ইসলাম ও জীবন

সূরা আল বাকারার শেষ দুই আয়াতের ফজিলত

4.7/5 - (3 votes)

সূরা আল বাকারার শেষ দুই আয়াত বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। অসংখ্য হাদিস রয়েছে এই দুই আয়াতকে নিয়ে। আমরা আজকে সূরা আল বাকারার শেষ দুই আয়াতের কি কি ফজিলত রয়েছে তা জানবো।

সূরা আল বাকারা (سورة البقرة) পবিত্র কুরআন শরীফের দ্বিতীয় সূরা। সূরাটির আয়াত সংখ্যা ২৮৬। সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ সূরাটির শেষ দুটি (২৮৫ -২৮৬ ) আয়াতের রয়েছে বিশেষ ফজিলত ও তাৎপর্য। অনেক সহীহ হাদিস রয়েছে এর শেষ দুটি আয়াত নিয়ে। সূরা আল বাকারা শেষ দুটি আয়াতে রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া।

সূরা আল বাকারার শেষ দুই আয়াতের ফজিলত

নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে এ দুটি আয়াত পাঠ করবে তার জন্য এটাই যথেষ্ট।’ এর ব্যাখ্যায় কেউ বলেন, এর অর্থ রাতের নামাজ, কেউ বলেন শয়তান থেকে মুক্তি, কেউ বলেন বিপদ থেকে মুক্তি, কেউ বলেন, মানুষ ও জ্বীনের অনিষ্ট থেকে মুক্তি।

নবীজী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা সাত আসমান ও জমিন সৃষ্টি করার এক হাজার বছর আগে কোরআন লিখেছেন এবং তার মাঝে দুটি আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। যে ঘরে এ দুটি আয়াত পাঠ করা হয় না সে ঘরে শয়তান অবস্থান করে।

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, একদা জিবরাঈল (আ.) নবীজী (সা.) এর সামনে বসা ছিলেন। তিনি বিপরীত দিকে থেকে একটি আওয়াজ শুনলেন। এরপর মাথা ওপর দিকে তুললেন, এরপর বলেন, এই মাত্র আকাশের একটি দরজা খোলা হয়েছে, এর আগে কখনও এ দরজাটি খোলা হয়নি, এ দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা অবতরণ করছেন। এর আগে তিনি কখনও পৃথিবীতে অবতরণ করেননি এ ফেরেশতা নবীজীকে সালাম দিলেন এবং বললেন সুসংবাদ গ্রহণ করুন আপাদমস্তক দুটি নূরের, যা আপনার আগে কোন নবীকে দেয়া হয়নি। সূরা ফাতিহা ও সূরা বাকারা শেষ দুটি আয়াত। যে কেউ তা পড়বে তাকে প্রতিদান দেওয়া হবে।

রাতের বেলা ঘুমানোর পূর্বে সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত তেলাওয়াত করলে তাহাজ্জুদ নামাযের সমান সওয়াব পাওয়ার আশা করা যেতে পারে।

সূরা আল বাকারার শেষ দুই আয়াত কখন অবতীর্ণ হয়?

সহীহ মুসলিমে উল্লেখ আছে এ দুটি আয়াত  রাসূল (সা.)-কে মিরাজের রাতে সপ্তাকাশে সিদরাতুল মুনতাহায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সঙ্গে দান করা হয়েছে।

অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে, সেখানে স্বর্ণের খুদিত বিছানা রয়েছে। রাসূল (সা.)-কে তিনটি জিনিস দেয়া হলো।  আর তা হলো পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত এবং  তার উম্মতের মধ্যে শিরক না করা গুনাহকারী উম্মতকেও তিনি ক্ষমা করবেন।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, এই আয়াত দুটি নাজিল হওয়ার পর থেকে নবীজী (সা.) এর সাহাবীগণের ওপর কঠিন প্রভাব পড়া শুরু করে। অতঃপর সাহাবীরা নবীজী (সা.) এর কাছে এসে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল সা.) আমরাতো যতটা সম্ভব আল্লাহর ইবাদাতে মশগুল থাকি। নামাজ, রোজা, জিহাদ ও সাদকা করে থাকি। এরপরেও আপনার উপর এ আয়াত নাজিল হলো? তখন নবীজী (সা.) উত্তরে বললেনঃ তোমরা কী সে রকম বলতে চাও? যেরকম তোমাদের পূর্বে আহলে কিতাবগণ যেভাবে বলেছে। তারা বলেছে আমরা শুনলাম ও অস্বীকার করলাম। বরং তোমরা বল, আমরা শুনেছি ও অনুসরণ করেছি। আমরা তোমার কাছে ক্ষমা চাই। হে আমাদের পালনকর্তা! তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তারা বলল, শুনেছি এবং কবুল করেছি। হে আল্লাহ! আমরা তোমার ক্ষমা চাই। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। যখন এ আয়াত পাঠ করা হলো তখন সাহাবীদের মুখমন্ডল লজ্জাবনত হয়ে গেলো। এরপর সাহাবীরা যখন এর উপর আমল করা শুরু করলো তখন আল্লাহ তায়ালা অবতীর্ণ করলেন, ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না। সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার ওপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। আল্লাহ বলেন, হ্যাঁ! হে আমাদের প্রভু! এবং আমাদের দ্বারা ওই বোঝাবহন করতে দিও না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হ্যাঁ। আমাদের পাপ মোচন করো! আমাদেরকে ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি দয়া করো। তুমিই আমাদের প্রভু। কাজেই কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য কর। আল্লাহ বলেন, হ্যাঁ।

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button