প্রিয় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের ১০ম সপ্তাহের “বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়” অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ এর উত্তর নিয়ে হাজির হয়েছি। চলো তাহলে দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় থেকে কি কি নির্ধারিত কাজ তোমাদের দেওয়া হয়েছে।

নির্ধারিত কাজ

মনে কর, ১৯৭১ সালে তুমি ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নিচের ঘটনার ক্ষেত্রে তুমি উপস্থিত থাকলে ঐ সময় কী করতে তার বর্ণনা দাও।
(যে কোনাে তিনটি ঘটনার ক্ষেত্রে নিজের অনুভূতি লিখতে হবে )
ক) রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চের ভাষণ শুনছ
খ) ২৫শে মার্চ গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী
গ) পাকিস্তান হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আল-শামস এলাকাবাসীকে নির্যাতন করছে।
ঘ) মুক্তিবাহিনীকে হানাদাররা তাড়া করছে।
ঙ) ১৬ ই ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পন দলিলে স্বাক্ষর করছে।
নমুনা উত্তর
মােরা একটি ফুলকে বাঁচাবাে বলে যুদ্ধ করি,
মােরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি …।
পরাধীন জাতির স্বপ্ন-সাধ ও মর্যাদা বলতে কোনাে কিছু থাকে না। এজন্য কোনাে জাতিই পরাধীন থাকতে চায় না। পরাধীন জাতি শােষিত ও বঞ্চিত হতে হতে এক সময় তার মধ্যে জন্ম নেয় সংগ্রামী চেতনার। আর এ সংগ্রামী চেতনাই মানুষের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির পথ হিসেবে স্বাধীনতা অর্জনে উদ্বুদ্ধ করে। আমরা বাঙালি বাংলাদেশের অধিবাসী। কিন্তু এ দেশ একসময় পরাধীন ছিল। আমরা ছিলাম পরাধীন দেশের নাগরিক। সুদীর্ঘ নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী এক মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতা। আজ আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের নাগরিক। বিশ্ব দরবারে আমরা বীর বাঙালি হিসেবে পরিচিত। তাই মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় জীবনে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। তবে আমাদের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস বেদনার ইতিহাস হলেও তা গৌরবােজ্জ্বল মহিমায় ভাস্বর। তাই দেশপ্রেমের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে—
সাবাস বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়,
জ্বলে-পুড়ে-মরে ছারখার / তবু মাথা নােয়াবার নয়।’
১৯৭১ সালের আমার বয়স ছিল ১৩ বছর, তখন আমি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের সেসময়কার অনেক ঘটনার সাক্ষী আমি ছিলাম। তেমন তিনটি ঘটনার অনুভুতি নিচে তুলে ধরছিঃ
(১) রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চের ভাষণ
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
৭ ই মার্চ ১৯৭১ সালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান Suhrawardy Udyan) অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত এক ঐতিহাসিক ভাষণ। ভাষণটি শুরু হয়েছিল ২টা ৪৫ মিনিটে এবং শেষ হয়েছিলো বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে। এই ১৮ মিনটের ভাষণই যেন জাগিয়ে তুলেছিল স্বাধীনতার স্বপ্ন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই ভাষণের তাৎপর্য কতটা তা হয়তো ভাষণটি শুনলেই বুঝা যায়। ভাষণটি শুনলেই যেন শরীরের ভিতর আবারও যুদ্ধের বাসনা জেগে উঠে। ঠিক যেমন ১৯৭১ জেগে উঠে ছিল আমাদের দামাল ছেলেরা। মূলত ৭ ই মার্চের ভাষনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। ৭ ই মার্চ এর ভাষণ আমার ভিতর যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার অনুভুতি সৃষ্টি করে। ভাষণে যুদ্ধের প্রস্তুতি এবং প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার সাথে সাথে দেশের স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, কল-কারখানা সব বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমি বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ সকলের মঝে ছড়িয়ে দিতাম, বিশেষ করে আমার বন্ধুদের মঝে তা নিয়ে আলোচনা করতাম।
(২) ২৫শে মার্চ গণহত্যা
১৯৭১সালে ২৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত পরিকল্পিত গণহত্যা, যার নাম দেওয়া হয়েছিল “অপারেশন সার্চলাইট” সে দিনের সেই ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যা কাণ্ডের কথা মনে করলে শরীরে কাটা দিয়ে ওঠে। সেদিন ঢাকা শহরে চলে গণহত্যা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পনা অনুযায়ী মধ্যরাতে নিরস্ত্র মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন গোলাগুলি আর কামানের শব্দে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বাবা আমাকে সাহস দিলেন। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পিলখানার তৎকালীন ইপিআর ক্যাম্প, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগরাথ হল, রোকেয়া হল, জহরুল হক হলসহ সারা ঢাকা শহরে তারা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। ভয়ে গলা শুকিয়ে যাবার উপক্রম। সকাল হল। বাড়ি থেকে বের হয়ে বন্ধু রোহানকে সাথে নিয়ে সুজন, তুহিন ও ইমতিয়াজের বাড়িতে গেলাম ওদের খবর নেওয়ার জন্য। কিন্তু যাওয়ার পর যা দেখলাম তার জন্য আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না। দেখলাম ওদের সবার বাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে রয়েছে। কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারপর একে একে অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি গিয়ে খোঁজ খবর নিলাম। সবখানেই একই চিত্র। চোখের অশ্রু বিসর্জন দিয়ে পরিস্থিতিকে মেনে নিয়ে আহতদের সেবা করার কাজে নেমে পড়লাম। আমাদের নিজ নিজ পরিবারের সহযোগিতায় যার যা সামর্থ আছে তা দিযে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাদ্য, ও চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করলাম।
(৩) ১৬ ই ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পন দলিলে স্বাক্ষর
১৬ ডিসেম্বর বিকেলে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলাদেশে অবস্থিত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজি হাজার হাজার উৎফুল্ল জনতার সামনে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন। প্রায় ৯৩,০০০ পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করে, যা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্ববৃহৎ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান। এরই মাধ্যমে নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের অবসান ঘটে; পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত পূর্ব পাকিস্তান নামক অংশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ নামে স্বাধিকার ও স্বায়ত্বশাসন লাভ করে। বাবা বিকালে আমাকে ও আমার বন্ধুদের রেসকোর্স ময়দানে নিয়ে যান। গিয়ে দেখি ময়দানে লাখো মানুষের ভিড়। বিকাল ৪.৩১ মিনিটে জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী আত্মসমর্পণের দলিলে সই করেন। আত্মসমর্পণের দলিলের নাম ছিল “INSTRUMENT OF SURRENDER”। জয় বাংলার শ্লোগানে ঢাকার আকাশ বাতস মুখরিত হয়ে উঠে। বন্ধুরা মিলে বিজয়ের লাল-সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে বুকভরা আনন্দ নিয়ে বাড়ি ফিরি। বিজয়ের সেই উল্লাসে ভাগীদার হতে পেরে আমি নিজেকে গর্ভিত মনে করি।
শারীরিক শিক্ষার উত্তর
sir apnara prosno gulo kotha theke pan
Apnara গ,ঘ er ans toh den nai
Apnara (গ,ঘ)er ans den nai kn