর সবকিছুই সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। যদি একাধিক ইলাহ থাকতো তাহলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হত। একজন স্রষ্টা চাইতেন সূর্য পূর্ব দিকে উঠুক, অন্য স্রষ্টা চাইতেন পশ্চিম দিকে উঠুক। কিন্তু সৃষ্টির শুরু থেকে কেয়ামত পর্যন্ত সূর্য তার নিয়মে পূর্ব দিকে উঠবে এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যাবে। আল্লহার সৃষ্টিজগতের সামান্য অংশ হল আমাদের পৃথিবী। বড় বড় গ্রহ নক্ষত্র রয়েছে বিশ্বজগতে। এগুলো প্রত্যেকটি সুশৃঙ্খলভাবে ঘুরছে। স্রষ্টা একজন বলেই তা সুশৃঙ্খলভাবে ঘুরছে। কত সুন্দর আমাদের পৃথিবী। বিশাল বিশাল পাহাড়-পর্বত, নদনদী, সাগর মহাসাগর, বিশাল আকাশ, বিস্তৃত মাঠ এইসব নিজ থেকে সৃষ্টি হয় নি। মহান আল্লাহ এইসব সৃষ্টি করেছেন মানুষের উপকারের জন্য। আল্লাহ শুধু সৃষ্টি করেন নি বরং নানা রকম স্বাদ, সৌন্ধর্য্য দিয়েছেন। এক এক ফলের স্বাদ এক এক রকম। আম গাছে আম হয়, জাম গাছে জাম। ফুলের রয়েছে বিভিন্ন সৌরভ। ঋতুভেদে ফুলের বৈচিত্র পরিলক্ষিত হয়। পশু পাখির মধেও রয়েছে ভিন্নতা। এক এক পাখির ডাক এক এক রকম। গরু, ছাগল, বিড়াল তাদের নিজ নিজ স্বরেই ডাকাডাকি করে। যদি একাধিক স্রষ্টা থাকত তাহলে বিশ্বজগতে সবকিছুর মধ্যে অনিয়ম দেখা দিত। কিন্তু বিশ্বজগতের সবকিছুই নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলছে। এতেই প্রমাণিত হয় বিশ্বজগতের পালনকর্তা, নিয়ন্ত্রণকারী একজন মহান আল্লাহ।
আল্লাহপাক আমাদের চারপাশে যা যা সৃষ্টি করেছেন সব আমাদের কল্যাণের জন্য। অসংখ্য নেয়ামত দান করেছেন। খাদ্যের জন্য জমিকে করেছেন উর্বর, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করে প্রকৃতিকে করেন সতেজ। প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর দান। তাই আমাদের উচিত আল্লাহ্পাকের কাছে তার জন্য শুকরিয়া করা, আনুগত্য প্রকাশ করা। কালিমা শাহাদাত আমাদের সেই শিক্ষায় দেয়। 
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَـهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন ইলাহ (ইবাদতের যােগ্য) নেই। তিনি এক এবং তাঁর কোন শরীক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ ) তাঁর বান্দা ও রাসূল। – কালিমা শাহাদাত

বিনয়-নম্র ভাবে নিজেকে আল্লাহর সমীপে সপে দেয়া, তার বশ্যতা মেনে নেয়া। তিনি এক তার কোন শরীক নেই, এটা ঘোষণা দেয়া। নিজেকে সপে দেয়ার পদ্ধতি ও এবাদতের বিশদ বর্ণনা মুহাম্মদ সা. এর নিকট হতে গ্রহণ করা। উভয় শাহাদাতের মৌখিক উচ্চারণ ইসলাম গ্রহণ ও ইসলামকে আলিঙ্গন করার বহিঃপ্রকাশ। এটাই হল কালিমা শাহাদাতের মূল কথা। কালিমা তায়্যিবার ন্যায় কালিমা শাহাদাতেও এক ইলাহার কথা বলা হয়েছে এবং মহান আল্লাহর সাথে কারো শরীক করা যাবে না আর হযরত মুহাম্মদ (সঃ ) তাঁর বান্দা ও রাসূল। কালিমা শাহাদাতে প্রথম অংশটি দিয়ে আমরা একত্ববাদ বা তাওহিদের সাক্ষ্য দেই এবং অন্য অংশটির দ্বারা হযরত মুহাম্মদ (সঃ ) এর রিসালতের স্বীকৃতি দেই। আল্লাহপাক পবিত্র কুরআনে বিভিন্ন আয়াতে তার একত্ববাদের পরিচয় দিয়েছেন। আল্লাহ বলেনঃ

الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَّا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِن تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِن فُطُورٍ
অর্থঃ যিনি সাত আকাশ সৃষ্টি করেছেন সুবিন্যস্তভাবে। তুমি পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে কোনো অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তারপর তুমি দৃষ্টি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নাও, তুমি কি কোনো ফাটল দেখতে পাচ্ছ? – সূরা মূলক, আয়াত ৩

উক্ত আয়াতে আল্লাহ তার একত্ববাদের কথা তুলে ধরেছেন। সাত আকাশ সৃষ্টি করেছেন নিপুনভাবে এবং তার সৃষ্টিতে কোন অসামঞ্জস্যতা নেই। যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য ইলাহ থাকত তাহলে সৃষ্টিতে অসামঞ্জস্যতা দেখা যেত। আল্লাহপাক সৃষ্টির মাঝে কোন বক্রতা রাখেন নি। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন, যা বলেন তাই হয়। আল্লাহ এক। আমরা মুসলিমরা আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দেই এবং তারই নিকট আমাদের ইচ্ছাকে সমর্পণ করি। 

সম্পর্কিত টপিক

১ টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

Back to top button