সালাম হল ইসলামের সর্বোত্তম অভিবাদন। সালাম আরবি শব্দ। যার অর্থ হচ্ছে শান্তি, দোয়া, প্রশান্তি, শুভকামনা। সালাম একটি মর্যাদাপূর্ণ, স্বাগত, অভিনন্দনমূলক, মর্যাদাপূর্ণ ইসলামিক অভিবাদন। আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের মধ্যে ‘সালাম’ একটি। মহান আল্লাহ্ হযরত আদম (আঃ) কে প্রথম সালাম শিক্ষা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য কারও গৃহে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে ও তাদেরকে সালাম না দিয়ে প্রবেশ করো না।” (সূরা নূর ২৭ আয়াত)
সালামের সময় হাত দিয়ে ইশারা করবে না বা হাত কপালে ঠেকাবে না। |
সালামের সুন্নাত ও আদবসমূহ
১। আগে সালাম দিবে। এটাই উত্তম, কেননা যে প্রথমে সালাম প্রদান করবে সে অধিক ছওয়াবের অধিকারী হবে।
২। পরিচিত-অপরিচিত, ছােট-বড় নির্বিশেষে সকলকে সালাম দিবে । পিতা-মাতা, স্ত্রী, সন্তানাদি, পরিবার-পরিজন সকলকেই সালাম করবে।
৩। সওয়ারী ব্যক্তি পায়ে চলা ব্যক্তিকে, চলনেওয়ালা বসা বা দাঁড়ানাে ব্যক্তিকে, আগন্তুক অবস্থানকারীকে, কম সংখ্যক লােক অধিক সংখ্যকদেরকে এবং কম বয়সী অধিক বয়সীকে আগে সালাম করা উত্তম । জামাআতের মধ্য থেকে একজন সালাম করলে সকলের পক্ষ থেকে তা যথেষ্ট হবে।
৪। সালামের সময় হাত দিয়ে ইশারা করবে না বা হাত কপালে ঠেকাবে না। কিংবা মাথা ঝুঁকাবে না। তবে দূরবর্তী লােককে সালাম করলে, যার পর্যন্ত আওয়াজ না পৌঁছার সম্ভাবনা রয়েছে, সেরূপ ক্ষেত্রে শুধু বােঝানাের জন্য হাত দিয়ে ইশারা করা যে পারে।
৫। পিতা-মাতা বা গুরুজন ও বড়কে সালাম করার সময় আওয়াজ এবং ভাব-ভঙ্গির মধ্যে আদব ও সম্মান ফুটে ওঠা উচিৎ। এমনিভাবে ছােট ও স্নেহভাজনকে সালামের ক্ষেত্রে স্নেহ ব্যক্ত হওয়া সংগত।
৬। অমুসলিমকে সালাম করবে না। তবে বিশেষ স্বার্থে বা তার অনিষ্টতা থেকে রক্ষার প্রয়ােজনে একান্ত কিছু বলে যদি তাকে অভিবাদন জানাতেই হয়, তাহলে ‘শুভ-সকাল’ ‘শুভ সন্ধা’ ইত্যাদি কিছু বলে অভিবাদন করা যায়।
৭। কোন মজলিসে মুসলিম অমুসলিম উভয় প্রকারের লােক থাকলে মুসলমানদের নিয়তে সালাম দিবে কিংবা নিম্নরূপ বাক্যেও সালাম দেয়া যায়।
অর্থ: যারা হেদায়েত তথা ইসলামের অনুসরণ করেছে, তাদের প্রতি সালাম।
যেসব ব্যক্তিদের সালাম দেওয়া নিষিদ্ধ
নিমােক্ত ব্যক্তিদেরকে সালাম দেয়া নিষিদ্ধ (মাকরূহ) এরূপ ব্যক্তিদেরকে সালাম প্রদানকারী সালামের উত্তর পাওয়ার হকদার হয় না।
ক) কোন পাপ কাজে রত ব্যক্তিকে। যেমন: জুয়া বা দাবা খেলায় রত ব্যক্তিকে ।
খ) পেশাব-পায়খানায় রত লােককে।
গ) পানাহারে রত ব্যক্তিকে (অর্থাৎ, তার মুখে খাদ্য/পানীয় থাকা অবস্থায়)।
ঘ) ইবাদত যেমন: নামায, তিলাওয়াত, আযান ও ইকামত প্রদানে এবং দ্বীনী কিতাব আলােচনায় রত ব্যক্তি বা যিকির ওজীফায় রতদেরকে ।
ঙ) কোন মজলিসে বিশেষ কথা-বার্তা বলার মুহূর্তে কথা-বার্তায় ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা থাকলেও সালাম করা উচিত নয়।
চ) গায়র মাহরাম নারী-পুরুষের মধ্যে যেসব ক্ষেত্রে ফেতনার আশংকা থাকে। সেখানে সালাম আদান-প্রদান নিষিদ্ধ।
ছ) কোনাে খালি ঘরে প্রবেশ করলে সেখানেও সালাম দিবে। তবে নিম্নোক্ত বাক্যে।
জ) ছাত্রদেরকে কুরআন বা দ্বীনী কিতাব তা’লীম দানে রত উস্তাদকে কেউ | সালাম করলে তিনি জওয়াব দেয়া না দেয়া উভয়টার অবকাশ রাখেন।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।