দেশপ্রেম অনুচ্ছেদ লিখন ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ শ্রেনি
দেশপ্রেম
শুধু মুখে মুখে এই ভালােবাসার কথা বললেই দেশপ্রেম হয় না। চিন্তায়, কথায় ও কাজে দেশের জন্য যে ভালােবাসা প্রকাশ পায় সেটাই প্রকৃত দেশপ্রেম। ফলে স্বদেশের জন্যে তার যে প্রেম তা কৃতজ্ঞতার, কর্তব্যের এবং দায়িত্বের। প্রকৃত দেশপ্রেমিকের মধ্যে কোনাে সংকীর্ণ চিন্তা থাকে না। দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধিই দেশপ্রেমিকের সর্বক্ষণের চিন্তা ও কর্মের বিষয়। দেশের স্বার্থকে তিনি সবকিছুর উর্ধে স্থান দিয়ে থাকেন। নিজের অহংকার, মেধা, প্রজ্ঞা ও গৌরব স্বদেশের জন্য নিবেদন করেন। দেশের জন্য নিজেকে অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে দেশের মর্যাদা রক্ষা করেন। যুগে যুগে অসংখ্য মনীষী দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। ব্রিটিশবিরােধী স্বাধীনতার লড়াইয়ে জীবন দিয়েছেন তীতুমীর (Titumir), প্রীতিলতা (Pritilata Waddedar)। ফাঁসির মঞ্চে জীবন উৎসর্গ করেছেন ক্ষুদিরাম (Khudiram Bose), সূর্য সেন (Surya Sen)। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য শহীদ, রফিক, বরকত, সালাম, জব্বার এবং বাংলাদেশের। স্বাধীনতা-সংগ্রামে আত্ম-বিসর্জিত অসংখ্য বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, ছাত্র-শিক্ষক, লক্ষ লক্ষ মা-বােন, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অকুতােভয় সৈনিকদের নাম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে পারি। দেশপ্রেমের এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে সত্যিই বিরল।
মানুষ জীবনে যে কোনাে সময়ে যে কোনাে স্থান থেকে দেশকে ভালােবাসতে পারে। নিজ দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের মধ্যে দেশপ্রেম নিহিত। যদিও আমরা জন্মের পরেই দেশকে ভালােবাসতে শুরু করি, তদুপরি ছাত্রজীবন দেশপ্রেমের প্রকৃষ্ট সময়। দেশপ্রেম হৃদয়ে থাকলে দেশের মাটি, মানুষ, প্রকৃতি সবকিছুই অতি আপন বলে মনে হয়। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ছাত্ররাও নানাভাবে দেশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে দেশপ্রেমের পরিচয় দিতে পারে। স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হলে মানুষকে ভালােবাসতে হবে। নিজের দৈন্যদশাকে তুচ্ছ করতে হবে এবং দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করতে হবে। একটি মহৎ গুণ হিসেবে প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই দেশপ্রেম থাকা উচিত। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির জন্য কিছু না কিছু অবদান রাখা প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।