সূচনা
নব নবীনের গাহিয়া গান ।
সজীব করিব মহাশ্মশান
আমরা দানিব নতুন প্রাণ
বাহুতে নবীন বল।
চল্ রে চল্ রে চল
ছাত্রসমাজ দেশ ও জাতির অনন্য শক্তির আধার। আজকে যারা ছাত্র, তারাই কদিন পরে দেশের চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করবে। জ্ঞানশক্তি ও তারুণ্যশক্তি এই দুই শক্তির সমন্বয় করে ছাত্রসমাজ দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আজকের ছাত্ররাই জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। জাতির স্বপ্নময় ভবিষ্যতের কান্ডারি। সততা, নিষ্ঠা, সাহস ও ত্যাগী মনােভাব এসব গুণাবলির সাথে শিক্ষার আলাে থাকলে দেশের উন্নতি এবং জাতির নতুন অভ্যুদয় অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু এই সৎগুণাবলি অর্জন করা খুব সহজ নয়। এর জন্য দরকার নিয়মিত অনুশীলন ও কঠোর পরিশ্রম।
ছাত্রসমাজ তারুণ্যের উজ্জ্বল দীপ্তি
ছাত্রসমাজ প্রতিটি দেশ ও জাতির ক্ষেত্রেই নবশক্তির উদবােধক হিসেবে কাজ করে। তাদের চোখে থাকে জ্ঞানের আলাে, বুকে থাকে স্বপ্নময় ভবিষ্যতের অগ্নিমন্ত্র। তাদের দেশগঠনমূলক সূচনা ঐতিহাসিক তাৎপর্যমণ্ডিত। অতীতে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ রচনা করেছে এক গৌরবােজ্জ্বল ইতিহাস। বায়ান্নর ভাষা-আন্দোলনে এ দেশের ছাত্রসমাজের রয়েছে অবিস্মরণীয় অবদান। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনে ছাত্রসমাজই পালন করেছে মুখ্য সূচনা। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের সিঁড়ি বেয়ে এ দেশের ছাত্রসমাজ জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছে। বুকের রক্ত দিয়ে রফিক, শফিক, সালাম, বরকত যে বাংলা ভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে, তা আজ স্বমহিমায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত।
দেশ ও জাতির সমস্যা ও ছাত্রসমাজের ভূমিকা
ছাত্ররা সাধারণত অর্থনৈতিক বা উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকে না। তারা বন্ধনহীন মুক্তজীবনের অধিকারী বলে, তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের ত্রুটিগুলাে সহজে দেখতে পায়। চিহ্নিত করতে পারে সমস্যার কারণ এবং সমাধানের উপায়ও তারা খুঁজে বের করতে পারে। লাভ বা স্বার্থপরতার কাছে নিজেদের বিকিয়ে না দিয়ে দেশের বৃহত্তর কল্যাণে তারা কাজ করতে পারে। ছাত্রসমাজ মানেই সংঘবদ্ধ একটা শক্তি। এই সংঘবদ্ধ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে | দেশগঠনে ইতিবাচক সূচনা রাখা সম্ভব। প্রচলিত ধারার নষ্ট রাজনীতি কখনাে কখনাে ছাত্রসমাজকে ব্যবহার করে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করছে। কলুষিত করছে ছাত্রসমাজকে। ছাত্রসমাজের গৌরবময় ঐতিহ্য রক্ষা করার স্বার্থেই ওই নষ্ট রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ছাত্রসমাজকে কাজ করতে হবে জাতির বৃহত্তর কল্যাণে, অপরিসীম দেশাত্মবােধে উদ্বুদ্ধ হয়ে। মনে রাখতে হবে, এ দেশের প্রত্যেকটি ছাত্র এক-একজন সূর্যসন্তান, দেশমাতৃকার সেবা-শক্তির প্রতীক।
দেশ গড়ার বিভিন্ন দিক
অশিক্ষা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা। এর পাশাপাশি আদর্শহীনতা, দুর্নীতি ইত্যাদি বাংলাদেশের এখন মৌলিক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এসব সমস্যার কারণে বাংলাদেশ স্বাধীনতার কয়েক যুগ পরেও রাষ্ট্রীয়ভাবে উল্লেখযােগ্য কোনাে অগ্রগতি লাভ করতে পারেনি। এখনাে এদেশের ষাট শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতাে মৌলিক অধিকারগুলাে অধিকাংশ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে। ছাত্রসমাজকে এ দিকগুলাের প্রতি নজর দিতে হবে। সততা ও নৈতিকতার অনুশীলন এবং আদর্শ চরিত্রের গুণাবলি অর্জন করতে হবে। সততাই মানবজীবনের মৌলিক শক্তি। দার্শনিকেরা বলেছেন, ‘স্বর্ণ বা তেলের খনি নয়, আদর্শ মানুষই একটি দেশের প্রকৃত সম্পদ’। ছাত্রসমাজ সত্যিকার দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। দেশের অগ্রগতি ও জাতির প্রত্যাশিত আকাঙ্ক্ষা পূরণে ছাত্রসমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে।
উপসংহার
ছাত্ররাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতাে উপযুক্ত জ্ঞান ছাত্রদেরকে ছাত্রজীবনেই অর্জন করতে হয়। নিজেদের চরিত্র গঠন করে দেশসেবার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হওয়াই ছাত্র জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।
অসাধারণ হয়েছে ভাই।
"বিশ্ব সভ্যতায় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবদান" এ বিষয়ে একটি রচনা দিতে পারবেন ভাই ?
চেষ্টা করব ভাই। ধন্যবাদ।
আপনার অনুরোধে রচনাটি দেওয়া হলঃ
লিংকঃ https://www.hazabarolo.com/2021/11/contribution-of-Hazrat-Muhammad-PBUH-to-world-civilization.html